ইতিহাস গড়তে না পারার জন্য এক ভুলই যথেষ্ট

একটি ভুলই রহমতগঞ্জ গোলরক্ষক রাসেল মাহমুদকে পোড়াবে বহুদিন। ছবি: প্রথম আলো
একটি ভুলই রহমতগঞ্জ গোলরক্ষক রাসেল মাহমুদকে পোড়াবে বহুদিন। ছবি: প্রথম আলো

গত মৌসুমে তিনটি ট্রফির দুইটি জিতেছিল বসুন্ধরা কিংস। যে ট্রফিটি জিততে পারেনি, সেটি ছিল ফেডারেশন কাপের শিরোপা। এবার সেই ট্রফি জিতে মৌসুম শুরু করল প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়নরা। এর সঙ্গে নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে ২০২১ সালে এএফসি কাপে অংশগ্রহণ। যে ম্যাচ বসুন্ধরা হতাশা ভোলার, সে ম্যাচটাই রহমতগঞ্জের জন্য হয়ে থাকবে আক্ষেপের অন্য নাম হয়ে। বসুন্ধরার কাছে ২-১ গোলে হেরে প্রথম কোনো শিরোপা জেতার স্বপ্নটা শেষ হলো তাদের।

প্রথমবারের মতো ফেডারেশন কাপের ফাইনালে উঠেছিল রহমতগঞ্জ। জিতলেই ইতিহাস গড়ত পুরান ঢাকার ক্লাবটি। কোচ হিসেবে ঘরোয়া ফুটবলে ব্যক্তিগত প্রথম শিরোপা জিততে পারতেন গোলাম জিলানীও। কিন্তু একটি ভুলেই ইতিহাসের দাঁড় প্রান্ত থেকে ফিরতে হলো তাদের। ভুলটি করেছেন গোলরক্ষক রাসেল মাহমুদ।

১-১ গোলে সমতায় থাকা ম্যাচে রাসেলের শিশুতোষ এক ভুলেই জয় সূচক গোলটি করেন দানিয়েল কলিনদ্রেস। সতীর্থ সেন্টারব্যাক কামারার কাছ থেকে বল পেয়েছিলেন রাসেল। বল ক্লিয়ার না করে পায়ে রেখে পাসের পথ খুঁজতে চাইলেন। কিন্তু দৌড়ে এসে চিলের মতো ছোঁ মেরে বল কেড়ে নিয়ে জালে জড়িয়ে দিলেন কোস্টারিকার জার্সিতে বিশ্বকাপ খেলা কলিনদ্রেস। এই গোলেই হয়ে যায় ম্যাচের নিষ্পত্তি।

ম্যাচ শেষে কাঁদতে দেখা যায় রহমতগঞ্জের গোলরক্ষককে। অথচ এই গোল হজমের আগ পর্যন্ত পুরো টুর্নামেন্টে জাতীয় দলের সাবেক এই গোলরক্ষক ছিলেন দুর্দান্ত। কোয়ার্টার ফাইনালে আবাহনী লিমিটেডের বিপক্ষে টাইব্রেকারে দুইটি সেভ করে দলকে সেমিফাইনালে এনেছিলেন রাসেলই। আজও ছিলেন ছন্দে। কিন্তু ৭৬ মিনিটের ওই ভুলই ইতিহাস গড়তে দেয়নি রহমতগঞ্জকে। এ নিয়ে ম্যাচ শেষে হতাশা প্রকাশ করলেন রহমতগঞ্জের গোলরক্ষক, ‘ক্যারিয়ারে এমন ভুল এই প্রথম করলাম। কলিনদ্রেস দৌড়ে আসছিল, সেটা আমি দেখিনি। কামারা যদি আমাকে ইশারা দিত তাহলেও হয়তো অমন ভুল করতাম না।’

অমন ভুল না করলে কি ফেডারেশন কাপের প্রথম শিরোপা জিততে পারত বসুন্ধরা। বিষয়টি নিয়ে তর্ক হতে পারে। তবে ওই ভুলের পেছনে কলিনদ্রেসের প্রেসিংয়ের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। সেন্টারব্যাক কামারার ঘাড়ের ওপর নিশ্বাস ফেলে লিটনের কাছে বল দিতে বাধ্য করেছিলেন কলিনদ্রেস। আবার দ্রুত গতিতে বল নিয়েছেন কেড়ে। তাই সুযোগ কাজে লাগানোর বিষয়টিই সামনে আনলেন বসুন্ধরা অধিনায়ক, ‘দ্বিতীয় গোলটি ভাগ্য গুনে এসেছে, আমি মানতে রাজি নয়। প্রতিপক্ষ ভুল করবে, সেখান থেকে গোল করব। এটাই স্বাভাবিক। আমরা সুযোগ পেয়েছি, সেখান থেকেই গোল করেছি।’

লিটনের ভুলকে হারের পেছনে বড় করে দেখতে রাজি নন রহমতগঞ্জের কোচ গোলাম জিলানী। বরং কৃতিত্ব দিচ্ছেন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হওয়া কলিনদ্রেসকে, ‘মানুষ মাত্রই ভুল করে। ও ম্যাচ শেষে অনেক কান্নাকাটি করেছে। আসলে কলিনদ্রেসই পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। সে বিশ্বমানের ফুটবলার। হেরে আমার কোনো আক্ষেপ নেই। ছেলেরা দুর্দান্ত খেলেছে।’