কোহলিদের সেই পাগল ভক্ত আর নেই

বিশ্বকাপে নজর কেড়েছিলেন চারুলতা প্যাটেল। ছবি : বিসিসিআইয়ের টুইটার অ্যাকাউন্ট
বিশ্বকাপে নজর কেড়েছিলেন চারুলতা প্যাটেল। ছবি : বিসিসিআইয়ের টুইটার অ্যাকাউন্ট
>

গত বিশ্বকাপে ভারতের প্রত্যেকটা ম্যাচে কোহলিদের সমর্থন জানাতে হুইলচেয়ারে বসে হলেও মাঠে যেতেন চারুলতা প্যাটেল। বার্ধক্যজনিত কারণে সেই ‘সুপার ফ্যান’ মৃত্যুবরণ করেছেন

চারুলতা প্যাটেলকে মনে পড়ে?

ওই যে, বিশ্বকাপের ম্যাচে এজবাস্টনে বাংলাদেশ-ভারত যখন মুখোমুখি হলো, তখন টেলিভিশনে টেলিভিশনে হঠাৎই ভেসে উঠেছিল এক বৃদ্ধার মুখ। বয়স ৮৭, তাও ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা কমেনি একটুও। এ বয়সেও দেশকে সমর্থন জানাতে সোজা চলে এসেছিলেন এজবাস্টনের মাঠে। পুরো সময় ধরে খেলাও দেখেছিলেন। হুইলচেয়ারে বসে মনের আনন্দে ভুভুজেলা বাজিয়েছিলেন, কোহলি-রোহিতদের অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছিলেন।

কোহলিরাও সেদিন আশাহত করেননি তাঁকে। বাংলাদেশকে ২৮ রানে হারিয়ে বৃদ্ধার আনন্দ বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তাঁরা। ম্যাচশেষে বিসিসিআই তাদের নিজস্ব টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে তাঁকে ‘সুপার ফ্যান’ হিসেবে চিহ্নিত করে টুইট করে। কোহলি নিজে গিয়ে তাঁর সঙ্গে গ্যালারিতে দেখা করে আসেন, নিয়ে আসেন আশীর্বাদ। পরের ম্যাচের টিকিটও কিনে দেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তারকাই হয়ে গিয়েছিলেন তিনি।

কোহলিদের সঙ্গে সামনাসামনি দেখা করার সেই স্মৃতি নিয়ে পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন সেই চারুলতা প্যাটেল। তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে এক ইনস্টাগ্রাম পোস্টে খবরটা জানানো হয়। বার্ধক্যজনিত কারণেই মারা গিয়েছেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে শ্রদ্ধা জানিয়ে টুইট করেছে বিসিসিআই।

সে দিন কোহলি চারুলতার সমর্থন দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। ক্যারিয়ারে নাকি চারুলতা প্যাটেলের মতো এমন আন্তরিক সমর্থক তিনি দেখেননি, ‘আমি সমর্থকদের অনেক ভালোবাসা এবং ধন্যবাদ জানাই, বিশেষ করে চারুলতা প্যাটেল দিদিকে। ওনার বয়স ৮৭। আমার ক্যারিয়ারে আমি ওনার মতো আন্তরিক কোনো সমর্থককে দেখিনি। উনি প্রমাণ করে দিয়েছেন বয়স শুধু একটা সংখ্যা মাত্র। আন্তরিকতা থাকলে সবকিছুই সম্ভব।’

চারুলতা কী বলেছিলেন সেদিন বাংলাদেশের বিপক্ষে জয়ের পর? তিনি প্রার্থনা করেছিলেন তাঁর প্রিয় ক্রিকেটারদের জন্য, ‘আমি নিশ্চিত, ভারত এবার বিশ্বকাপ জিতবে। আমি গণেশের কাছে প্রার্থনা করে এসেছি যেন ভারত জেতে। আমি সব সময় দলের জন্য প্রার্থনা করি।’ যদিও তাঁর মনের আশা পূরণ হয়নি, সেমিফাইনাল থেকেই বাদ পড়ে যায় ভারত।

আজীবনের ক্রিকেটভক্ত চারুলতা প্যাটেল জন্মেছিলেন ১৯৭৫ সালের প্রথম বিশ্বকাপের ৪৩ বছর আগে। একসময় চাকরি করতেন। কাজকর্মের ফাঁকে সময় পেলেই মাঠে গিয়ে খেলা দেখতেন। দীর্ঘদিন ধরে বাস করতেন ইংল্যান্ডে। ১৯৮৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালও মাঠে বসে দেখেছিলেন তিনি, ‘১৯৮৩ সালে পাজি (কপিল দেব) যখন বিশ্বকাপ জিতেছিল, তখনো আমি সেখানে ছিলাম।’

তাঁর মৃত্যুতে বিসিসিআই টুইট করে জানিয়েছে, 'ভারত দলের সুপার ফ্যান চারুলতা প্যাটেল সব সময় আমাদের হৃদয়ে থাকবেন। ক্রিকেটের প্রতি তাঁর ভালোবাসা ও উদ্দীপনা সব সময় আমাদের অনুপ্রাণিত করে যাবে। তাঁর আত্মা চিরশান্তিতে থাকুক।'