হারের খেলায় জিম্বাবুয়েই শুধু হারাচ্ছে বাংলাদেশকে

গত এক দশকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। ছবি: বিসিবি
গত এক দশকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। ছবি: বিসিবি
>পাকিস্তানের মাটিতে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে ২-০ ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। এ সংস্করণে গত এক দশকে কতগুলো সিরিজ হেরেছে বাংলাদেশ?

সময় এখন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের। গত এক দশকে এ সংস্করণে সবচেয়ে উন্নতি করা দলটি সম্ভবত আফগানিস্তান। সম্ভবত—কথাটা রাখতে হচ্ছে ক্রিকেটের কুলীন দেশগুলোর মান বিচারে। নইলে এ সময়ে সিরিজ হার-জিতের সংখ্যা বিচারে আফগানিস্তান ডাকাবুকো অনেক দলের চেয়েই এগিয়ে। বাংলাদেশের অনেক পরে আফগানিস্তানের উত্থান ঘটলেও কথায় কথায় দুটি দলের মধ্যে যে তুলনাটা চলে সেটি এখন বোধ হয় অযৌক্তিক কিছু না।

ঠিকই ধরেছেন। ক্রিকেটের সবচেয়ে জনপ্রিয় সংস্করণে আফগানিস্তান দিন দিন যেমন উন্নতি করছে, বাংলাদেশ যেন ততই পিছিয়ে পড়ছে। এর সর্বশেষ প্রমাণ পাকিস্তানের মাটিতে টি-টোয়েন্টি সিরিজ। আগের দুই ম্যাচের পারফরম্যান্স বিচারে কাল বাঁচিয়ে দিয়েছে বৃষ্টি। তৃতীয় ম্যাচটা পরিত্যক্ত হলেও এড়ানো যায়নি ধবলধোলাই। হারতে হারতে এসব ব্যবধান অনেক ক্রিকেটপ্রেমীরই গায়ে লাগার কথা না! এ সংস্করণে সিরিজ হারের দৃশ্য তো অপরিচিত না—এমনটাই ভেবে থাকেন অনেকে। গত এক দশকে বাংলাদেশ দলের টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারের খবর তো নতুন কিছু নয়।

টি-টোয়েন্টি সংস্করণে ২০১০ সাল থেকে ২৫টি সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। এক ম্যাচের সিরিজ বিবেচনায় নিয়েই এ হিসেব। এর মধ্যে বাংলাদেশ হেরেছে ১৬টি সিরিজ। অর্থাৎ ৬৪ ভাগ সিরিজেই হারে বাংলাদেশ। এ সময়ে দল জিতেছে ৪টি সিরিজ এবং বাকি ৫ সিরিজ ড্র। ২০১২ সালে আয়ারল্যান্ডে ৩-০, তার আগের বছর ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১-০ ছাড়াও ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩-২ এবং ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১-০ জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ।

এবার আসা যাক আফগানিস্তান প্রসঙ্গে। এই এক দশকে ১৫টি সিরিজ খেলেছে আফগানিস্তান। এর মধ্যে তারা হেরেছে মাত্র ৩টি সিরিজ। মাত্র ২০ ভাগ সিরিজে হার। জিতেছে ১১ সিরিজ। ২০১৩ সালে আরব আমিরাতে কেনিয়ার বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজ ১-১ ব্যবধানে ড্র করেছিল আফগানিস্তান। তবে এ এক দশকে আফগানিস্তানের ওয়েস্ট ইন্ডিজ, পাকিস্তান কিংবা বাংলাদেশ ছাড়া তেমন পরিচিত কোনো দলের মুখোমুখি হয়নি। আয়ারল্যান্ড, ওমান, স্কটল্যান্ড ও হংকংয়ের মুখোমুখি হয়েছে তারা। যদিও এসব দলের সঙ্গে শক্তির পার্থক্যও তারা বুঝিয়ে দিয়েছে বেশির ভাগ সিরিজে ধবলধোলাই করে। বাংলাদেশ, আরব আমিরাত, আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওমান ও জিম্বাবুয়েকে ধবলধোলাই করেছে আফগানিস্তান।

এবার আসা যাক বড় দলগুলোর পরিসংখ্যানে। এ সময়ে হার এড়ানোয় সবচেয়ে সফল ভারত। এ সময়ে ৩৮ সিরিজ খেলে হেরেছে ১১টিতে, ২৮.৯৪ ভাগ সময় হেরেছে ধোনি ও কোহলির দল। গত এক দশকে এ সংস্করণে ৩৩টি সিরিজ খেলে ১২টিতে হেরেছে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া তাদের সমানসংখ্যক সিরিজ খেলে হেরেছে ১৪টিতে। উপমহাদেশের দলগুলোর মধ্যে শ্রীলঙ্কা ৩৬ সিরিজ খেলে হেরেছে ১৮টি সিরিজ। অর্থাৎ ৫০ ভাগ সিরিজে হেরেছে লঙ্কানরা। পাকিস্তানের ৪৪ সিরিজ হার ১৬টি। ৩২টি সিরিজ খেলে ১১টিতে হেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। নিউজিল্যান্ড তাদের চেয়ে একটি সিরিজ বেশি খেলে হেরেছে ১৪ সিরিজে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দুইবারের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ এ সময়ে খেলেছে ৩৮টি সিরিজ। হারের সংখ্যা মোটেও কম না, ২০টি সিরিজ।

বাংলাদেশের জন্য একমাত্র সান্ত্বনা জিম্বাবুয়ে। এ দেশটি ২২টি সিরিজ খেলে হেরেছে ১৬টিতেই। অর্থাৎ কদিন পরেই বাংলাদেশ সফরে আসা জিম্বাবুয়ে ৭২.৭৩ ভাগ সময়ই হারের ব্যাপারে নিশ্চিত থাকে।

            দল

সিরিজ

হার

বাংলাদেশ

২৫

 ১৬   

আফগানিস্তান

১৫

  ৩

ইংল্যান্ড

৩৩

১২

অস্ট্রেলিয়া

৩৩

১৪

ওয়েস্ট ইন্ডিজ

৩৮

২০

ভারত

৩৮

১১

পাকিস্তান

৪৪

১৬

দক্ষিণ আফ্রিকা

৩২

১১

নিউজিল্যান্ড

৩৩

১৪

শ্রীলঙ্কা

৩৬

১৮

জিম্বাবুয়ে

২২

১৬