রোনালদোর সতীর্থকে কিনতে পারবে ইউনাইটেড?

স্পোর্টিং লিসবনের ব্রুনো ফার্নান্দেজ। ছবি : এএফপি
স্পোর্টিং লিসবনের ব্রুনো ফার্নান্দেজ। ছবি : এএফপি
>

শীতকালীন দলবদলের আর বাকি আছে এক সপ্তাহ। প্রিমিয়ার লিগে ধুঁকতে থাকা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এখনো নতুন কাউকে কেনেনি। বাকি এক সপ্তাহে নতুন কেউ কি আসবেন দলটায়?

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর সঙ্গে ব্রুনো ফার্নান্দেজের মিল আছে বেশ। দুজনই পর্তুগালের খেলোয়াড়। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দেওয়ার আগে রোনালদো খেলতেন স্পোর্টিং লিসবনে। ব্রুনো ফার্নান্দেজও এখন খেলেন স্পোর্টিংয়ে, এবং রোনালদোর মতো তিনিও যোগ দিতে পারেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে। কিন্তু স্পোর্টিংয়ের সঙ্গে দাম নিয়ে বনিবনা হচ্ছে না ইউনাইটেডের। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ব্রুনো কি দল বদল করে আদৌ ইউনাইটেডে আসতে পারবেন?

রোনালদোর জাতীয় দলের সতীর্থের প্রতি ইউনাইটেডের আগ্রহ আজকের নয়। সেই গত গ্রীষ্মকালীন দলবদল থেকেই ব্রুনোকে পছন্দের তালিকায় রেখেছে ইউনাইটেড। কিন্তু ওই পছন্দ পর্যন্তই। এখনো ব্রুনো কিনতে পারেনি তারা। জানুয়ারির দলবদলে স্পোর্টিং সাফ জানিয়ে দিয়েছিল, আক্রমণাত্মক এই মিডফিল্ডারটিকে পেতে ৫১ মিলিয়ন পাউন্ড দিতে হবে ইউনাইটেডের। কিন্তু একজন খেলোয়াড়ের পেছনে এত খরচ করতে চাইছে না তারা। প্রথমে ব্রুনোর জন্য ৪২ মিলিয়ন পাউন্ড প্রস্তাব দিয়েও স্পোর্টিংয়ের মন গলাতে পারেনি তারা। শেষমেশ ইউনাইটেড বলেছে, তারা ৫১ মিলিয়ন দিতে আগ্রহী। তবে তার জন্য বেশ কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে ব্রুনোকে।

৪২ মিলিয়ন পাউন্ড প্রথমেই দিয়ে দেবে ইউনাইটেড। বাকি ৯ মিলিয়ন পাউন্ড দেওয়া না দেওয়া নির্ভর করবে ব্রুনো ইউনাইটেডের হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতেন কি না, ইউনাইটেডের খেলোয়াড় হয়ে ব্যালন ডি’অর জেতেন কি না—এসবের ওপর। ইউনাইটেডের এখন যে অবস্থা, এই দলটাকে নিয়ে ব্রুনো চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতবেন বা পরে নিজে ব্যালন জিতবেন, এই আশা ইউনাইটেডের সবচেয়ে পাঁড় ভক্তটাও করবেন না মনে হয়। স্পোর্টিংও বুঝেছে, বাকি আট মিলিয়নের এই হিসাবটা ফাঁকা বুলি ছাড়া আর কিছুই নয়।

তা ছাড়া আরও একটা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। ইউনাইটেডের মতো ক্লাবের পক্ষে ৫৮ মিলিয়ন পাউন্ড দেওয়া কোনো ব্যাপার না হলেও তারা আট পাউন্ডের জন্য এত দরদাম করছে, তার একমাত্র কারণ, তারা অতিরিক্ত দামে খেলোয়াড় কিনতে রাজি নয়। একবার অতিরিক্ত দামে খেলোয়াড় কিনলে বিশ্বের অন্যান্য ক্লাবগুলোর মধ্যে একটা ধারণা হয়ে যাবে, ইউনাইটেড বেশি দামে খেলোয়াড় কিনে। ফলে আগামী দলবদলের সময়ে লেস্টার সিটির জেমস ম্যাডিসন বা বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের জাডন সাঞ্চোর মতো খেলোয়াড়দের কিনতে চাইলে অতিরিক্ত দাম দিতে হতে পারে ইউনাইটেডকে। এই ভয়ে ব্রুনোর জন্য বেশি টাকা খসাতে চাচ্ছে না ইউনাইটেড। ফলে, ব্রুনোর ইউনাইটেড আসাটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

মার্কাস রাশফোর্ডের চোটের কারণে একটা স্ট্রাইকারের অভাবে ভুগছে ইউনাইটেড। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে অন্তত একজন স্ট্রাইকার কিনতে হবে, বা ধারে আনতে হবে, এই লক্ষ্যে বেশ কিছু খেলোয়াড়দের নজরে রেখেছে তারা। এর মধ্যে রয়েছেন মোনাকোর আলজেরীয় স্ট্রাইকার ইসলাম স্লিমানি, লিওঁর ফরাসি স্ট্রাইকার মুসা ডেমবেলে, বোকা জুনিয়র্সের আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার কার্লোস তেভেজ, এসি মিলানের পোলিশ স্ট্রাইকার ক্রিস্তফ পিওন্তেক, পিএসজির উরুগুইয়ান স্ট্রাইকার এডিনসন কাভানি, চেলসির ফরাসি স্ট্রাইকার অলিভিয়ের জিরু, সাংহাই শেনহুয়ার নাইজেরিয়ার স্ট্রাইকার ওডিওন ইগহালো প্রমুখ। এর মধ্যে যেকোনো একজনকে যদি কিনতে নাও পারে, তবুও অন্তত ছয় মাসের ধারে চায় ইউনাইটেড।

টটেনহাম হটস্পার থেকে ইন্টার মিলানে যাওয়া প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছে ডেনমার্কের মিডফিল্ডার ক্রিস্টিয়ান এরিকসেনের। ইন্টারের ১৮ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ হচ্ছে এতে। রক্ষণভাগের দুর্বলতা কাটানোর জন্য ফ্ল্যামেঙ্গোর স্প্যানিশ ডিফেন্ডার পাবলো মারিকে দলে চাইছে আর্সেনাল। ইন্টারের ইতালিয়ান উইঙ্গার মাত্তেও পলিতানো ২৫ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে যোগ দিতে যাচ্ছেন নাপোলিতে। নাপোলি থেকে ছয় মাসের ধারে ইন্টারে যেতে পারেন স্প্যানিশ স্ট্রাইকার ফার্নান্দো ইয়োরেন্তে। ফুলব্যাক মাত্তিয়া ডি শিলিওকে পিএসজিতে পাঠাচ্ছে জুভেন্টাস, বিনিময়ে আনছে লেফটব্যাক লেভিন কুরজাওয়াকে। অ্যাটলেটিকো প্যারানেসের প্রতিভাবান ব্রাজিলীয় মিডফিল্ডার ব্রুনো গিমারেস যাচ্ছেন লিওঁতে। বার্সেলোনার সাবেক খেলোয়াড় দানি অলমো ২০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে ডায়নামো জাগরেব থেকে যোগ দিচ্ছেন আরবি লাইপজিগে।