গিবসনের চোখে ২ কারণে পার্থক্য

বাংলাদেশ দলের পেস বোলিং কোচ ওটিস গিবসন। ছবি: প্রথম আলো
বাংলাদেশ দলের পেস বোলিং কোচ ওটিস গিবসন। ছবি: প্রথম আলো
রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এলেন বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচ ওটিস গিবসন। ক্যাচ ফসকে যাওয়া ও পেসারদের নিয়ে কথা বলেছের এ ক্যারিবিয়ান


ইবাদত হোসেন, আবু জায়েদ, রুবেল হোসেন—রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে বাংলাদেশ দলের তিন পেসার। তিন শিষ্যকে প্রথমবারের মতো কাছ থেকে দেখছেন ওটিস গিবসন। বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচ হিসেবে পাকিস্তান সফরই যে গিবসনের প্রথম ‘অ্যাসাইনমেন্ট’! তা টেস্টের দ্বিতীয় দিনে পেসারদের কেমন দেখলেন এ ক্যারিবিয়ান? গিবসনের জবাব, ‘ছেলেরা চেষ্টা করেছে। তবে সুযোগগুলো হাতছাড়া করা ঠিক হয়নি।’

রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে আজ দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে ৮৭.৫ ওভারে ৩ উইকেটে ৩৪২ রান তুলেছে পাকিস্তান। ৫১.৫ ওভারই করেছেন বাংলাদেশের তিন পেসার মিলে। কিন্তু যা একটু সাফল্য পেয়েছেন আবু জায়েদই (২/৬৬)। সকালের সেশনে দ্রুত (দ্বিতীয় ওভারে) উইকেট এনে দিয়েছিলেন জায়েদ। লাঞ্চের আগে আরও একটি উইকেট এনে দেন তিনি। কিন্তু শুরুর এ সফলতা ধরে রাখতে পারেননি বোলাররা। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে গিবসন জানালেন, ‘কাল ভালো করতে হলে আজকের শিক্ষাটা কাজে লাগাতে হবে।’

গিবসন বলেছেন, ‘শুরুটা ভালো ছিল, দ্রুত উইকেট পড়েছে। কিন্তু চাপটা ধরে রাখা যায়নি। এখন আমরা পিছিয়ে আছি খেলায়। কিন্তু হাতে আছে আরও ৩দিন। আজ পাওয়া শিক্ষাটা কাল কাজে লাগাতে হবে। (বোলারদের) আরও ধারাবাহিক হতে হবে।’ দ্বিতীয় দিনে দুই দলের মধ্যে পার্থক্য গড়ে ওঠার বিষয়গুলো নিয়েও কথা বললেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক পেসার, ‘নিয়মিত সুযোগ সৃষ্টি করতে না পারলে যে কয়টি সুযোগ তৈরি হয় তা কাজে লাগাতে হয়। আমরা একটা আউটের আবেদন করিনি, একটি ক্যাচ পড়েছে—এগুলোই সম্ভবত পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। সব মিলিয়ে কঠিন একটা দিন ছিল।’

সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া শান মাসুদ ব্যক্তিগত ৮৬ রানে থাকতে ক্যাচ দিয়েছিলেন উইকেটরক্ষক লিটন দাসকে। কিন্তু ওটা যে ক্যাচ ছিল তা বোলার-ফিল্ডার, এমনকি উইকেটকিপার লিটনও টের পাননি। এ ছাড়া তাইজুলের বলে বাবর আজম ২ রানে ক্যাচ দিলেও সেটি আবার নিতে পারেন ইবাদত। এমন দুটি বড় ভুলের পর দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়াই স্বাভাবিক।

শান মাসুদের ক্যাচ বুঝতেই পারেননি উইকেটরক্ষক লিটন দাস। ছবি: পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড টুইটার পেজ
শান মাসুদের ক্যাচ বুঝতেই পারেননি উইকেটরক্ষক লিটন দাস। ছবি: পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড টুইটার পেজ

বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচ হিসেবে এটাই গিবসনের প্রথম টেস্ট। কাল পেসারদের প্রথম দেখার অভিজ্ঞতা থেকে তাঁর প্রথম কথা, ‘অনেক কাজ করতে হবে।’ ফ্ল্যাট উইকেট, কন্ডিশন, এসব বিচারে ঘরোয়া ক্রিকেটে স্পিনারদের আধিক্যই দেখা যায় বেশি। অনেক সময় এক পেসার দিয়েই ম্যাচ চালিয়ে নেয় দলগুলো। রাওয়ালপিন্ডিতে তিন পেসার খেলানোর তাই প্রশংসাই করলেন গিবসন, ‘এখানে তিন পেসার খেলানোয় সত্যিই ভালো হয়েছে। আমাদের তিনজন ভালো সিমার আছে। আপাতত সবাইকেই দেখছি।’

পিন্ডির উইকেট দেখে গিবসনের মনে হয়েছে, প্রথম দিনে প্রথম ইনিংসে এটি ন্যূনতম ৩০০ রান তোলার মতো। সে হিসেবে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ কম রান তুলেছে বলে মনে করেন তিনি। আজ ইবাদত বেশি রান দিলেও তুলনামূলক বেশি বাজে বল করেন রুবেল। তাঁর ব্যাপারে গিবসনের মতামত, ‘বলে পেস আছে এমন কাউকে চেয়েছি আমরা। রুবেলের গতি সম্ভবত বাকিদের চেয়ে বেশি। এ কারণেই সে দলে।’

বাংলাদেশের পেসারদের কম গতি নিয়েও কথা বলেছেন গিবসন, ‘হ্যাঁ, আমাদের পেসারদের গতি কম। বেশির ভাগ ১৩০ কিমির আশপাশে বল করে থাকে। এসব পেসার বাংলাদেশের ফ্ল্যাট পিচে খেলে বড় হয়েছে। তাদের প্রেরণা জোগাতে হবে। শরীরী গড়নেও আমরা (বাংলাদেশের পেসার) পিছিয়ে। ঘরের বাইরে গেলে তাই চ্যালেঞ্জ হয়ে যায়।’