যাঁদের কেনার কারণে 'নিষিদ্ধ' সিটি

সিটির এখন ঘোর দুঃসময়। ছবি : এএফপি
সিটির এখন ঘোর দুঃসময়। ছবি : এএফপি
>

আর্থিক হিসেবে গরমিলের দায়ে অভিযুক্ত ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটি দুই মৌসুমের জন্য খেলতে পারবে না চ্যাম্পিয়নস লিগ। যে সময়ে আর্থিক গরমিল করার জন্য সিটি নিষিদ্ধ হয়েছে, সে সময় কাদের কিনেছিল তারা?

২০১২ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে ম্যানচেস্টার সিটি স্পনসরশিপ রাজস্ব থেকে যা আয় করেছে, সে আর্থিক হিসেবে গরমিল পেয়েছে উয়েফার আর্থিক সংগতি নীতি নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এ নিয়ে তদন্তেও ক্লাবটি ‘সহায়তা করেনি’ বলে জানিয়েছে তারা। জানা গিয়েছিল, সিটির আর্থিক হিসেবে বাংলাদেশি মূল্যমানে ১ হাজার ৩২১ কোটি টাকার এ গরমিল ধরে ফেলেছে উয়েফা। ফলে শাস্তি পেতে হয়েছে ম্যানচেস্টার সিটিকে।
ভালোবাসা দিবসে সবাই যখন সুখের কিছু মূহুর্ত কাটাচ্ছিল, সিটির খেলোয়াড়-কোচ ও কর্মকর্তারা মরছিলেন মাথা চুলকে। আগামী দুই মৌসুম চ্যাম্পিয়নস লিগে দেখা যাবে না সিটিকে। সঙ্গে ৩ কোটি ইউরো জরিমানাও গুনতে হবে। ২০১২ থেকে ২০১৬, এই সময়ের মধ্যে সিটি বেশি দামে অনেক খেলোয়াড় কিনেছে, যাঁদের না কিনলে হয়তো এই সমস্যার মুখোমুখি হতে হত না ক্লাবটির। দেখে নেওয়া যাক সেই খেলোয়াড়দের।

২০১২
জাভি গার্সিয়া: মিডফিল্ডার, স্পেন (১৭ মিলিয়ন পাউন্ড, বেনফিকা থেকে)
মাতিয়া নাসতাসিচ: সেন্টারব্যাক, সার্বিয়া (১৫ মিলিয়ন পাউন্ড, ফিওরেন্টিনা থেকে)
জ্যাক রডওয়েল: মিডফিল্ডার, ইংল্যান্ড (১২ মিলিয়ন পাউন্ড, এভারটন থেকে)

২০১৩
ফার্নান্দিনহো: মিডফিল্ডার, ব্রাজিল (৩০ মিলিয়ন পাউন্ড, শাখতার দোনেতস্ক থেকে)
হেসুস নাভাস: উইঙ্গার, স্পেন (১৫ মিলিয়ন পাউন্ড, সেভিয়া থেকে)
আলভারো নেগ্রেদো: স্ট্রাইকার, স্পেন (২০ মিলিয়ন পাউন্ড, সেভিয়া থেকে)
স্তেভান ইয়োভেতিচ: স্ট্রাইকার, মন্টেনেগ্রো (২২ মিলিয়ন পাউন্ড, ফিওরেন্তিনা থেকে)
মার্তিন ডেমিকেলিস: সেন্টারব্যাক, আর্জেন্টিনা (৪ মিলিয়ন পাউন্ড, অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ থেকে)

২০১৪
এলিয়াকুইম মাঙ্গালা: সেন্টারব্যাক, ফ্রান্স (৪২ মিলিয়ন পাউন্ড, এফসি পোর্তো থেকে)
ফার্নান্দো: মিডফিল্ডার, ব্রাজিল (১২ মিলিয়ন পাউন্ড, এফসি পোর্তো থেকে)
উইয়ি ক্যাবায়েরো: গোলরক্ষক, আর্জেন্টিনা (৪.৪ মিলিয়ন পাউন্ড, মালাগা থেকে)

২০১৫
উইলফ্রিয়েড বোনি: স্ট্রাইকার, আইভোরি কোস্ট (২৫ মিলিয়ন পাউন্ড, সোয়ানসি সিটি থেকে)
রাহিম স্টার্লিং: উইঙ্গার, ইংল্যান্ড (৫০ মিলিয়ন পাউন্ড, লিভারপুল থেকে)
কেভিন ডি ব্রুইনা: মিডফিল্ডার, বেলজিয়াম (৫৫ মিলিয়ন পাউন্ড, ভলফসবুর্গ থেকে)
নিকোলাস ওটামেন্ডি: সেন্টারব্যাক, আর্জেন্টিনা (২৮.৪ মিলিয়ন পাউন্ড, ভ্যালেন্সিয়া থেকে)
প্যাট্রিক রবার্টস: স্ট্রাইকার, ইংল্যান্ড (১২ মিলিয়ন পাউন্ড, ফুলহাম থেকে)
ফাবিয়ান ডেলফ: মিডফিল্ডার, ইংল্যান্ড (৮ মিলিয়ন পাউন্ড, অ্যাস্টন ভিলা থেকে)

২০১৬
ইলকায় গুন্দোয়ান: মিডফিল্ডার, জার্মানি (২০ মিলিয়ন পাউন্ড, বরুসিয়া ডর্টমুন্ড থেকে)
নলিতো: উইঙ্গার, স্পেন (১৩.৮ মিলিয়ন পাউন্ড, সেল্টা ভিগো থেকে)
লিরয় সানে: উইঙ্গার, জার্মানি (৩৭ মিলিয়ন পাউন্ড, শালকে ০৪ থেকে)
ওলেকসান্দার জিনচেঙ্কো: লেফটব্যাক, ইউক্রেন (১.৭ মিলিয়ন পাউন্ড, ইউএফএ থেকে)
মার্লোস মোরেনো: স্ট্রাইকার, কলম্বিয়া (৫ মিলিয়ন পাউন্ড, অ্যাটলেটিকো নাসিওনাল থেকে)
জন স্টোনস: সেন্টারব্যাক, ইংল্যান্ড (৪৭.৫ মিলিয়ন পাউন্ড, এভারটন থেকে)
ক্লদিও ব্রাভো: গোলরক্ষক, চিলি (১৫.৪ মিলিয়ন পাউন্ড, বার্সেলোনা থেকে)

অর্থাৎ যে সময়সীমার আর্থিক অসঙ্গতির কারণে সিটির আজ এই দুরবস্থা, সে সময়ে তারা খেলোয়াড় কিনেছিল চব্বিশ জন। এই চব্বিশ জনের মধ্যে পনেরো জনই সিটিতে নেই আজ, শতকরা হিসাবে যা ৬২.৫%। বাকী নয় জন হলেন ব্রাভো, স্টোনস, জিনচেঙ্কো, সানে, গুন্দোয়ান, ওটামেন্ডি, ডি ব্রুইনা, স্টার্লিং ও ফার্নান্দিনহো।

হিসেব করে দেখুন, খামোকা ওই পনেরো জনের পেছনে বাড়তি টাকা না খরচ করে একটু কম দামে অন্য খেলোয়াড় কিনলে হয়তো আজ সিটির এই দিন দেখতে হতো না!