সেমিফাইনালে চলে এল পুলিশ

সিডনি রিভেরা দারুণ খেলেছেন আজ। ছবি: প্রথম আলো
সিডনি রিভেরা দারুণ খেলেছেন আজ। ছবি: প্রথম আলো
>সাইফ স্পোর্টিংকে ৩-১ গোলে হারিয়ে ফেডারেশন কাপের সেমিফাইনালে পুলিশ ফুটবল ক্লাব। জোড়া গোল করেছেন পুলিশের ফরোয়ার্ড সিডনি রিভেরা।

অভিষেক ম্যাচে জ্বলে উঠতে পারেননি। তবে দ্বিতীয় ম্যাচেই জোড়া গোল করে আলোটা টেনে নিয়েছিলেন সিডনি রিভেরা। পুয়ের্তো রিকোর এই স্ট্রাইকারের পা থেকে আজ কোয়ার্টার ফাইনালেও এসেছে জোড়া গোল। তাঁর ওপর ভর করেই সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবকে ৩-১ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে পুলিশ ক্লাব।

পুলিশের সার্বিয়ান কোচ নিকোলা ভিটরেবিচের ৪-১-৪-১ ফরমেশনে ‘সেকেন্ড স্ট্রাইকার’ ২৬ বছর বয়সী সিডনি। মূল স্ট্রাইকারের পেছনে খেলেই ৪ গোল করে এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আজ তাঁর প্রথম গোলটি তো চোখে লেগে থাকার মতো। দ্বিতীয় গোলটিতে আছে ধীর স্থির বুদ্ধিমত্তার ছাপ। কম যাননি দেশি খেলোয়াড় বাবলুও। দুর্দান্ত ভলিতে সাইফের গোলমুখের তালা খুলেছেন তরুণ এই ফরোয়ার্ডই। তাদের তিন গোলের বিপরীতে সাইফের নামের পাশে মাত্র ১ গোল। স্কোর লাইন দেখে মনে হতে পারে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পুলিশের আক্রমণ সয়েছে করপোরেট ক্লাবটি। ভুল, গোল হাতছাড়া করার মহড়া না দিলে ম্যাচের ফলাফল অন্যরকমও হতে পারত।

ম্যাচটিকে দুই ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। ৫১ মিনিট পর্যন্ত পুলিশের দাপট। এই সময়ের মধ্যেই ৩-০ গোলে এগিয়ে যায় তারা। ৩ গোল হজম করে ঘুম ভাঙে জামাল ভূঁইয়াদের। ৫৬ মিনিটে কিরগিজ মিডফিল্ডার মুরোলিমজন আখমেদোভের দুর্দান্ত ফ্রি কিকে ৩-১। এর পর শুধু গোল মিসের গল্প। পুলিশের প্রতিরক্ষায় একের পর এক আক্রমণ আছড়ে পড়ছে আর গোল হাতছাড়া করে ‘ইস.., উহ..’ কলম্বিয়ান মিডফিল্ডার দানিয়ের কর্দোভা তো ৬ গজ বক্সের মধ্যে থেকেও বল বার উঁচিয়ে মেরেছেন। জাহাঙ্গীর আরগাশেভের একটি ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। গোলমুখ থেকে বল হেড দিয়ে বাইরে পাঠান রহিমউদ্দিন।

সাইফের একাদশে জাতীয় দলের পাঁচ ফুটবলার। পোস্টের নিচে পাপ্পু হোসেন, সেন্টারব্যাক রিয়াদুল হাসান, দুই ফুল ব্যাক রহমত মিয়া ও ইয়াসিন আরাফাত আর মাঝমাঠে জামাল। ৪-২-৩-১ ফরমেশনে এদের সঙ্গে উগান্ডা জাতীয় দলের সেন্টার ব্যাক এমেরি বায়িসেঙ্গে ও তাজিকিস্তান জাতীয় দলের মিডফিল্ডার জাহাঙ্গীর আরগাশেভ। নামে ভারে রক্ষণভাগ যেমন শক্তিশালী, আক্রমণভাগেও আছে বৈচিত্র্য। কিন্তু পুলিশের ‘হাই প্রেসিং’ ও আক্রমণ নির্ভর কৌশলী ফুটবলের সামনে নতজানু মোহাম্মাদ নিজামের শিষ্যরা।

ডাবল পিভট হোল্ডিং মিডফিল্ডার হিসেবে জামাল ও দিদিয়ের খেললেও মিডল করিডর থেকেই দুইটি গোল হজম করেছে সাইফ। ৩১ মিনিটে বক্সের ওপর থেকে বুকে বল নামিয়ে সাইড ভলিতে জড়িয়ে দেন বাবলু। বিরতিতে যাওয়ার আগে সেই মিডল করিডর থেকেই পেনাল্টি আর্কের ওপর থেকে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দেখে শুনে সিডনির জোরালো প্লেসিং, ২-০। বিরতির পর সর্বস্ব নিয়ে আক্রমণে ওঠে সাইফ। সেই সুযোগে ৩-০ করছে পুলিশ। ৫১ মিনিটে লাসকভ অ্যান্টোনিওর পাসে দেখে শুনে সিডনির আলতো প্লেসিং, ৩-০।

তিন দেশের সাত জাতীয় দলের খেলোয়াড় নিয়ে তারকা সমৃদ্ধ এক দল সাইফ। কিন্তু মৌসুমের প্রথম টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায়। আর সেমিফাইনালে নাম লেখানো পুলিশের জন্য চমকই বটে। প্রায় ১৭ বছর পর ঘরোয়া ফুটবলের সর্বোচ্চ পর্যায়ে এসেছে সার্ভিসেস দলটি।