টেস্টের আগে বৃষ্টির আশা অস্ট্রেলিয়ায়

হেলিকপ্টার ব্যবহার করেও দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না অস্ট্রেলিয়া। ছবি: এএফপি
হেলিকপ্টার ব্যবহার করেও দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না অস্ট্রেলিয়া। ছবি: এএফপি

টেস্টে অনেক সময়ই পিছিয়ে থাকা দল বৃষ্টির অপেক্ষায় থাকে। তারা চায় কোনোভাবে সময় পার করে দিয়ে হার এড়াতে। কিন্তু এই প্রথম কোনো টেস্ট শুরু হওয়ার আগে দুই দলই আশা করছে বৃষ্টি। নীরবে প্রার্থনা করছে টানা বৃষ্টি নেমে ভিজিয়ে দিক মাঠ, গ্যালারি, পুরো শহর, অঞ্চল। কারণ আগামীকালের সিডনি টেস্ট হয়তো আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের জন্য। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার জনজীবনের তুলনায় সেটা কিছুই না। 

অস্ট্রেলিয়া পুড়ছে দাবানলে। ভয়াবহ দাবানল ছড়িয়ে পড়ছে প্রতিদিন। এক–একটি দিন যাচ্ছে, আর নতুন করে হাজার হাজার মানুষ ঘরছাড়া হচ্ছে। দাবানলে হতাহত হওয়ার ঘটনা দুই অঙ্ক ছাড়িয়ে গেছে বেশ আগেই। বনাঞ্চল ও বন্য প্রাণীর ক্ষয়ক্ষতির হিসেবে এখন আর গণনায় বর্ণনা করা যাচ্ছে না। দাবানল নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীকেও ব্যবহার করছে ভিক্টোরিয়া ও নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্য সরকার। এমন অবস্থায় আগামীকাল সিডনিতে শুরু হওয়ার কথা সিরিজের তৃতীয় টেস্ট।

দাবানলের কারণে সিডনির বাতাসে নিশ্বাস নেওয়া কঠিন হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে ক্রিকেটারদের মাঠে নামাটা স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছেন সবাই। এ নিয়ে অনেক আলাপও চলছে। অস্ট্রেলিয়ান কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার তাই ভালো ক্রিকেট খেলে সবার মুখে হাসি ফোটাতে চান। তবে এটাও মেনে নিয়েছেন, এখন সবাইকে স্বস্তি দিতে পারে একটি জিনিস আর সেটা হলো সবকিছু শীতল করে দেওয়ার মতো বৃষ্টি, ‘আমি হয়তো জীবনে এই প্রথমবারের মতো এমন কিছু বলছি। আমি আশা করি টেস্টের সময় সিডনিতে বৃষ্টি হবে। আমি আশা করি বৃষ্টিটা রাতে হোক, যাতে দিনে আমরা খেলতে পারে কিন্তু বাকি অস্ট্রেলিয়ার মতো সিডনিতেও বৃষ্টি খুব প্রয়োজন। আমরা এই দিকে (দাবানল) চোখ রাখছি, আমরা যতটা পারি সাহায্যের চেষ্টা করব। আমাদের সব ভালোবাসা ও প্রার্থনা দাবানলে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য। আমরা অনেক ভাগ্যবান। অনেক মানুষ কষ্ট করছে...খুব কঠিন সময়। আমরা যা করতে পারি ভালো খেলে এ মুখগুলোতে হাসি ফোটাতে।’

প্রতিপক্ষ দলও বলছে এমন সময়ে ক্রিকেট গুরুত্ব হারায়। নিউজিল্যান্ডের স্পিনার উইল সমারভিল জানিয়েছেন, ‘এটা ভয়ংকর, বিস্ময়কর যে এত দিন ধরে এটা চলছে। আমি জানি না এর চেয়ে বেশি আর কী বলতে পারি। অনেকেই বলছে ধোয়ার কারণে খেলায় সমস্যা হবে কিন্তু এতে কী আসে যায়! এই আগুন থামানোর জন্য মানুষ যা করছে তার তুলনায় এটা কিছুই না।’

সিডনির আকাশ এরই মাঝে নাকি ধোয়ায় অন্ধকার হয়ে এসেছে। আগামীকালের ম্যাচে পরিস্থিতি যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, সে ব্যবস্থার কথা জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়া দলের অধিনায়ক টিম পেইন, ‘যদি ধোয়া দেখা যায়, আমরা মাঠ থেকে উঠে যাব।’ ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াও জানিয়েছে খেলোয়াড়দের নিয়ে কোনো ঝুঁকি নেবে না। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী কেভিন রবার্টস বলেছেন, ‘আমরা খেলোয়াড়দের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলব না। ম্যাচ অফিশিয়াল, বা সমর্থকদেরও না। আমাদের কর্মী বা মানুষদের নিয়েও ঝুঁকি নেব না।’