খুলনাকে ফাইনালে নিলেন আমির

দুর্দান্ত বোলিং প্রদর্শনীতে দলকে ফাইনালে নিলেন আমির। ছবি: প্রথম আলো
দুর্দান্ত বোলিং প্রদর্শনীতে দলকে ফাইনালে নিলেন আমির। ছবি: প্রথম আলো

বঙ্গবন্ধু বিপিএলে ফাইনালে যাওয়ার লড়াই। সে লড়াইয়ে দুই দলের হল্যে লড়লেন চারজন। এদের তিনজনই অবশ্য পাকিস্তানের। রাজশাহী রয়্যালসের হয়ে মোহাম্মদ ইরফান ও শোয়েব মালিক। আর খুলনা টাইগার্সের হয়ে মোহাম্মদ আমিরের সঙ্গী নাজমুল হোসেন। বাকি তিনজন অবশ্য পাদটীকা হয়ে গেলেন ম্যাচ শেষ হতে হতে। এই বাঁহাতি পেসারের দুর্দান্ত বোলিংয়ে রাজশাহীকে ২৭ রানে হারিয়ে ফাইনালে চলে গেল খুলনা। 

তবে এই হারে রাজশাহীর সুযোগ যে একেবারেই শেষ হয়ে গেল, তা নয়। এলিমিনেটরে ঢাকা প্লাটুনকে হারানো চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে এবার মাঠে নামতে হবে রাজশাহী রয়্যালসকে। সে ম্যাচে যে জিতবে, ফাইনালে খুলনা টাইগার্সের প্রতিপক্ষ হবে তারাই।

১৫৯ রানের লক্ষ্য পেয়েছিল রাজশাহী। পুরোপুরি টপ অর্ডার নির্ভর দল হিসেবে বিপিএল পার করা দলটি আজ ব্যাটিং লাইনআপে বৈচিত্র্যের অভাবটা টের পেল। মোহাম্মদ আমিরের প্রথম স্পেলে ধ্বংস হয়ে গেল তারা। ২৩ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল তারা। এর চারটিই মোহাম্মদ আমিরের। সুইং আর বাড়তি বাউন্সে নাভিশ্বাস তুলে দিয়ে একে একে লিটন দাস, আফিফ হোসেন, অলক কাপালি ও আন্দ্রে রাসেলকে তুলে নিয়েছেন। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারেই পঞ্চম উইকেটটি পেয়ে যেতেন। কিন্তু থার্ডম্যানের ফিল্ডার ফরহাদ রেজার ক্যাচটি হাতে নিয়েও রাখতে পারেননি। ফলে ২৩ রানেই ষষ্ঠ উইকেট হারায়নি রাজশাহী।

ফফরহাদ অবশ্য ১০ রান পরেই ড্রেসিংরুমমুখী হয়েছেন। ৩৩ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর রাজশাহী যে ম্যাচটা ২০ ওভার পর্যন্ত টানতে পেরেছে তার পুরো কৃতিত্ব শোয়েব মালিকের। এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে অন্যদের আসা যাওয়া দেখতে থাকা এই পাকিস্তানি তাইজুলেই পেলেন প্রথম আস্থা রাখার মতো সঙ্গী। ৯.৩ ওভারের জুটিতে দুজন ৬৪ রান তুলেছেন। এর মাঝে তাইজুলের অবদান ১২। সে ১২ রান তুলতে ২৩ বল না খেলে ফেললে ম্যাচ জেতার আশা করতে পারত রাজশাহী। অন্যদিকে এতটাই ভালো খেলছিলেন মালিক।

৩ ওভারে ৫৩ রানের লক্ষ্যকেও যখন সহজ মনে হচ্ছিল মালিকের কারণে তখনই দৃশ্যপটে আমির। মালিকও তাঁর প্রথম ভুলটি করলেন। শফিউলের আগের ওভারে ২১ রান তোলা মালিক প্রথম বলেই প্রান্ত বদল করেছেন। তাইজুল পরের বলেই ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন। রান ও বলের সমীকরণ কঠিন হতে থাকায় পঞ্চম বলে ছক্কা মারতে গিয়ে ডিপ পয়েন্টে ধরা পড়লে মালিক। শেষ হলো ৫০ বলে ১০ চার ও ৪ ছক্কায় গড়া ৮০ রানের ইনিংস। মোহাম্মদ আমিরও তাঁর স্পেল শেষ করলেন ১৭ রানে ৬ উইকেট নিয়ে! ইনিংসের শেষ বলে অলআউট হওয়া রাজশাহীও থামল ১৩১ রানে।

পরশু রান বন্যা দেখিয়েছিল খুলনা। খুলনার লাইন আপ আজ সেটা করতে পারেনি। শুধু নাজমুল হোসেন সেদিনের ফর্ম ধরে রেখেছেন। এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে দ্রুত গতিতে রান তুলেছেন। কিন্তু আজ মেহেদী হাসান মিরাজ, রাইলি রুশোরা ঝড় তুলতে পারেননি। মোহাম্মদ ইরফান দুজনকেই তুলে নিয়েছেন। ৪ ওভারের স্পেলে মাত্র ১৩ রান দিয়েছেন ইরফান।

নাজমুলের সঙ্গে বড় সময় উইকেটে থাকলেও শামসুর রহমান ৩১ বল খেলে করেছেন মাত্র ৩২ রান। মুশফিকুর রহিমও ১৬ বলে ২১ রান করে মাঠ ছেড়ে উঠে গিয়েছেন চোট পেয়ে। ফলে রান তোলার সব দায় পড়েছিল নাজমুলের কাঁধে। ৫৭ বলে ৭ চার ও ৪ ছক্কায় ৭৮ রানে অপরাজিত নাজমুল চেষ্টা করেও খুব বড় স্কোর এনে দিতে পারেননি দলকে। হাতে ৭ উইকেট রেখেও মাত্র ১৫৮ রান তুলেছে খুলনা। মোহাম্মদ আমির অবশ্য সেটাকেই যথেষ্ট বানিয়ে দিয়েছেন।