ক্লাসিকোর সম্ভাবনা জাগিয়ে সুপার কাপের ফাইনালে রিয়াল

>ভ্যালেন্সিয়াকে ৩-১ গোলে হারিয়ে স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে উঠে গেছে রিয়াল মাদ্রিদ। গোল করেছেন টনি ক্রুস, ইসকো ও লুকা মদ্রিচ। ১২ জানুয়ারির ফাইনালে রিয়ালের প্রতিপক্ষ বার্সেলোনা-অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ম্যাচের জয়ী দল।

মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকো শেষ হয়েছিল গোলশূন্য ড্রতে। বিশ্বজুড়ে অসংখ্য ভক্তদের নিশ্চয়ই সেটি নিয়ে আক্ষেপ রয়ে গেছে। তবে সেই আক্ষেপ পূরণের আরেকটি সুযোগ শিগগিরই পেতে পারেন ভক্তরা। ভ্যালেন্সিয়াকে ৩-১ গোলে হারিয়ে স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে উঠে গেছে রিয়াল মাদ্রিদ। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে বার্সেলোনাও নিজেদের কাজটা ঠিকঠাকভাবে করতে পারলেই ফাইনালে দেখা যাবে আরেকটি এল ক্লাসিকো।বারই প্রথম চার দলের সুপার কাপ হচ্ছে, সেটিও আবার সৌদি আরবে। জেদ্দার কিং আবদুল্লাহ স্পোর্টস সিটি স্টেডিয়ামে ভ্যালেন্সিয়ার মুখোমুখি হয়েছিল জিনেদিন জিদানের মাদ্রিদ। দারুণ ফুটবল খেলে ২০১৭ সালের পর আবারও ফাইনালে উঠে গেছে মাদ্রিদ।

গোটা ম্যাচেই দারুণ খেলেছেন ইসকো। ছবি: এএফপি
গোটা ম্যাচেই দারুণ খেলেছেন ইসকো। ছবি: এএফপি

মাদ্রিদের তিন গোলের সবকটিই এসেছে মিডফিল্ডারদের পা থেকে। ইনজুরির কারণে ছিলেন না করিম বেনজেমা, অসুস্থতার কারণে মাঠে নামতে পারেননি গ্যারেথ বেলও। তবে তাই বলে গোলের দেখা পেতে মোটেও বেগ পেতে হয়নি লস ব্লাঙ্কোসদের। ১৫ মিনিটে প্রথম এগিয়ে যাওয়া টনি ক্রুসের দারুণ বুদ্ধিদীপ্ত গোলে। গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে বার্সেলোনার বিপক্ষে ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার আর্নল্ডের অ্যাসিস্টটা এখনো অনেকের চোখে লেগে থাকার কথা। বার্সেলোনার রক্ষণভাগকে অপ্রস্তুত দেখে দ্রুত কর্নার নিয়েছিলেন, সেই কর্নার থেকে গোল হজম করেই বিদায়ঘণ্টা বেজেছিল বার্সেলোনার। ক্রুসও অনেকটা একই কাজই করেছেন, তবে তিনি শুধু অ্যাসিস্টে সন্তুষ্ট থাকেননি, কর্নার থেকে সরাসরি গোলই করে ফেলেছেন! ভ্যালেন্সিয়া গোলরক্ষক ছিলেন গোলপোস্টের অনেকটা সামনে, পোস্ট ছিল সম্পূর্ণ অরক্ষিত। সেটিরই সুযোগ নিয়ে প্রায় শূন্য ডিগ্রি কোণ থেকে ক্রুসের শট, বিপদ টের পেয়ে ছুটে এলেও গোল বাঁচাতে পারেননি ভ্যালেন্সিয়া গোলরক্ষক।

প্রথমার্ধেই রিয়ালের দ্বিতীয়বার এগিয়ে যাওয়া ইসকোর সৌজন্যে। পুরো ম্যাচেই দারুণ খেলেছেন এই স্প্যানিশ মিডফিল্ডার। ৩৯ মিনিটে লুকা মদ্রিচের শট এজেকিয়েল গ্যারের গায়ে লেগে ফিরলে বল পড়ে ইসকোর পায়ে। ফিরতি শটে ১২ গজের ভেতর থেকে সহজেই গোল করেন তিনি। বিরতির আগেই তিন গোলে এগিয়ে যেতে পারত মাদ্রিদ, যদি না লুকা ইয়োভিচ রিবাউন্ড শটে গোল করতে ব্যর্থ হতেন।

মৌসুমে নিজের পঞ্চম গোলের দেখা পেয়েছেন লুকা মদ্রিচ। ছবি: এএফপি
মৌসুমে নিজের পঞ্চম গোলের দেখা পেয়েছেন লুকা মদ্রিচ। ছবি: এএফপি

তবে বিরতির পর তৃতীয় গোলের দেখা মাদ্রিদ ঠিকই পেয়েছে। ৬৫ মিনিটে ইয়োভিচের কাছ থেকে বল পেয়ে দারুণ ফিনিশিংয়ে মৌসুমে নিজের পঞ্চম গোলের দেখা পেয়েছেন এই ক্রোয়াট মিডফিল্ডার। তিন গোলে পিছিয়ে পড়া ভ্যালেন্সিয়ার আর ম্যাচে ফেরা হয়নি, ব্যবধানটাই কমাতে পেরেছে শুধু। যোগ করা সময়ে সার্জিও রামোসের হ্যান্ডবলের কারণে পাওয়া পেনাল্টি থেকে গোল করেছেন দানি পারেহো।

পুরো ম্যাচেই দাপুটে ও নিয়ন্ত্রিত ফুটবল খেলেছে জিদানের দল। ভ্যালেন্সিয়ার ৮ শটের বিপরীতে রিয়াল শট নিয়েছে ১৭টি। ৬টি অন টার্গেট শটের মধ্যে গোল এসেছেন ৩টিতেই। ৬২ ভাগ বলের দখল রেখেছে, পাস খেলেছে মোট ৭৯৮টি। ১২ জানুয়ারির ফাইনালে এল ক্লাসিকোই হোক বা মাদ্রিদ ডার্বি, এমন ফুটবল খেলতে থাকলে দলকে নিয়ে আশাবাদী হতেই পারেন রিয়াল সমর্থকেরা।