গাড়িতে ধাক্কা দিয়ে ভক্তের সঙ্গে সেলফি জিদানের

সেই সেলফি। ছবি : সংগৃহীত
সেই সেলফি। ছবি : সংগৃহীত
আজব এক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছিলেন সেদিন রিয়াল মাদ্রিদের কোচ জিনেদিন জিদান।


বাংলাদেশের রাস্তায় কোনো গাড়ির চালক আরেকটা গাড়িকে ধাক্কা দিলে কী হয়, কল্পনা করুন তো?

সামনের গাড়ির চালক খেপে গিয়ে গাড়ি থামিয়ে দরজা খুলে বের হয়ে পেছনের গাড়ির চালকের সঙ্গে ঝগড়াঝাঁটি শুরু করে দেবেন হয়তো। হাতাহাতিও হয়ে যেতে পারে একচোট। অবস্থা বেশি খারাপ হয়ে গেলে ট্রাফিক পুলিশ এসে পরিস্থিতি ঠান্ডা করার চেষ্টা করবে, এই তো! স্পেনে গতকাল এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে। আশ্চর্যের বিষয় হলো সেখানে ‘ধাক্কা খাওয়া’ গাড়ির চালক রেগে যাওয়া তো দূর, উল্টো খুশি মনে সেলফি তুলেছেন ‘ধাক্কা দেওয়া’ গাড়ির চালকের সঙ্গে! ভাবা যায়?

ব্যাপারটা একটু খোলাসা করেই বলা যাক। স্পেনের ভালদেবেবাসের রাস্তায় সেদিন গাড়ি চালাচ্ছিলেন ইগনাসিও ফার্নান্দেস। হঠাৎ পেছন থেকে তাঁর গাড়িকে আরেকটা গাড়ি ধাক্কা দেয়। দেখা গেল, আর কেউ নয়, ‘ধাক্কা দেওয়া’ ড্রাইভারটি স্বয়ং রিয়াল মাদ্রিদ কোচ জিনেদিন জিদান! সকাল-সকাল রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড়দের অনুশীলন করাতে যাচ্ছিলেন তিনি। একটু তাড়াহুড়োতেই ছিলেন। আর তাতেই ঘটেছে বিপত্তি। ইগনাসিও খেপে গিয়ে দু–চার কথা শুনিয়ে দেবেন কী, জিদানকে দেখে সঙ্গে সঙ্গে রাগ গলে একদম পানি!

ইগনাসিও নিজেই বলেছেন সে ব্যাপারে, ‘ওনাকে আমি যখন দেখলাম, চিনতে পারলাম। এরপর বললাম, দেখুন, আমাদের অন্য কোনো একটা পরিস্থিতিতে পরিচয় হলেই বরং ভালো হতো। তবে এই পরিস্থিতিও একদম মন্দ নয়!’

রিয়াল মাদ্রিদের অনুশীলন মাঠের আশপাশে অনেক মিডিয়াকর্মীর উপস্থিতি থাকেন, তাঁরা ব্যাপারটা জানতে পারলে খামোখা পরিস্থিতি ঘোলাটে হতে পারে ভেবে ইগনাসিও নিজেই জিদানকে পরে ক্ষতিপূরণের আইনি কাগজপত্র পাঠিয়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন। কোনো ধরনের ঝক্কি-ঝামেলা ছাড়াই জিদানকে ‘ছেড়ে’ দিচ্ছেন, তাই ‘বিনিময়ে’ একটা সেলফির আবদার করেছিলেন ফরাসি কিংবদন্তির কাছে। জিদানও হাসিমুখে সেই আবদার মিটিয়েছেন! ইগনাসিও বলেছেন, ‘সেলফিটা আমাকে নিতেই হতো, না হলে কেউ বিশ্বাস করত না আমার গাড়িকে জিদান ধাক্কা দিয়েছিলেন। উনিও সুন্দরমতো ওনার টুপি খুলে সেলফির জন্য পোজ দিলেন।’

পরে জিদানের আইনজীবী ইগনাসিওকে ফোন করে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বেশি ‘ঝামেলা’ না করার জন্য। কেননা, জিদান সেদিন আসলেই একটু তাড়াহুড়োর মধ্যে ছিলেন, ইগনাসিও বেশিক্ষণ আটকে রাখলে রুটিনের বারোটা বেজে যেত।

সেদিনের পর জিদান নিজের তারকাখ্যাতিকে মনে মনে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন কি না, কে জানে!