ঘুরতে শুরু করেছে জার্মান ক্লাব ফুটবলের 'যন্ত্র'

বায়ার্নের দুই গোলদাতা লেফান্ডভস্কি ও আলকান্ত্রার উল্লাস। ছবি: এএফপি
বায়ার্নের দুই গোলদাতা লেফান্ডভস্কি ও আলকান্ত্রার উল্লাস। ছবি: এএফপি
>

গত কাল শালকেকে ৫-০ গোলে হারিয়েছে বায়ার্ন মিউনিখ। গোল করেছেন জার্মান মিডফিল্ডার লিওন গোর্তেকা ও টমাস মুলার, পোলিশ স্ট্রাইকার রবার্ট লেফান্ডভস্কি, স্প্যানিশ মিডফিল্ডার থিয়াগো আলকান্ত্রা ও জার্মান উইঙ্গার সার্জ গেন্যাব্রি

গত সাত বছরে টানা সাতবার জার্মান বুন্দেসলিগা জিতেছে বায়ার্ন মিউনিখ। এবার তাদের অবস্থা তেমন ভালো না। ফর্মহীনতা ও মৌসুমের মাঝপথে কোচ বদলের কারণে এখনো নিজেদের হারিয়ে খুঁজছে বায়ার্ন। আর এ সুযোগটা নিচ্ছে আরবি লাইপজিগ, বরুসিয়া মনশেনগ্লাডবাখের মতো ক্লাবগুলো। পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে আছে লাইপজিগ। কিন্তু গতকাল শালকের বিপক্ষে জিতে আবারও শিরোপা দৌড়ে ভালোভাবেই ফিরে এল জার্মান চ্যাম্পিয়নরা। শীর্ষস্থানীয় লাইপজিগের সঙ্গে বায়ার্ন এখন ১ পয়েন্ট ব্যবধানে পিছিয়ে।

যথারীতি এ ম্যাচেও বায়ার্নের হয়ে গোল করেছেন পোলিশ স্ট্রাইকার রবার্ট লেফান্ডভস্কি। দুরন্ত ফর্মে থাকা পোলিশ স্ট্রাইকার মৌসুমে করে ফেললেন ২১ গোল। এ মৌসুমে জার্মান লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতা লাইপজিগের জার্মান স্ট্রাইকার টিমো ভেরনারকে আবারও পেছনে ফেললেন তিনি। প্রথমার্ধ শেষের ঠিক আগে জার্মান মিডফিল্ডার লিওন গোর্তেকার পাস থেকে গোল করেন বায়ার্নের পোড় খাওয়া যোদ্ধা টমাস মুলার। ৫০ মিনিটে আর সহকারী নয়, মূল গোলদাতার ভূমিকায় আবির্ভূত হন গোর্তেকা। লেফান্ডভস্কির কাছ থেকে বল পেয়ে ৫৮ মিনিটে ব্যবধান ৪-০ করেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার থিয়াগো আলকান্ত্রা।

যে হারে গোল করছিল বায়ার্ন, মনে হচ্ছিল সাত-আটটা গোল অনায়াসে হয়ে যাবে। জার্মান জাতীয় দলের খেলাকে যদি ‘যন্ত্র’ বলে মনে করা হয় দেশটির ক্লাব ফুটবলে বায়ার্ন তাহলে এর সেরা প্রতিচ্ছবি। তবে চতুর্থ গোলের পর আক্রমণের ধার কমায় বায়ার্ন। ৮৯ মিনিটে শেষ গোলটা করে দলকে ৫-০ গোলের জয় এনে দেন সার্জ গেন্যাব্রি।

ঐতিহ্যগতভাবেই বায়ার্নের সঙ্গে শালকের প্রতিদ্বন্দ্বিতা আছে সব সময়। শত্রুতার ঝাঁজটা কদিন আগে বেড়েছে তরুণ জার্মান গোলরক্ষক আলেক্সান্ডার নুবেলের কারণে। জার্মানির অন্যতম প্রতিভাবান এ গোলরক্ষক কিছুদিন আগেও শালকের অধিনায়ক ছিলেন। কিন্তু আগামী জুনে তাঁর শালকের সঙ্গে চুক্তি শেষ হচ্ছে। শালকে হাজার চেষ্টা করেও নুবেলের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করতে পারেনি। কীভাবে পারবে? জার্মানির সবচেয়ে বড় ক্লাব বায়ার্নের যে নজর পড়েছিল তাঁর ওপর!

বায়ার্নের আগ্রহ দেখে নুবেল আর চুক্তি নবায়ন করার আগ্রহ পাননি। কিছুদিন আগে আনুষ্ঠানিকভাবে বায়ার্ন জানিয়েছে, শালকে অধিনায়ককে আগামী জুনে দলে টানতে চলেছে তারা। নিজেদের অধিনায়কের এহেন আচরণ ভালো লাগেনি শালকে সমর্থকদের। নুবেলের কাছ থেকে শালকের অধিনায়কত্বও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। নয় বছর আগে ঠিক একই ভাবে আরেক গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নয়্যারকে শালকে থেকে দলে এনেছিল বায়ার্ন। এবার নুবেল যাওয়ার ফলে দুই দলের মধ্যে শত্রুতাটা আরেকটু বেড়েছে।

শালকের সামনে সুযোগ ছিল খেলার মাঠে বায়ার্নের এ কাজের জবাব দেওয়ার। সেটা তো পারলই না, উল্টো হেরে বসল বড় ব্যবধানে। ১৯ ম্যাচে ১২ জয় ও তিন ড্রয়ে বায়ার্নের পয়েন্ট ৩৯। তাদের সমান ম্যাচে ১ পয়েন্ট ব্যবধানে এগিয়ে শীর্ষে লাইপজিগ।