সিলেটের আরেকটি হার, সঙ্গে মোসাদ্দেকের দুঃসংবাদ

সিলেটের আরও একবার মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়া, আরও একবার পরাজয়। ছবি: প্রথম আলো
সিলেটের আরও একবার মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়া, আরও একবার পরাজয়। ছবি: প্রথম আলো

একটা ছন্নছাড়া দলের আদর্শ উদাহরণ হতে পারে সিলেট থান্ডার। সিলেটকে পেলেই যেন প্রতিপক্ষ দলের চোখ চকচক করে উঠছে! সব দল ধরে নিয়েছে, অন্তত সিলেটকে বলে-কয়ে হারানো যাবে! পরাজয়ের তালিকায় সিলেটের নতুন সংযোজন আজ রাজশাহীর বিপক্ষে ৬ উইকেটের হার।

সিলেট পর্বের শেষ ম্যাচে আজ আগে ব্যাট করতে নেমে অবশ্য তেমন কিছুর ইঙ্গিত দিতে পারেনি পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা সিলেট। আজও ভালো সূচনা এনে দিতে ব্যর্থ হয় সিলেটের টপ অর্ডার। এরপর মোহাম্মদ মিঠুন যতক্ষণ ক্রিজে ছিলেন,আশার বাতিও জ্বলছিল। কিন্তু ৪৭ রানে মিঠুনের রান আউটের সঙ্গে বড় স্কোরের আশাভঙ্গ হয় সিলেটের। শেষ পর্যন্ত ১৪৩ রানে থামে সিলেটের ইনিংস।

আব্দুল মজিদ ও জনসন চার্লস আউট হয়েছিলেন ব্যাটিং পাওয়ারপ্লেতেই। আবু জায়েদের বলে সরাসরি বোল্ড হন মজিদ। বিপিএলের চট্টগ্রামের পর্বে দারুণ ব্যাটিং করা চার্লসের কাছে কিছু রানের দাবি ছিল সিলেটের। কিন্তু তিনি আজও হলেন ব্যর্থ। মোহাম্মদ ইরফানের বলে আউট হন ৮ রানে।

হাল ধরার কাজটা করেন মোহাম্মদ মিঠুন। আন্দ্রে ফ্লেচারকে নিয়ে ইনিংস গড়ায় চেষ্টায় সফলও হন। ৩০ রানের জুটিটি তখন বড় স্কোরের ভিতের মতো মনে হচ্ছিল। কিন্তু অসময়ে রান আউট হন ফ্লেচার। ইনিংসের ১৩তম ওভারে ৩৩ বল খেলে মাত্র ২৫ রান করেন এই ক্যারিবিয়ান।

আর দ্রুত রান তোলার কাজটা ভালোই করছিলেন মিঠুন। আরেক ক্যারিবিয়ান শেরফন রাদারফোর্ডকে নিয়ে দ্রুত ৪৭ রান যোগ করেন মিঠুন। ম্যাচের মোড় ঘুরে যায় এই জুটি ভাঙায়। ইনিংসের ১৬তম ওভারে রান নিয়ে গিয়ে ভুল বোঝাবুঝিতে আউট হন মিঠুন। রাদারফোর্ডের ডাক না শুনেই দৌড় গিয়ে বিপদে পড়ে মিঠুন। সিলেটের বড় স্কোরের সম্ভাবনা সেখানেই ক্ষীণ হয়ে আসে। সিলেটের সর্বশেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যান রাদারফোর্ড ১১ বলে ২৫ রান যোগ করে আউট হলে বেশি দূর এগোয়নি সিলেটের ইনিংস। শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেটে ১৪৩ রানে থামে স্বাগতিকেরা।

ছোট লক্ষ্যের ম্যাচ হলেও দ্রুত রান নেওয়ার চেষ্টা করে রাজশাহীর দুই ওপেনার লিটন দাস ও আফিফ হোসেন। বরাবরের মতই বিধ্বংসী ব্যাটিং করে ফিফটি রানের জুটি গড়ে এই দুই তরুণ। সিলেটের দুই পেসার নাভিন উল হক ও ইবাদত হোসেনকে থিতু হতেই দেননি। ৫৯ রান যোগ করে রাদারফোর্ডের বলে বিচ্ছিন্ন হন দুজন। ২০ বলে ৩৬ রান যোগ করে আউট হন লিটন। তবে টিকে ছিলেন আফিফ। পাওয়ার প্লের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের পর দেখেশুনে খেলা শুরু করেন। ম্যাচ শেষ করে আসার চেষ্টা করেন শোয়েব মালিককে নিয়ে। শোয়েব-আফিফ না পারলেও বোপারা-নেওয়াজ শেষ করে আসেন ম্যাচ—নিশ্চিত করেন রাজশাহীর ৬ উইকেটের জয়।

মোসাদ্দেকের দুংসাবদ
নভেম্বরে চোটে পড়ে ভারত সফর অসমাপ্ত রেখেই চলে আসতে হয়েছিল মোসাদ্দেক হোসেনকে। বিপিএলে ফিরলেন সিলেটের অধিনায়ক হয়ে। দল খুব একটা ভালো করতে পারেনি। তিনি নিজেও পুরো টুর্নামেন্ট খেলতে পারছেন না। ঘাড়ের নিচে আঘাত পাওয়ায় শুধু বিপিএল নয়, ছিটকে গেছেন পুরো এক মাসের জন্য।

মোসাদ্দেক অবশ্য দলের সঙ্গে সিলেট গিয়েছিলেন। গত কয়েক ম্যাচে মোসাদ্দেকের বদলে সিলেট থান্ডারকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ব্যাটসম্যান আন্দ্রে ফ্লেচার। আজ ঢাকায় ফেরার পর ঘাড়ে স্ক্যান করানো হয় মোসাদ্দেকের। বিসিবি চিকিৎসক দেবাশিস চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে এক মাস বিশ্রামে থাকবেন এই অলরাউন্ডার। এবারের বিপিএলও খুব ভালো যায়নি মোসাদ্দেকের। ৮ ম্যাচে ১টি ফিফটিসহ করেছেন ১৯০ রান। অফ স্পিনে নিয়েছেন ৩টি উইকেট।