তবু কেন ভালোবাসা সাকিবকে

>অনুষ্ঠানের সঙ্গে ক্রিকেটের কোনো সম্পর্ক ছিল না। কিন্তু যেহেতু অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন সাকিব আল হাসান, অবধারিতভাবেই চলে ক্রিকেট প্রসঙ্গ। অনেক দিন পর বাঁহাতি অলরাউন্ডার বললেন, ক্রিকেট নিয়ে

একটি পণ্যের বিজ্ঞাপন হলেও এ যেন তাঁরই জীবনের গল্প—‘আমি সাকিব আল হাসান এই ২২ গজই আমার ঠিকানা, কঠিন সময় পার করছি। তবে ফিরব আরও কঠিন হয়ে...।’ পর্দায় ভেসে ওঠা সাকিবের দিকে অপলক তাকিয়ে থাকেন মিলনায়তনের সামনের সারিতে বসা সাকিব। দুই সাকিবের মধ্যে পার্থক্য নেই। অনুষ্ঠানে চুপচাপ বসে থাকা সাকিবের কথাগুলোই যেন বলে চলেছেন পর্দা ভেসে ওঠা সাকিব।

কত দিন পর সাকিব আল হাসান কথা বললেন ক্রিকেট নিয়ে! ডেইলি স্টার মিলনায়তনে আজ বাঁহাতি অলরাউন্ডার এসেছিলেন ‘লাইফবয়ে’র সঙ্গে চুক্তি নবায়ন অনুষ্ঠানে। দুই পক্ষের নয় বছরের পথ বাড়ল আরও তিন বছর। তবে পণ্য দূতিয়ালি ছাপিয়ে সাকিবের অনুষ্ঠানে চলে এল ক্রিকেট প্রসঙ্গ। কঠিন কঠিন প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে স্বচ্ছন্দবোধ না করলেও হাসিমুখে অনেক কিছুই বললেন তিনি।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ছোট্ট একটু বিজ্ঞাপনী ফুটেজে দেখা গেল, সাকিব বলছেন তিনি তৈরি হচ্ছেন ভালোভাবে ফিরতে। ভালোভাবে ফিরতে তিনি নিজেকে কীভাবে তৈরি করছেন, এ প্রশ্নের উত্তরে একটু রহস্য রাখলেন বাঁহাতি অলারাউন্ডার, ‘আমি ফিরে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে আপনাদের। অনেক কিছু করে আসছি এবং আসার পর কিছু প্রমাণিত হলো না, সেটার ফল ভালো হবে না! গ্রহণযোগ্যও হবে না। অপেক্ষা করেন, সব ঠিকঠাক থাকলে উত্তর সময়ই বলে দেবে।’

আইসিসির নিষেধাজ্ঞায় পড়ে সাকিব এখন ক্রিকেটের বাইরে। নিষেধাজ্ঞা কাটতে কাটতে আগামী অক্টোবর। লম্বা সময়ে দলের বাইরে, ক্রিকেটের বাইরে। বাংলাদেশ দলকে, ক্রিকেটকে স্বাভাবিকভাবেই খুব মিস করছেন সাকিব, ‘যেটার সঙ্গে আপনার সম্পৃক্ততা থাকে, সেটা আপনার পছন্দের হোক না হোক মিস করবেনই, এটা খুবই স্বাভাবিক। আমার ক্ষেত্রেও ভিন্ন কিছু নয়।’

আজ লাইফবয়ের অনুষ্ঠানে সাকিব। ছবি: প্রথম আলো
আজ লাইফবয়ের অনুষ্ঠানে সাকিব। ছবি: প্রথম আলো

যেহেতু ক্রিকেট থেকে অনেক দূরে আছেন, জীবন কীভাবে কাটাচ্ছেন, সেটি খুলে বলতে চাননি সাকিব। তবে কখনো যদি বলার মতো পরিস্থিতি হয়, তখন বলবেন। এখন এ বিষয়ে বলতে স্বচ্ছন্দবোধ করছেন না। ব্যতিক্রম ঘটনা হচ্ছে, নিষিদ্ধ হলেও সাকিবের জনপ্রিয়তা এতটুকু কমেনি। বরং সেটি বেড়েই চলেছে। বেড়ে চলেছে তাঁর পণ্য দূতিয়ালির কাজও (এনডোর্সমেন্ট)। অথচ এমনটা দেখা যায়নি অস্ট্রেলিয়ার স্টিভ স্মিথ কিংবা ডেভিড ওয়ার্নারের ক্ষেত্রে। তাঁরা যখন নিষিদ্ধ হয়েছেন, তখন পাশ থেকে সরে গেছে সব স্পন্সর। সাকিবের ক্ষেত্রে ঘটছে উল্টো।

কেন উল্টো? সহজ উত্তর—মানুষের ভালোবাসা। ক্রিকেটে ফিরে এই ভালাবাসার প্রতিদান দিতে চান সাকিব, ‘অনেকবারই শুনেছেন, এই কথা বেশ প্রচলিত, জীবিত থাকতে কারও মর্ম বোঝা যায় না। আমার ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে, আমি জীবিত থাকতে মর্মটা বুঝতে পারছি! আমি খুশি, সবার ভালোবাসা আছে। এখানে আমার দায়িত্বটা বেড়ে যাচ্ছে স্বাভাবিকভাবেই। চেষ্টা করব এই দায়িত্বটা পালন করতে।’