স্ট্রাইকারের খোঁজে নাটক চালিয়ে যাচ্ছে বার্সেলোনা

ডেমবেলের চোট বিপদে ফেলে দিয়েছে বার্সেলোনাকে। ছবি: বার্সাসেন্টার টুইটার
ডেমবেলের চোট বিপদে ফেলে দিয়েছে বার্সেলোনাকে। ছবি: বার্সাসেন্টার টুইটার

দলে আছেন লিওনেল মেসি। তাঁর সঙ্গী ১২০ মিলিয়ন দিয়ে কিনে আনা আঁতোয়ান গ্রিজমান। স্প্যানিশ ফুটবলের যাবতীয় সর্বকনিষ্ঠের রেকর্ড দখলে নিয়ে নেওয়া বিস্ময় বালক আনসু ফাতিও আছেন বার্সেলোনার আক্রমণভাগে। তবু স্ট্রাইকার সংকটে ভুগছে দলটি। মূল স্ট্রাইকার লুইস সুয়ারেজ চোট পেয়ে বিশ্রামে গেছেন বাকি মৌসুমের প্রায় পুরোটার জন্য। অস্ত্রোপচার করে ছয় মাসের জন্য মাঠের বাইরে ১০৫ মিলিয়ন ইউরোতে দলে আসা উসমান ডেমবেলেও। সব মিলিয়ে বাকি মৌসুমে তিন টুর্নামেন্টের জন্য দলে ফরোয়ার্ডই আছেন মাত্র তিনজন—মেসি, গ্রিজমান, ফাতি। মহা বিপদেই পড়েছে বার্সেলোনা। কিন্তু সে বিপদ থেকে উদ্ধার পেতে গিয়ে হাসির খোরাক জোগাচ্ছে তারা।

নিজেদের কারণেই বিপদে পড়েছে বার্সেলোনা। সুয়ারেজ যে চোটে পড়েছেন সেটা জানুয়ারিতেই জানা গেছে। তখন শীতকালীন দলবদল চলছিল। ওটাই সঠিক সময় ছিল নিজেদের ঘাটতি পূরণ করে নেওয়ার। কিন্তু নতুন স্ট্রাইকার না কিনে উল্টো দলে থাকা কার্লেস পেরেসকে বিক্রি করে দিয়েছে রোমার কাছে। একে একে চারজন স্ট্রাইকারকে কেনার চেষ্টা করেছে বার্সেলোনা। কিন্তু কাউকেই দলে টানতে পারেনি।

প্রথমে ভ্যালেন্সিয়ার রদ্রিগো মরেনোকে টানার চেষ্টা করেছিল তারা। ভ্যালেন্সিয়ার সভাপতিকে শহরে ডেকে এনেও পরে দলবদলের অঙ্কে রাজি করাতে পারেনি বার্সেলোনা। এরপর ওসাসুনার চিমি আভিলাকেও আনার চেষ্টা হয়েছিল। এর মাঝে সেড্রিক বাকাম্বুকে বার্সেলোনা চীন থেকে প্লেনে উঠতেও বলে দিয়েছিল। পরে প্লেনে ওঠার আগ মুহূর্তে ওই স্ট্রাইকারকে বলা হয়েছে দলবদল হচ্ছে না। শেষ পর্যন্ত জানুয়ারির শেষে এসে ডেমবেলের ওপরই আস্থা রেখেছে বার্সেলোনা।

সেই ডেমবেলে জানুয়ারি শেষ হতেই পড়েছেন চোটে। বার্সেলোনাও পড়েছে খাদে। অস্ত্রোপচার করে ছয় মাসের জন্য মাঠ থেকে ছিটকে গেছেন ফ্রেঞ্চ ফরোয়ার্ড। এ অবস্থায় বার্সার স্বস্তি হয়ে আসছে স্প্যানিশ লিগের নিয়ম। কোনো খেলোয়াড় বড় চোটে পড়লে দলবদল মৌসুমের বাইরেও তাঁর বদলে স্প্যানিশ লিগে খেলা খেলোয়াড়দের মধ্য থেকে কাউকে কেনা সম্ভব। আর বার্সেলোনা সে ক্ষেত্রে বিকল্প স্ট্রাইকার হিসেবে রিয়াল সোসিয়েদাদের উইলিয়ান হোসেকে চেয়েছিল। কিন্তু সোসিয়েদাদ সরাসরি জানিয়ে দিয়েছে, ৭০ মিলিয়ন ইউরো খসাতে হবে। ব্যর্থ হয়ে ফিরতে হচ্ছে মেসির ক্লাবকে।

বার্সেলোনা তাই নতুন স্ট্রাইকার খুঁজছে। আপাতত চারজনকে পছন্দ হয়েছে তাদের। একজন রিয়াল বেতিসের লরেন মরোন। কিন্তু দলবদলের মৌসুম শেষ হয়ে যাওয়ায় এর মধ্যেই ১০ গোল করা এক স্ট্রাইকারকে ছাড়তে রাজি হবে না বেতিস। তাই রিলিজ ক্লজ দিয়েই তাঁকে আনতে হবে বার্সাকে। কিন্তু আর্থিক সংগতি নীতি এখানে বার্সার বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সেটি মানতে গেলে ৪০ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে হোসেকে আনা কঠিন বার্সার জন্য।

আলাভেসের হয়ে ৯ গোল করা লুকাস পেরেস সে তুলনায় কম খরচে আসতে পারেন। তাঁর ক্ষেত্রে মূল্যটা ১৫ মিলিয়ন ইউরো। যদিও পেরেসকে বার্সেলোনায় যেতে নিষেধ করছেন আলাভেসে তাঁর আক্রমণের সঙ্গী সাবেক রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড় হোসেলু।

সেদিক থেকে আনহেল রদ্রিগেজকে আনা সহজ বার্সার জন্য। কারণ ৩২ বছর বয়সী স্ট্রাইকারকে ধরে রাখার আশা ছেড়ে দিয়েছেন ক্লাবটির সভাপতি নিজেই। গেটাফে লিগে তিনে থাকার পেছনে রদ্রিগেজের ১৩ গোল ভূমিকা রেখেছে। প্রতি ১৩ মিনিটে এক গোল করা একজন স্ট্রাইকারের জন্য ১০ মিলিয়ন ইউরোও বেশ কম। তাঁর বয়সটাই একটু ঝামেলা বাধাচ্ছে। তবে বাজারে গুঞ্জন, তৃতীয় বিভাগের ক্লাব রিয়াল জারাগোজার লুইস সুয়ারেজকে দিয়েই সুয়ারেজের শূন্যস্থান পূরণ করতে চাইছে বার্সেলোনা। তবে ওই সুয়ারেজ ওয়াটফোর্ড থেকে ধারে জারাগোজায় আসায় এ দলবদলে অনেকগুলো পক্ষ জড়িত।