সুয়ারেজের চোট, নতুন স্ট্রাইকার আনবে বার্সেলোনা?

এই জানুয়ারিতে স্ট্রাইকার আনবে বার্সেলোনা? ছবি: এএফপি
এই জানুয়ারিতে স্ট্রাইকার আনবে বার্সেলোনা? ছবি: এএফপি
>হাঁটুর চোটে পড়ে বাকি মৌসুমের জন্য মাঠের বাইরে চলে গিয়েছেন বার্সেলোনার স্ট্রাইকার লুইস সুয়ারেজ। মূল স্ট্রাইকার হিসেবে দলটায় ফিট স্ট্রাইকার আর নেই। এই অভাব ঘোচানোর জন্য চলতে থাকা শীতকালীন দলবদলের বাজারে বার্সেলোনা কি স্ট্রাইকার কিনবে? কিনলেও কাকে?

মৌসুমের মাঝপথে বার্সেলোনাকে বেশ বড় একটা দুঃসংবাদ দিয়েছেন লুইস সুয়ারেজ।

হাঁটুর চোটে পড়ে চার মাসের জন্য মাঠের বাইরে ছিটকে গেছেন সুয়ারেজ। বলতে গেলে এই মৌসুমে আর মাঠে নামা হবে না তাঁর। প্রথাগত স্ট্রাইকার বলতে বার্সেলোনায় এই একজনই আছেন। সুয়ারেজের চোটের কারণে বার্সায় এখন আর কোনো সুস্থ স্ট্রাইকার থাকলেন না। বাকি মৌসুম স্বীকৃত কোনো নম্বর নাইন ছাড়া কীভাবে খেলবে বার্সেলোনা? যদি না খেলে, সে ক্ষেত্রে নতুন একজন স্ট্রাইকারকে কিনতে হবে। আর কেনার জন্য এখনই উপযুক্ত সময়, চলছে শীতকালীন দলবদলের বাজার। বার্সেলোনা যদি এই মাসে নতুন কাউকে কিনতে চায়, তাহলে পছন্দের তালিকায় কে কে থাকতে পারেন? দেখে নেওয়া যাক!

টিমো ভেরনার
আরবি লাইপজিগের জার্মান এই স্ট্রাইকার এই মৌসুমে আছেন দুর্দান্ত ফর্মে। লিগে এর মধ্যেই ১৭ ম্যাচে ১৮ গোল করেছেন, সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ২৫ ম্যাচে করেছেন ২৩ গোল। মাঝে এক মৌসুম ফর্মহীন থাকার পর নতুন কোচ জুলিয়েন নাগেলসম্যানের আক্রমণাত্মক ফুটবলে নিজেকে নতুন করে খুঁজে পেয়েছেন ভেরনার। ফলে তাঁকে ঘিরে ইউরোপের বড় বড় ক্লাবের মধ্যে নতুন করে আগ্রহও সৃষ্টি হয়েছে। আগ্রহের আরেকটা বড় কারণ, ভেরনারের দামও অস্বাভাবিক বেশি না। ৫০ মিলিয়ন ইউরো পেলেই তাঁকে ছেড়ে দেবে লাইপজিগ, এমনটাই জানা গেছে। ভেরনারের ওপর বার্সেলোনা আগ্রহী, এমন খবর এখনো না শোনা গেলেও সুয়ারেজের চোটের পর অবস্থার পরিবর্তনও ঘটতে পারে। তবে ভেরনারকে কেনার দৌড়ে আগ থেকেই এগিয়ে আছে চেলসি।

লওতারো মার্টিনেজ
ইন্টার মিলানের এই স্ট্রাইকারকে বহুদিন ধরেই পছন্দ বার্সেলোনার। সুয়ারেজ নিজেও বলেছিলেন, উত্তরসূরি হিসেবে মার্টিনেজকেই দেখতে চান বার্সেলোনায়। তবে ইন্টার সাফ জানিয়ে দিয়েছে, ১১০ মিলিয়ন ইউরোর এক পয়সার কমও নিতে রাজি নয় তারা মার্টিনেজের জন্য। এই জানুয়ারিতে বার্সেলোনা এই দাম দিতে কতটুকু প্রস্তুত, ইন্টারই-বা মৌসুমের মাঝপথে তাদের সোনার ডিম পাড়া হাঁসকে ছাড়তে কতটুকু প্রস্তুত—প্রশ্ন থেকেই যায়। ফলে এই মাসেই মার্টিনেজকে বার্সেলোনা পেয়ে যাবে, এটা জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না।

