সিটিকে ডোবানো লোকটি এখনো জেলে

রুই পিন্টো। সিটির গোপন তথ্য চুরি করেন। ছবি: লে সয়ার টুইটার পেজ
রুই পিন্টো। সিটির গোপন তথ্য চুরি করেন। ছবি: লে সয়ার টুইটার পেজ
>আর্থিক অনিয়ম করে ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় আগামী দুই বছর নিষিদ্ধ হয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি। ইংলিশ ক্লাবটির এই আর্থিক অনিয়ম কোনো গোয়েন্দা তদন্তে ধরা পড়েনি

আর্থিক অনিয়মের জন্য ইউরোপের ক্লাব প্রতিযোগিতায় নিষিদ্ধ হয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি। অর্থাৎ চ্যাম্পিয়নস লিগের আগামী দুই মৌসুমে অংশ নিতে পারবে না ইংলিশ চ্যাম্পিয়নরা। তোলপাড় ফেলে দেওয়া এ ঘটনায় অনেকেই মনে করছেন, সিটির হিসেবে আর্থিক অসংগতি খুঁজে বের করেছেন গোয়েন্দারা। কিংবা উয়েফার আর্থিক অসংগতি (ফিন্যান্সিয়াল ফেয়ার প্লে) নীতিতে যুক্ত গোয়েন্দারা গরমিল ধরেছেন। ভুল। সিটিকে ডুবিয়েছেন এক পর্তুগিজ হ্যাকার।

রুই পিন্টো। ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আলোচিত ‘ফুটবল লিকস’-এর হ্যাকার। পর্তুগালে ছদ্মনামে কাজ করতেন তিনি। ২০১৫ সালে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে সিটির প্রচুর মেইল হস্তগত করেন পিন্টো। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘সান’ জানিয়েছে, সিটির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের প্রায় ৭০ মিলিয়ন গোপন নথি চুরি করে জার্মান সংবাদমাধ্যম ‘ডার স্পিগেল’-এর কাছে তুলে দেন পিন্টো। দীর্ঘ তিন বছর ধরে এ কাজ করেছেন তিনি। ইউরোপের পেশাদার ফুটবলে আর্থিক অসংগতি নিয়ে ফুটবল লিকস-এ যে সংবাদমাধ্যমগুলো ধারাবাহিক বোমা ফাটিয়েছে ডার স্পিগেল তাদের একটি।

সিটির গোপন নথি চুরি করে সংবাদমাধ্যমের হাতে তুলে দেওয়ার সময় হাঙ্গেরিতে ছিলেন পিন্টো। ৩১ বছর বয়সী এ হ্যাকারকে পরে অনুসরণ করে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে সে সময় এই অনিয়মের তথ্য প্রকাশ করে ফুটবলবিশ্বে প্রশংসিত হয়েছিলেন পিন্টো। কিন্তু তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। এখন বিচারের অপেক্ষায় রয়েছেন পিন্টো। পরশু তাঁর আপিল খারিজ করে দেয় আদালত। হ্যাকিং, জালিয়াতিসহ মোট ৯০টি আলাদা অপরাধে তাঁর বিচার হবে। গত মার্চ মাস থেকে জেলে বন্দী রয়েছেন পিন্টো।

হাঙ্গেরি থেকে পিন্টোকে পর্তুগালে নেওয়া হয়েছে প্রায় এক বছর হলো। কাল উয়েফা সিটিকে নিষিদ্ধ করার পর আবার আলোচনায় উঠে আসেন পিন্টো। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘হ্যাশট্যাগ ফ্রি পিন্টো’ লিখে প্রচারণা চালাচ্ছেন ফুটবলপ্রেমীরা। বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের সমর্থকেরা এর মধ্যেই ব্যানার প্রদর্শন করে পিন্টোকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

সে সময় প্রায় ৩.৪ টেরাবাইট তথ্য পাচার করা এ হ্যাকার জানতেন নিজ কাজের জন্য বিপদ হতে পারে। ডার স্পিগেলকে পিন্টো সে সময় বলেছিলেন, ‘জানি যে কোনো কিছু ঘটতে পারে। কিছু ফাঁস করলে পর্তুগিজরা বিচার করে। তাই প্রস্তুত থাকতে হবে। আমি যা যা জানি পর্তুগিজ কর্তৃপক্ষ তা নিয়ে ভীত। এ কারণে মন শক্ত রাখা জরুরি।’