এমন রত্নের জন্ম দেওয়ায় প্রশংসা প্রাপ্য রোনালদোর মায়ের

ম্যাচের পর রোনালদোর উল্লাস। কাল তুরিনে। ছবি: রয়টার্স।
ম্যাচের পর রোনালদোর উল্লাস। কাল তুরিনে। ছবি: রয়টার্স।

কে বলবে, আর ১৩ দিন পর ৩৫তম জন্মদিনের কেক কাটবেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো! এ বয়সে যেখানে অন্য অনেক খেলোয়াড়ের অবসরজীবন কাটতে থাকে, রোনালদো যেন এখনো নিজেকে নতুন রূপে সামনে নিয়ে আসছেন প্রতিনিয়ত, নিজেকে ছাপিয়ে যাচ্ছেন স্বপ্ন নিয়ে ছুটতে থাকা কোনো তরুণের মতো।

অবিশ্বাস্য, অন্য যে কারও চেয়ে আলাদা—এসব বিশেষণ তো রোনালদোর ক্ষেত্রে বহু ব্যবহারে ক্লিশেই হয়ে গেছে। পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডের ক্লাব জুভেন্টাসের কোচ মরিসিও সারিও যেন রোনালদোর প্রশংসায় নতুন কিছু খুঁজে না পেয়ে এবার প্রশংসা শুরু করেছেন তর্কসাপেক্ষে সময়ের সেরা ফুটবলারের মায়ের। এই মায়ের গর্ভেই যে জন্ম এমন রত্নের।

ইতালিয়ান কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে কাল রাতে নিজেদের মাঠে রোমাকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে জুভেন্টাস, তাতে প্রথম গোলটি রোনালদোর। এ নিয়ে সব টুর্নামেন্ট মিলিয়ে সর্বশেষ আট ম্যাচেই গোল পেয়েছেন চলতি বছর আরও ঝলসে ওঠা রোনালদো, এই আট ম্যাচে তাঁর গোল ১২টি! দলের মহাতারকার এমন ফর্ম নিয়ে কী বলবেন—প্রশ্নেই নতুন প্রশংসার খোঁজে রোনালদোর মায়ের প্রসঙ্গ টেনে আনলেন সারি, ‘ওর ফর্ম নিয়ে আমি আর নতুন কী-ই বা বলতে পারি। ওর মাকে ধন্যবাদ এমন দুর্দান্ত এক নিদর্শনের জন্ম দেওয়ার জন্য!’

২৬ মিনিটে মাঝমাঠের একটু ওপরে বাঁ প্রান্তে গঞ্জালো হিগুয়াইনের পাস পেয়ে এক দৌড়ে রোমা বক্সে ঢুকে পড়েন রোনালদো। সেখান থেকে বাঁ পায়ের জোরালো শটে গোল। এরপর রদ্রিগো বেনতাঙ্কুর ও লিওনার্দো বোনুচ্চির গোলে বিরতিতেই ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় জুভেন্টাস। ৫০ মিনিটে রোমার গোলটি জুভ গোলকিপার জিয়ানলুইজি বুফনের আত্মঘাতী। বুফনের ভাগ্য খারাপ। চেঙ্গিজ উন্দারের শট ঠেকাতে ঝাঁপিয়েছিলেন, কিন্তু বল বারে লেগে উল্টো এসে জুভেন্টাসের কিংবদন্তি গোলকিপারের পিঠে লেগেই ঢোকে জালে।

সব মিলিয়ে ১৩ বার ইতালিয়ান কাপ জয়ী জুভেন্টাস গত মৌসুমে এই কোয়ার্টার ফাইনালেই বিদায় নিয়েছিল। কাল গোল খাওয়ার পর বুফনের বিশ্বস্ত গ্লাভস রোমার ফ্লোরেঞ্জি ও কোলারভের শট না ঠেকালে হয়তো এবারও জুভেন্টাসের সেমিফাইনালে যাওয়া-না যাওয়া পড়ে যেত শঙ্কায়। কিন্তু সব ছাপিয়ে ম্যাচ শেষে আলোচনায় রোনালদোই। ২০২০ সালে এসে চার ম্যাচে এ নিয়ে ৭ গোল হলো পর্তুগিজ যুবরাজের।

সারির চোখে দারুণ এক ‘নিদর্শন’ রোনালদোর এমন চোখধাঁধানো ফর্মের জন্য তাঁর মায়ের প্রশংসা যখন করছেনই, রত্নগর্ভা মায়ের ছেলেই-বা আর বাদ যান কেন কোচের প্রশংসা থেকে! জুভেন্টাস কোচ মুগ্ধ এ বয়সেও রোনালদোর ফিটনেসে, ‘শারীরিকভাবে ও দারুণ অবস্থায় আছে। গতির ঝড় তোলার দিক থেকেও দারুণ করছে। ছোট ছোট ব্যাপারগুলোরও অনেক নেয় ও। একজন খেলোয়াড়ের জন্য ব্যক্তিগতভাবে এর চেয়ে আর উন্নতি করা কঠিন।’ এরপর আবার সারির কণ্ঠে কদিন আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতির অনুরণন, ‘আমরা এমন একজন খেলোয়াড়কে নিয়ে কথা বলছি যে কিনা সর্বকালের সেরাদের একজন। আমি ওকে ষষ্ঠ ব্যালন ডি’অর জয়ে সাহায্য করতে চাই।’

যেভাবে শুরু করেছেন বছরটা, সেভাবে চালিয়ে যেতে পারলে রোনালদোর জন্য তা খুব একটা কঠিনও হবে না।