বিদেশিতে মজেছে বাংলাদেশ, বাকিদের কী অবস্থা?

সানডে চিজোবা , বেলফোর্টদের মাঝে এভাবেই জ্বলে উঠুক নাবীব নেওয়াজের মতো স্থানীয় স্ট্রাইকাররা। প্রথম আলো ফাইল ছবি
সানডে চিজোবা , বেলফোর্টদের মাঝে এভাবেই জ্বলে উঠুক নাবীব নেওয়াজের মতো স্থানীয় স্ট্রাইকাররা। প্রথম আলো ফাইল ছবি

বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে বুরুন্ডির বিপক্ষে গোল মিসের মহড়া দিয়ে হেরেছে বাংলাদেশ। গোল করতে না পারা এমনিতেই জাতীয় দলের পুরোনো রোগ। সম্প্রতি জ্বলুনিটা বাড়ছে যোগ হয়েছে ভালো খেলেও গোল না পাওয়ায়। এ থেকে উত্তরণের উপায় হিসেবে ঘরোয়া ফুটবলে বিদেশি খেলোয়াড়ের কোটা কমানোরও দাবি তুলেছেন খোদ জাতীয় দলের কোচ জেমি ডে। কিন্তু কোচের কথা বাফুফে তো শুনছেই না উল্টো লিগে নিবন্ধিত সব বিদেশি খেলোয়াড়কে একই ম্যাচে খেলানোর ব্যবস্থা করেছে।

গত মৌসুম থেকে আবারও প্রিমিয়ার লিগে এক সঙ্গে চারজন বিদেশি খেলার নিয়ম করা হয়েছে। এবার নতুন নিয়মে একজন বাড়িয়ে নিবন্ধনের সংখ্যা করা হয়েছে ৫ জন। তবে ম্যাচে খেলার কথা ছিল আগের মতো চারজনেরই। এ ক্ষেত্রে বিদেশির বদলে বিদেশি নামানোর কোনো সুযোগ ছিল না। নতুন নিয়ম অনুযায়ী এবার বিদেশির বদলে বিদেশি খেলোয়াড় মাঠে নামানো যাবে। স্বাভাবিকভাবে এমন সিদ্ধান্তে স্থানীয় ফুটবলারদের খেলার সুযোগ আগের চেয়ে কমে যাওয়ায় আরও ভুগবে জাতীয় দল। বিশেষ করে আক্রমণভাগ। এই নিয়ে চলছে সমালোচনা। এত বিদেশি প্রীতি দেশের ফুটবলের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে কি না, সেটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর সর্বোচ্চ পর্যায়ের লিগ বিবেচনায় নিলে বিদেশি প্রীতিতে মালদ্বীপ-নেপালের চেয়েও এগিয়ে আছে বাংলাদেশ।

বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপের যৌথ বাছাইয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপ। ৫ ম্যাচ খেলে তুলে নিয়েছে দুই জয়। তাদের দিভেহি লিগে (মালদ্বীপ প্রিমিয়ার) সর্বোচ্চ চারজন বিদেশি খেলার সুযোগ আছে। এদের মধ্যে বাধ্যতামূলক একজনকে হতে হবে এশিয়ান। অর্থাৎ এএফসি কাপের গাইডলাইনটাই অনুসরণ করছে তারা।

নেপাল প্রিমিয়ার ‘এ’ লিগে সর্বোচ্চ চারজন বিদেশি খেলার সুযোগ আছে। হিমালয়ের দেশটি এশিয়ান কোটা না রেখে দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলারদের জন্য দরজা খুলে দিয়েছে। অর্থাৎ চার বিদেশির মধ্যে একজনকে বাধ্যতামূলক হতে হবে দক্ষিণ এশিয়ার। এ সুযোগেই শেষ মৌসুমে নেপাল লিগ খেলে এসেছেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক নুরুল করিম। বর্তমান র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে থাকা ভুটানে চারজন নিবন্ধনের সুযোগ থাকলেও একসঙ্গে খেলতে পারবেন তিনজন। বিদেশির বদলে বিদেশি নামানোর সুযোগ থাকলেও নেই এশিয়ান কোটা।

এই অঞ্চলে বাংলাদেশের চেয়ে কেবল এগিয়ে আছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। ‘আই’ লিগে সর্বোচ্চ ৬ জন নিবন্ধনের বিপরীতে মাঠে থাকতে পারেন ৫ জন। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আইএসএলে ৮ জন নিবন্ধন করার সুযোগ থাকলেও খেলতে পারেন ৫ জন। নেই এশিয়ান কোটা। এশিয়ান কাপ খেলা ও সব সময় র‌্যাঙ্কিংয়ে ১০০-এর আশপাশে থাকা ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা অবশ্য এখন আর চলে না। ৩২টি এলিট একাডেমিতে খেলোয়াড় তৈরি করে দক্ষিণ এশিয়ার ‘অনুন্নত’ অঞ্চল থেকে বের হয়ে উন্নয়নশীল ফুটবল দেশ হিসেবে পরিচয় পেয়েছে তারা।

এএফসি কাপে বেঁধে দেওয়া এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশনের (এএফসি) নিয়ম কী? এএফসি কাপে এশিয়ানসহ সর্বোচ্চ চারজন বিদেশি খেলানোর সুযোগ আছে। সর্বোচ্চ নিবন্ধনের সংখ্যাও সেই চারজনই। গতবার এই নিয়মটাই ছিল বাংলাদেশে। কিন্তু হুট করেই ক্লাবগুলোর দাবির কথা তুলে নিয়মে পরিবর্তন আনা হয়েছে এবার।