টি-টোয়েন্টি বিশেষজ্ঞ সাব্বিরের হলো কী

ধারাবাহিক ব্যর্থ সাব্বির। ছবি: শামসুল হক
ধারাবাহিক ব্যর্থ সাব্বির। ছবি: শামসুল হক

সেপ্টেম্বরে ত্রিদেশীয় সিরিজের কথা, দল হেরেছে আফগানিস্তানের বিপক্ষে। অধিনায়ক হিসেবে সাকিব আল হাসানকে উত্তর দিতে হচ্ছে তির্যক সব প্রশ্নের। এর মধ্যে একটি প্রশ্ন হলো, আপনার দলের একজন ব্যাটসম্যান করেছেন ২৭ বলে ২৪ রান—তাঁকে কি ‘টি-টোয়েন্টি বিশেষজ্ঞ’ বলা যায়? হারের বিষণ্নতা ভুলে সাকিব না হেসে পারলেন না! প্রশ্নকর্তা জানতে চেয়েছিলেন আসলে সাব্বির রহমানের পারফরম্যান্স নিয়ে।

এ প্রশ্নের কী উত্তর দেবেন সাকিব? উত্তরটা শুধু সাব্বিরের কাছেই লুকিয়ে। ছিলেন বিশ্বকাপ দলে, ছিলেন জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কা সফরে। এমনকি গত সেপ্টেম্বরে দেশের মাঠে ত্রিদেশীয় সিরিজেও। একটি ম্যাচেও সাব্বিরের ব্যাট কথা বলেনি ঠিকঠাক। জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে ৬০ রানই তাঁর বলার মতো একটা ইনিংস। ইনিংসটা যদিও দলের জয়ে কোনো ভূমিকা রাখতে পারেননি। সাব্বির দল থেকে বাদ পড়েছেন সেপ্টেম্বরের ত্রিদেশীয় সিরিজের মাঝপথে। সুযোগ মেলেনি ভারত সফরে। এই বিপিএল তাঁর কাছ ছিল নিজেকে আবার ফিরে পাওয়ার মঞ্চে। সেই মঞ্চেও তিনি ব্যর্থ হচ্ছেন ধারাবাহিকভাবে।

সাব্বির প্রায়ই বলেন ‘টি-টোয়েন্টি আমার খেলা!’ এই সংস্করণে তাঁর সেঞ্চুরিও আছে। গত বিপিএলে ৫১ বলে ৮৫ রানের একটা ইনিংস খেলেই শেষ মুহূর্তে জায়গা করে নিলেন নিউজিল্যান্ড সফরে। এবারের বিপিএলে বলার মতো সেই ‘একটি ইনিংস’ও কি খেলতে পেরেছেন? সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ছে সাব্বিরের ব্যাটিংয়ের ধরন। তাঁর আত্মবিশ্বাস এতটাই তলানিতে, নিজের স্বাভাবিক খেলাটাও খেলতে পারছেন না। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক হওয়ার সেই বৈশিষ্ট্যই যেন হারিয়ে ফেলেছেন। চরিত্রের বাইরে গিয়ে ধীরলয়ে এগোনোর চেষ্টা করছেন। তাতেও কাজ হচ্ছে না।

সাব্বির বঙ্গবন্ধু বিপিএলে বিসিবি পরিচালিত একমাত্র দল কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের হয়ে যে ৯টি ম্যাচ খেলেছেন, দুটিতে স্ট্রাইকরেট কোনোভাবে ১০০-এর ওপরে নিতে পেরেছেন। কাল সিলেটে থান্ডারের বিপক্ষে করেছেন ২৫ বলে ১৭ রান (স্ট্রাইকরেট ৬৮.০০)। ৯ ম্যাচে ১৫.৭৭ গড়ে করেছেন ১৪২ রান। সাব্বিরের স্ট্রাইকরেট ১০০। অথচ পুরো টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারেই যাঁর স্ট্রাইকরেট ১২০.৭২। ১৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে রংপুর রেঞ্জার্সের বিপক্ষে ৪০ বলে ৪৯ রানই টুর্নামেন্টে সাব্বিরের পারফরম্যান্সের একমাত্র হাইলাইট।

গত চার বছরে যিনি নিজেকে পরিচিত করেছেন টি-টোয়েন্টি ‘বিশেষজ্ঞ’ হিসেবে, সেই তিনি দেশের সবচেয়ে বড় টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে নিজেকে প্রমাণ করতে পারছেন না। একজন ব্যাটসম্যান সব সময়ই রান পাবেন না। কিন্তু সাব্বিরের দুঃসময়টা যে লম্বাই হচ্ছে। কুমিল্লা অন্তত আরও তিন ম্যাচ হাতে পাবে। এই তিনটি ম্যাচের কটিতে সাব্বির সুযোগ পান, সেটি এক প্রশ্ন। যদি তিনটি ম্যাচই খেলতে পারেন, নিজেকে ফিরে পাওয়ার কাজটা তাঁকে করতে হবে এ সময়েই।