অপমানিত ভারত বোর্ড খুঁজছে বলির পাঁঠা

সামান্য বৃষ্টিতে ম্যাচ পণ্ড হয়েছে গুয়াহাটিতে। ছবি: এএফপি
সামান্য বৃষ্টিতে ম্যাচ পণ্ড হয়েছে গুয়াহাটিতে। ছবি: এএফপি

বৃষ্টির কারণে কত ম্যাচই তো পণ্ড হয়! কিন্তু সেসব সেভাবে খবরে আসে না; একটা বল মাঠে না গড়ালেও যেমনটা এসেছে ভারত-শ্রীলঙ্কা প্রথম টি-টোয়েন্টি। গত রোববার ম্যাচটি হওয়ার কথা ছিল গুয়াহাটির বর্ষাপাড়া ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। কিন্তু বৃষ্টির কারণে ম্যাচটি না হলেও সেটিকে ‘আলোচনায়’ নিয়ে এসেছেন সেখানকার মাঠকর্মীরা। আর সে আলোচনায় উপহাসের পাত্র বিসিসিআই!

বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ও ধনী ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই। অথচ সেই বোর্ডের অধিভুক্ত সংস্থা হয়েও মাঠ ঢেকে রাখার মতো ভালো একটা কভার নেই আসাম ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের। রোববার ম্যাচ পণ্ড ঘোষণার আগে ভেজা মাঠ শুকানোর জন্য যখন মাঠকর্মীরা মাঠে হেয়ার ড্রায়ার নিয়ে এল, নিয়ে এল ইস্ত্রি-ভ্যাকুয়াম ক্লিনার; আর সেই ছবি উঠে এল ফেসবুক-টুইটার-ইনস্টাগ্রামে—সবাই ধিক্কার দিতে লাগল বিসিসিআইকে। কী লজ্জা, কী লজ্জা! এই সময়ে এসে হেয়ার ড্রায়ার, ইস্ত্রি দিয়ে মাঠ শুকানোর চেষ্টা!

এই লজ্জা সহজেই এড়াতে পারত বিসিসিআই। আউটফিল্ড ঢাকার জন্য ভালোমানের একটা কভারের দাম ৫০ হাজার ভারতীয় রুপির মতো বলে ভারতীয় অনলাইন নিউজপোর্টালগুলোয় বলা হয়েছে। কিন্তু আসাম ক্রিকেটে অ্যাসোসিয়েশনের হাতে এই দামের একটা কভারও ছিল না। তাই বৃষ্টি থেকে মাঠ বাঁচাতে ব্যবহার করা হয়েছিল নিম্নমানের প্লাস্টিক কভার, যাতে ফুটো ছিল। আর সেই ফুটো দিয়ে ঢুকেই মাঠ ভিজিয়ে দেয় বৃষ্টি। অথচ খুব বেশি সময় ধরে বৃষ্টি হয়নি। পিচ ও আউট ফিল্ডের ভালো কভার থাকলে ম্যাচ বাতিল হওয়ার কোনো কারণই ছিল না।

সমালোচনার তির তাই বিসিসিআইর দিকেই। বৃষ্টি থেকে বাঁচার সব ব্যবস্থা অ্যাসোসিয়েশনের আছে কি না, সেটি কেন তারা আগে থেকে দেখবে না! সেই ম্যাচ পণ্ড হওয়ার পর থেকেই এমন সমালোচনার তিরে থেকে থেকে বিদ্ধ বিসিসিআই। এই ঘটনার পর বিসিসিআইয়ের অন্দরমহলেই একে অন্যকে দোষারোপ করা শুরু হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করে বিসিসিআইর এক কর্তাব্যক্তি ইন্ডিয়া টুডেকে বলেছেন, ‘লোধা কমিশনের পর সব অ্যাসোসিয়েশনই এখন নতুন করে শিখছে সব, ফলে এমন কিছু হবেই। এসব ব্যাপার নিয়ে আগে ভাবার সুযোগই ছিল না অ্যাসোসিয়েশনের। কোনো অ্যাসোসিয়েশনই ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবার সুযোগ পায়নি। এ যুগে ভবিষ্যতের কর্মপরিকল্পনা সাজানো পুরো বিশ্বেই কঠিন হয়ে উঠেছে। সব (রাজ্য) ক্রিকেট সংস্থার এসব ব্যাপার নিয়ে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়নি। আমার মনে হয়, এর অনেকখানি দোষ বিসিসিআইয়ের কিউরেটর এবং সিইওর, যাঁদের আগেভাগেই বোঝা উচিত ছিল কোথায় সমস্যা হতে পারে।’

তাহলে কি শাস্তির মুখোমুখি সিইও রাহুল জহুরি ও কিউরেটর আশিস ভৌমিক? সেটা সময়ই বলবে। তবে গুয়াহাটির ম্যাচ পণ্ডের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বোর্ডের হেনস্তা হওয়ার দায় তাঁরা এড়াতে পারেন না। বিসিসিআইয়ের সেই কর্মকর্তার বিশ্বাস অন্তত তা-ই।