রাসেলের কবজির জোরের রহস্য ফল আর ডাবের পানি

কাল রাসেলের ব্যাটে উঠেছে ঝড়! ছবি: প্রথম আলো
কাল রাসেলের ব্যাটে উঠেছে ঝড়! ছবি: প্রথম আলো

আন্দ্রে রাসেল দাঁড়িয়ে গেলে কী হয়—কাল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স হাড়ে হাড়ে টের পেল! শুধু টেরই পেল না, টুর্নামেন্টে ধারাবাহিক ভালো খেলা দলটা ফাইনালেও উঠতে পারল না। অথচ রাজশাহীর বিপক্ষে ম্যাচটা চট্টগ্রাম জিততেই যাচ্ছিল। তাদের সে অগ্রযাত্রা একাই থামিয়ে দিলেন আন্দ্রে রাসেল।

এক পাশের ব্যাটসম্যানরা ডট বল খেলে খেলে চাপ বাড়িয়েছেন, মারতে গিয়ে হারাতে হয়েছে উইকেটও। শেষ ১২ বলে রাজশাহীর দরকার ছিল ৩১ রান। চার-ছয়ের বৃষ্টিতে এ রানটা তুলতে রাসেল নিয়েছেন মাত্র ৮ বল। এমনিতে বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে বিশেষ সুখ্যাতি আছে তাঁর। বিপিএলে সেটি দেখাতে তিনি বেছে নিলেন চট্টগ্রামকে। এই ইনিংস খেলার আগে কী খেয়ে নেমেছিলেন ‘রাস’?

সংবাদ সম্মেলনে এসেই শিস বাজাতে শুরু করলেন। কখনো চোখ টিপ মারলেন সাংবাদিকদের। স্বভাবসুলভ আমুদে ক্যারিবীয় হিসেবেই নিজেকে উপস্থাপন করলেন রাসেল। বললেন, ‘বেশি কিছু না, কিছু ফল খেয়েছি, সঙ্গে ডাবের পানি ।’

ফল আর ডাবের পানি খেয়ে এমন বিস্ফোরক ইনিংস রাসেলের! চট্টগ্রামের দেওয়া ১৬৫ রান তাড়া করতে গিয়ে বারবার হোঁচট খেতে হয় রাজশাহীকে। ১৭.১ ওভারে ১২৮ রান তুলতে হারাতে হয় ৮ উইকেট। যখন রাজশাহীর অলআউট হওয়া সময়ের ব্যাপার মনে হচ্ছিল তখনই বিস্ফোরক চেহারায় আবির্ভূত হলেন রাসেল। ৭ ছক্কা আর ২ চারে খেললেন ২২ বলে ৫৪ রানের ইনিংস। ২ উইকেটের রোমাঞ্চকর জয়ে দলকে তুলে দিলেন ফাইনালে।

পরিস্থিতি বিচারে দুনিয়ার যেকোনো ব্যাটসম্যানের জন্যই এমন ইনিংস খেলা ভীষণ কঠিন। কিন্তু রাসেলের ব্যাটিং দেখে মনে হয়েছে কত সহজেই না কাজটা করেছেন! ম্যাচ শেষে অবশ্য বললেন, মোটেও কাজটা সহজ ছিল না, ‘না আমার জন্যও সহজ ছিল না। একটা মিস টাইম হয়ে গেলেই কিন্তু আউট হয়ে যেতে পারতাম। ফিল্ডিং পজিশনগুলো দেখেছি, চেয়েছি মাঝ ব্যাটে লাগতে যাতে বল বাউন্ডারির ওপারে গিয়ে পড়ে।’

১২৮ রানে ৮ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর অবিচ্ছিন্ন নবম উইকেটে আবু জায়েদের (করেছেন ৫ রান) সঙ্গে গড়েছেন ম্যাচ জেতানো ৩৭ রানের জুটি। সঙ্গী আবু জায়েদকে তাই বিশেষ ধন্যবাদ রাসেলের, ‘অন্য পাশে যেভাবে উইকেট পড়ছে, কিছুটা ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। আমি ভেবেছি এক পাশে থেকে শেষ পর্যন্ত খেলতে হবে। রাহিকে (জায়েদ) ধন্যবাদ সে সঙ্গ দিতে পেরেছে।’
যেভাবে ধীরে, নরম সুরে কথা বলেন; অবাকই হতে হয়—এ রাসেল কী ঝড়টাই না তোলেন ২২ গজে!