ম্যাক্সি গোমেজ
উরুগুয়ের এই তরুণ স্ট্রাইকার গত মৌসুম থেকেই ফর্মে আছেন, আলো ছড়াচ্ছেন স্প্যানিশ লিগে। গত মৌসুমে লিগে ১৩ গোল করা এই স্ট্রাইকারের খেলায় মুগ্ধ হয়ে এই মৌসুমে ১৫ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে কিনে নিয়েছে ভ্যালেন্সিয়া। সেখানে গিয়েও ছন্দে আছেন গোমেজ, লিগে এর মধ্যেই করে ফেলেছেন সাত গোল। বার্সেলোনার সঙ্গে দলবদলের দিক দিয়ে ভ্যালেন্সিয়ার সম্পর্ক বেশ ভালো। গত কয়েক বছরে ভ্যালেন্সিয়া থেকে পাকো আলসাসের, আন্দ্রে গোমেজ, জেরেমি ম্যাথিউ, জর্ডি আলবা, ডেভিড ভিয়া—এমন অনেক খেলোয়াড়কেই কিনেছে বার্সেলোনা। ফলে ম্যাক্সি গোমেজকে চাইলে দলবদলের ব্যাপারটা বেশি কঠিন হওয়ার কথা না। তবে কেনার মাত্র ছয় মাসের মাথায় ভ্যালেন্সিয়া বেচতে রাজি হবে কি না, সেটাই ভাবার বিষয়।

গ্যাব্রিয়েল বারবোসা
এই স্ট্রাইকারকে এককালে নেইমারের পর ব্রাজিল থেকে আসা সবচেয়ে বড় প্রতিভা মনে করা হতো। যে কারণে সান্তোস থেকে তাঁকে দলে নেয় ইন্টার মিলান। কিন্তু ইন্টারে গিয়েই ছন্দ হারান গ্যাব্রিয়েল। পরে ইন্টার থেকে প্রথমে সান্তোস ও পরে ফ্ল্যামেঙ্গোর জার্সি গায়ে আবারও নিজেকে ফিরে পেয়েছেন তিনি। এমনকি এ বছর ফ্ল্যামেঙ্গোকে কোপা লিবার্তোদোরেস জেতানোর পেছনে রেখেছেন বড় ভূমিকা। ফর্মে ফেরা গ্যাব্রিয়েলকে এর মধ্যেই দলে চাইছে চেলসি, ওয়েস্ট হামের মতো ক্লাবগুলো। চাইলে বার্সেলোনাও গ্যাব্রিয়েলের দিকে নজর দিতে পারে!

ক্রিস্তফ পিওন্তেক
গত মৌসুমে প্রথমে জেনোয়া, ও পরে এসি মিলানের হয়ে গোলবন্যা ছুটিয়ে পাদপ্রদীপের আলোয় এসেছিলেন। এ মৌসুমে মাঠ ও মাঠের বাইরে এসি মিলানের জঘন্য অবস্থার প্রভাব পড়েছে পিওন্তেকের ফর্মের ওপরেও। ফলে মূল একাদশ থেকে জায়গা হারিয়েছেন। এ ছাড়াও দলে এসেছেন জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ, ফলে মূল একাদশে তাঁর নিয়মিত খেলার বিষয়টা আরও অনিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। গত মৌসুমেই পিওন্তেক দেখিয়েছেন, পেছনে বল বানিয়ে দেওয়ার জন্য কার্যকরী খেলোয়াড় থাকলে, তিনি কেমন ভয়ংকর হতে পারেন। আর গোল বানিয়ে দেওয়ার জন্য লিওনেল মেসির চেয়ে ভালো খেলোয়াড় আর কে আছেন? তাই বার্সেলোনা চাইলেই এই পোলিশ স্ট্রাইকারকে নিয়ে আসতে পারে। এসি মিলান এর মধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, ৩০ মিলিয়ন পাউন্ড পেলেই পিওন্তেককে ছেড়ে দেবে তারা।