কলকাতায় কারাতে প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশি শিশুর স্বর্ণ জয়
শিশু বয়সেই আশরার আনানের ঝুলিতে এখন আন্তর্জাতিক সাফল্য। কলকাতায় অনুষ্ঠিত ‘নেতাজি সুভাস চন্দ্র বোস কাপ ২০২০’ কারাতে প্রতিযোগিতার দুটি ইভেন্টে স্বর্ণ ও রৌপ্যপদক জিতেছে আট বছরের আনান।
আশরার আনান চিটাগাং কিন্ডারগার্টেন স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। তার বাড়ি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সরফভাটা ইউনিয়নে। চট্টগ্রাম কারাতে অ্যাসোসিয়েশনের অধীনে চান্দগাঁও স্পোর্টস ক্লাবে কারাতে শিখছে সে।
চট্টগ্রাম কারাতে অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান কোচ কাউসার আহমেদ জানান, ২৩ জানুয়ারি কলকাতার হাওড়ার দাস নগর আলামোহন দাস ইনডোর স্টেডিয়ামে ‘নেতাজি সুভাস চন্দ্র বোস কাপ ২০২০’ কারাতে প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, ভুটান ও নেপালের প্রতিযোগীদের নিয়ে আন্তর্জাতিক কারাতে প্রতিযোগিতা হয়। পাঁচজন প্রতিযোগী, বিচারক ও কোচ মিলিয়ে বাংলাদেশ থেকে ১১ জনের একটি প্রতিনিধিদল ভারতে যায়। প্রতিযোগিতায় তিনিও ছিলেন।
কাউসার আহমেদ বলেন, কারাতে প্রতিযোগিতার দুটি ইভেন্টে অংশ নিয়ে শিশুদের মধ্যে আনান একটিতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে স্বর্ণপদক ও অন্যটিতে রৌপ্যপদক লাভ সবাইকে তাক লাগিয়ে দেয়। তাঁর ভাষ্য, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এই প্রথম কোনো বাংলাদেশি শিশু কারাতে প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক পেয়েছে। তিনি বলেন, ‘শিশুদের মধ্যে ভালো ফাইট করেছে আনান। তার সাহস রয়েছে । সে উপযুক্ত গাইড পেলে ভবিষ্যতে অবশ্যই ভালো করবে। এ জন্য মা-বাবারও সহযোগিতা দরকার।’
কাউসার জানান, আনান ছাড়া বাংলাদেশের চারজন প্রতিযোগী বড়দের কারাতে প্রতিযোগিতায় ৪টি স্বর্ণ ও ৪টি রৌপ্যপদক লাভ করেন।
ছোটবেলায় টিভিতে দেখে আনানের কারাতে শেখার আগ্রহ সৃষ্টি হয় বলে জানালেন আনানের বাবা ব্যবসায়ী নিজাম বাদশা। তিনি বলেন, ‘আত্মরক্ষার জন্য কারাতে জানা দরকার। কারাতে শেখার ব্যাপারে আনানের প্রচণ্ড আগ্রহ রয়েছে। মূলত সেই কারণে তাকে কারাতের ক্লাসে ভর্তি করা হয়।’
বাবা জানান, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী (মুজিব বর্ষ) উপলক্ষে চট্টগ্রাম কারাতে অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে সম্প্রতি একটি আন্তর্জাতিক কারাতে প্রতিযোগিতায় আনান ব্রোঞ্জ পদক পায়। গত বছর কারাতে অ্যাসোসিয়েশনের বিভাগীয় একটি কারাতে প্রতিযোগিতায় স্বর্ণ পদক পায়। কলকাতায় ছেলের পদক জয়ের ব্যাপারে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘বিদেশের মাটিতে দেশের পতাকা আনানের গায়ে জড়ানো দেখে গর্বে বুক ভরে গিয়েছিল। সে দেশের সম্মান রক্ষা করেছে। সবার সহযোগিতা পেলে দেশের জন্য সে আরও বিরল সম্মান ছিনিয়ে আনবে আশা করি।’