বাংলাদেশ সামর্থ্যে পিছিয়ে বলেই হার

আউট হয়ে ফিরছেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। বাংলাদেশ দলের ব্যাটিংয়ের প্রতীকী চিত্র। ছবি: এএফপি
আউট হয়ে ফিরছেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। বাংলাদেশ দলের ব্যাটিংয়ের প্রতীকী চিত্র। ছবি: এএফপি
>

দক্ষতা ও সামর্থ্যে বাংলাদেশের তুলনায় পাকিস্তান অনেক এগিয়ে বলে মনে করেন বাংলাদেশ কোচ রাসেল ডমিঙ্গো।

রাসেল ডমিঙ্গোর মুখে অনভিজ্ঞতার কথা। পাকিস্তান সফরে সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম কিংবা সাইফউদ্দিনের মতো গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের না থাকার কথা। মাহমুদউল্লাহর মতো তাঁর কণ্ঠেও আক্ষেপের সুর, ‘আর ২৫টা রান হতে পারত।’

গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের উইকেটে ব্যাটিং করাটা সহজ মনে হয়নি বাংলাদেশ কোচের কাছে। তবে আগের ম্যাচের চেয়ে কাল উইকেট ভালো ছিল বলেই মনে করেন ডমিঙ্গো। তারপরও জিততে না পারার কারণ ডমিঙ্গোর চোখে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা, ‘আমরা ২০-২৫ রান কম করেছি। প্রথম দিনের উইকেটের চেয়ে আজ (গতকাল) উইকেট ভালো ছিল। খুবই হতাশাজনক। আগের ম্যাচে লড়াই হয়েছিল, আজ কিছুই হয়নি। অন্তত ১৫৫ রান করতে পারলে লড়াই করা যেত।’

টস জিতে আগের ব্যাটিং করার কারণ হিসেবে ডমিঙ্গো বলেছেন, ‘পাকিস্তানের বোলিং কত শক্তিশালী আমরা জানি। অনভিজ্ঞ ব্যাটিং লাইনআপ নিয়ে এমন শক্তিশালী বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাটিং করাটা খুব বুদ্ধিমানের কাজ হতো না।’

ডমিঙ্গোর চোখে দুই দলের মূল পার্থক্য সামর্থ্যে, ‘তারা (পাকিস্তান) দেখিয়ে দিয়েছে, কেন তারা টি-টোয়েন্টি র‍্যাঙ্কিংয়ের ১ নম্বর দল আর আমরা শেষের দিকের। আমাদের দলটার দিকে দেখুন। মেহেদী আজ (কাল) তাঁর দ্বিতীয় ম্যাচটি খেলল। আফিফ খেলেছে ৯টি। এ মুহূর্তে দক্ষতা ও সামর্থ্যে দুই দলের অনেক পার্থক্য। আমাদের এখনো অনেক দূর এগোনোর বাকি।’

বাংলাদেশ কোচের আশা, খুব দ্রুতই নিজেদের ভুলগুলো শুধরে নেবেন আফিফ-নাঈম-মেহেদী-আমিনুলদের মতো অনভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা, ‘তারা দারুণ একটা বোলিং লাইনআপের বিপক্ষে কঠিন উইকেটে খেলেছে। আশা করি, তারা অনেক কিছুই শিখেছে।’

মুশফিকুর রহিমের অভাব অনুভব করছেন কি না, এমন প্রশ্ন ছিল ডমিঙ্গোর কাছে। তাঁর উত্তর কেবল মুশফিক নন, তিনি মিস করেছেন সাকিব-সাইফউদ্দিনদেরও, ‘আমরা আসলে মূল দলের তিনজন ক্রিকেটার ছাড়া এসেছি। তারা একাদশে আমার প্রথম পছন্দ। পেস বোলার সাইফউদ্দিন নতুন বলে বোলিং করে, আট নম্বরে সে আমাদের নির্ভরতা।’

তবে এই খেলোয়াড়দের অনুপস্থিতিটা আবার তরুণদের মেলে ধরার সুযোগ মনে করছেন ডমিঙ্গো, ‘ওই খেলোয়াড়েরা সব সময় দলে থাকবে না। ওদের জায়গা কাউকে নিতে হবে। নাঈম অবশ্য প্রথম ম্যাচে ভালো করেছে। সে দুই মাস আগে ভারতের বিপক্ষেও ভালো করেছিল। সে তার সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছে। সিনিয়র খেলোয়াড়দের অনুপস্থিতি নাঈমদের মতো খেলোয়াড়দের জন্য সুযোগও।’

গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব নিয়েছেন। এরপর বাংলাদেশ আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট, দেশের মাটিতে জিম্বাবুয়ে-আফগানিস্তানকে নিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজ ও শ্রীলঙ্কা সফর করেছে। কোনোটাতেই ছিলেন না তামিম। পাকিস্তান সফরে প্রথমবারের মতো অভিজ্ঞ এই বাংলাদেশ ওপেনারকে পেলেন ডমিঙ্গো। এই দুই ম্যাচেই আবার কিছুটা মন্থর ব্যাটিং করেছেন তামিম। প্রথম ম্যাচের (১১৪.৭০) চেয়ে দ্বিতীয় ম্যাচের স্ট্রাইক রেট (১২২.৬৪) অবশ্য কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু তাতে বদলায়নি দলের ভাগ্য।

ডমিঙ্গোর মতে, দলের রান বেশি না হওয়ার একটা কারণ নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানো। তামিমের ব্যাটিংয়ের ধরন ঠিকই মনে হয়েছে কোচের কাছে। তবে দলের প্রয়োজনে তামিমের ব্যাটিং নিয়ে আরও কাজ করতের চান কোচ, ‘আমি কোচ হওয়ার পর এই প্রথম তাকে নিয়ে কাজ করছি। আমাকে দেখতে হবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সে কীভাবে খেলবে। আশা করছি, সে নিজের খেলাটাকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারবে। কিন্তু এ জন্য অনেক কাজ এখনো বাকি।’