টইটম্বুর গ্যালারি দেখল স্মিথ কী ধাতে গড়া

দৃঢ়তা দেখিয়েই দিন শেষ করেছেন স্মিথ। ছবি: এএফপি
দৃঢ়তা দেখিয়েই দিন শেষ করেছেন স্মিথ। ছবি: এএফপি
>বক্সিং ডে টেস্টে আজ প্রথম দিনে কানায় কানায় পূর্ণ ছিল এমসিজির গ্যালারি। প্রথম দিন শেষে বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া

৩২ বছর অপেক্ষার পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বক্সিং ডে টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছে নিউজিল্যান্ড। ক্রিকেটপ্রেমীদের আগ্রহটা তাই বোধ হয় একটু বেশিই ছিল। আজ মেলবোর্ন টেস্টের প্রথম দিনে দর্শকসংখ্যা ছিল ৮০,৪৭৩। ক্রিকেটের পেশাদার যুগ শুরুর পর অ্যাশেজের বাইরে এটাই সর্বোচ্চসংখ্যক দর্শকের নজির মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি)। প্রথম দিনের খেলা শেষে অস্ট্রেলিয়ার দুই ব্যাটসম্যান স্টিভ স্মিথ ও ট্রাভিস হেডের সন্তুষ্ট মনেই মাঠ ছাড়ার কথা। আর তাই স্বাভাবিকভাবেই হতাশ হওয়ার কথা নিউজিল্যান্ডের পেসারদের। খাটো লেংথে বাউন্সারের পর বাউন্সার মেরেও যে স্মিথকে আউট করা যায়নি!

৪ উইকেটে ২৫৭ রান নিয়ে প্রথম দিনের খেলা শেষ করেছে অস্ট্রেলিয়া। ১৯২ বল খেলে ৭৭ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছেড়েছেন স্মিথ। অন্য প্রান্তে অপরাজিত হেডের সংগ্রহ ৫৬ বলে ২৫। আজ প্রায় সারা দিন ধরেই স্মিথকে শর্ট বলে কাবু করার চেষ্টা করেছেন কিউই পেসার নিল ওয়াগনার। ব্যাটসম্যানের গলা ও শরীর বরাবর বল করতে সিদ্ধহস্ত এ পেসারকে পার্থ টেস্টে উইকেট দিয়েছিলেন স্মিথ। কিন্তু আজকের লড়াইয়ে অন্তত স্মিথকে কাবু করতে পারেননি ওয়াগনার। এমসিজির উইকেটে ঘাস থেকে অস্ট্রেলিয়াকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। প্রথম দিনের খেলা শেষে অন্তত এটুকু বলাই যায় পরিকল্পনাটা তারা পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারেনি, আর তা স্মিথের দৃঢ়তার জন্যই।

২০১৫ সাল থেকে বক্সিং ডে টেস্টে স্মিথের ব্যাট এমনিতেই চওড়া থাকে। আজকের অপরাজিত ইনিংসটি সহ এর মধ্যে মোট ছয় ইনিংসে তাঁর স্কোর, ১৩৪*, ৭০*, ১৬৫*, ৭৬, ১০২*, ৭৭*। ছয় ইনিংসে এ পর্যন্ত ৬২৪ রান, গড় ৬২৪.০০! বলার অপেক্ষা রাখে না সেঞ্চুরির সুবাস নিয়ে মাঠ ছাড়া স্মিথ কাল তিন অঙ্কের দেখা পেতেই ব্যাট করতে নামবেন। কিউই বোলারদের তিনি আজ কীভাবে সামলেছেন সেই প্রমাণ রয়েছে পরিসংখ্যানেও। এটি স্মিথের ক্যারিয়ারের ২৩তম টেস্ট সিরিজ। যে ইনিংসটি খেলে তিনি আজ মাঠ ছেড়েছেন সেখানে স্ট্রাইক রেট ৪০.১০—যা তাঁর ক্যারিয়ারে সবচেয়ে মন্থর ইনিংসগুলোর একটি। এই ইনিংস দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১০ রান সংগ্রাহকের তালিকায়ও ঢুকে পড়েছেন এ ব্যাটসম্যান।

দুই ওপেনার দলীয় ৬১ রানের মধ্যে ফিরে যাওয়ার পর মধ্যাহ্নভোজ বিরতির কয়েক ওভার আগে ব্যাট করতে নামেন স্মিথ। ব্যাট করেছেন প্রায় পাঁচ ওভারের মতো। এর মধ্যে তৃতীয় উইকেটে মারনাস লাবুশেনের সঙ্গে ১৭১ বলে গড়েছেন ৮৩ রানের জুটি। দুজনের জুটিটা যখন বেশ জমে উঠেছে ঠিক তখনই কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের বল ছাড়তে গিয়ে ‘প্লেড অন’ হন লাবুশেন (১৪৯ বলে ৬৩)। চতুর্থ উইকেটে ম্যাথু ওয়েডকে নিয়েও গড়েছেন ৭২ রানের জুটি। এরপর হেডের সঙ্গে অপরাজিত ৪১ রানের জুটি গড়ে মাঠ ছেড়েছেন স্মিথ।

কিউইরা আজ যে পাঁচ বোলার ব্যবহার করেছে এর মধ্যে পেসার ছিল চারজন। ২টি উইকেট নিয়েছেন গ্র্যান্ডহোম। ১টি করে উইকেট ওয়াগনার ও ট্রেন্ট বোল্টের।