বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে সিমিরিমানার হ্যাটট্রিক

হ্যাটট্রিক করেছেন সিমিরিমানা। ছবি: প্রথম আলো
হ্যাটট্রিক করেছেন সিমিরিমানা। ছবি: প্রথম আলো

ম্যাচের শুরুতেই চমকে দিয়েছিলেন জসপিন সিমিরিমানা। প্রথম মিনিটেই দুরন্ত গতিতে ছুটে গিয়েছিলেন মরিশাসের রক্ষণের দিকে। ডি-বক্সের সামনে আটকা পড়লেও ১৯ বছর বয়সী এই খেলোয়াড় যে বিশেষ কিছু, সেটা টের পাওয়া গিয়েছিল তখনই। ম্যাচ শেষেও সে ভাবনা সরানো যায়নি মাথা থেকে। এই মিডফিল্ডারের হ্যাটট্রিকে মরিশাসকে ৪-১ গোলে হারিয়ে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে উড়ন্ত সূচনা করেছে বুরুন্ডি।

ম্যাচের প্রথম মিনিটে সিমিরিমানার দৌড়ের শেষটা হয়েছিল আসমান দিকুমানার শটে। গোটা ম্যাচেই এ দুজন আলো ছড়িয়েছেন। যদিও ম্যাচের প্রথম মিনিটের পাল্টা দিতে দেরি করেনি মরিশাস। ৩ মিনিটেই মরিশাস রক্ষণের ভুলে ডি-বক্সে বল পেয়ে যান আদ্রিয়েন ফ্রাঁকো। ভুলে বল পেলেও গোল করার বাকি কাজটা সহজ ছিল না। দুই ডিফেন্ডারের মাঝে বলটা নিয়ন্ত্রণে দুই পা–ই কাজে লাগাতে হয়েছে তাঁকে। তারপর গোলরক্ষককে কাছে পোস্টে ফাঁকি দিয়েছেন আলতো টোকায়।

ম্যাচের শুরুতে অমন গোলে হতভম্ব হয়ে পড়া বুরুন্ডি ধাক্কা কাটিয়ে আক্রমণে উঠতে দেরি করেনি। প্রতি–আক্রমণে মরিশাসও কম যাচ্ছিল না। নিখুঁত নিয়ন্ত্রণের ফুটবল কেউই দেখাতে পারেননি। বরং মাঝমাঠে দুই দলই যেভাবে বলের দখল হারাচ্ছিল, তা দৃষ্টিকটু ছিল। তবু রক্ষণাত্মক না খেলে আক্রমণেই মনোযোগ দেওয়া দুই দলের খেলাটি ছিল প্রাণবন্ত। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে থাকা হাতে গোনা কয়েক দর্শকেরও তাই সৌভাগ্য হলো গতিময় ফুটবল দেখার। গতকাল বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনির ম্যাচে যেটার ছিটেফোঁটাও দেখা যায়নি।

একের পর এক আক্রমণের ফল বুরুন্ডি পেয়েছে ২৮ মিনিটে। দারুণ এক পাসে বক্সের ভেতর ফাঁকায় বল পেয়ে সমতা ফিরিয়েছেন সিমিরিমানা। ৪১ মিনিটে বুরুন্ডির এগিয়ে যাওয়ার পেছনে পুরো কৃতিত্ব দিকুমানার। বক্সের একটু বাইরে ডান দিকে ফ্রি কিক পেয়েছিল বুরুন্ডি। দিকুমানার বাঁকানো শট মানব দেয়ালের ওপর দিয়ে এসে জালে আশ্রয় নিয়েছে গোলরক্ষকের গ্লাভসের ছোঁয়া এড়িয়ে। যদিও গোলরক্ষকের কিঞ্চিৎ ভুল ছিল, তবু গোলটি মনে রাখার মতো।

মরিশাস এর আগে–পরে বেশ কিছু আক্রমণ করেও ফল পাচ্ছিল না। বারবার বুরুন্ডির রক্ষণের কেউ না কেউ দলকে বাঁচিয়ে দিচ্ছিলেন নিশ্চিত গোলের হাত থেকে। এর মাঝেই বিরতির পর ব্যবধান বাড়িয়ে নেয় দলটি। এবারও সিমিরিমানার শট ঠেকানোর সুযোগ পাননি গোলরক্ষক। মরিশাসের ম্যাচে ফেরার চেষ্টা ৭২ মিনিটেই থামতে পারত যদি না বুরুন্ডির আক্রমণের দুই খেলোয়াড় মিলে মরিশাসের গোলরক্ষককে হারাতে পারতেন। কিন্তু পাস দিতে দেরি করে ফেলায় ব্যবধান ধরাছোঁয়ার বাইরে নিতে ব্যর্থ হয়েছে দলটি।

৮৫ মিনিটে সে হতাশা দূর করেছেন সিমিরিমানা। সে সঙ্গে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপকে উপহার দিয়েছেন এবারের প্রথম হ্যাটট্রিক।