নীল হয়ে উঠছে গার্দিওলার সিটি

সিটি কোচ পেপ গার্দিওলা। চাপের মধ্যে রয়েছেন তিনি। ছবি: এএফপি
সিটি কোচ পেপ গার্দিওলা। চাপের মধ্যে রয়েছেন তিনি। ছবি: এএফপি

ম্যানচেস্টারের নাকি দুই রং—লাল ও নীল। ‘রেড ডেভিল’দের জার্সি আর প্রতীকের সুবাদে লাল হলেও আরেক পাশ এখন সত্যিকার অর্থেই নীল—ম্যানচেস্টার সিটি। দুঃখ-ব্যথা, জরা-বেদনার রং যে নীল!

চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়কে বেশ আগে থেকেই ‘মোক্ষধাম’ করেছে সিটি। এ জন্য কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ করে তারকা ফুটবলার এনেছেন কোচ পেপ গার্দিওলা। ভাগ্যের কী পরিহাস! অনিয়ন্ত্রিত, আইন বর্হিভূত এ খরচের মাশুল গুণেই চ্যাম্পিয়নস লিগের আগামী দুই মৌসুমে নিষিদ্ধ সিটি। আর্থিক অনিয়মের দায়ে ম্যানচেস্টারের ক্লাবটিকে নিষিদ্ধ করেছে উয়েফা। শুধু কী তাই, সিটি হারাতে পারে ২০১৪ ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ শিরোপাও!

উয়েফার রায়ের বিপক্ষে আপিল করবে সিটি। আপিলে ব্যর্থ হলে তাদের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা পুরো পাল্টাতে হবে। বেচে দিতে হতে পারে রহিম স্টার্লিং, কেভিন ডি ব্রুইনা, আয়মেরিক লাপোর্তের মতো তারকাদের। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সিটির দ্বিতীয় প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা খোয়ানোর সম্ভাবনাও আছে। এ নিয়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ কর্তৃপক্ষের আলাদা তদন্তে যদি দেখা যায়, ওই মৌসুমেও তারা উয়েফার আর্থিক সংগতি নীতি (এফএফপি) লংঘন করেছে তাহলে শাস্তি পেতে পারে। তখন শিরোপাটা যাবে সে মৌসুমে টেবিলের দ্বিতীয় দল লিভারপুলের কাছে।

সে মৌসুমে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ সিটি বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে। এদিকে কোচ গার্দিওলাও সিটির পাশে দাঁড়িয়েছেন। এ মুহূর্তে তাঁর ক্লাব ছাড়ার কোনো সম্ভাবনা নাকি নেই। এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম। আবার সেই সংবাদমাধ্যমেই খবর ভাসছে, চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলার সুযোগ না থাকায় শিগগিরই সিটি ছাড়তে পারেন গার্দিওলা।

প্রিমিয়ার লিগ কর্তৃপক্ষের তদন্তে এখনো কিছু বেরিয়ে আসেনি। তবে গুঞ্জন উঠেছে, সিটির চলতি মৌসুমের পয়েন্ট কাটা হতে পারে। তাতে অবশ্য লিগ শিরোপার গতিপথের কোনো হেরফের হবে না। অলৌকিক কিছু না ঘটলে ওটা লিভারপুলের ঘরেই যাচ্ছে। তবে লিগে তদন্তে সিটি অভিযুক্ত হলে নিয়ম অনুযায়ী নির্দিষ্ট একটি সময়ে থেকে পয়েন্ট কাটার সুযোগ রয়েছে কর্তৃপক্ষের। এ সময়টা হতে পারে ২০১২ থেকে ২০১৬। উয়েফার তদন্তে এ সময়েই সিটির আর্থিক অনিয়মের হেরফের ধরা পড়েছে। ২০১২ সালের প্রিমিয়ার লিগ শিরোপাও জিতেছে সিটি।

উয়েফার নিয়মের তুলনায় প্রিমিয়ার লিগের নিয়ম একটু শিথিল। আর্থিক বিষয়াদি নিয়ে ক্লাবের দাখিল করা কাগজ-পত্রের ওপরই তারা নির্ভর করে থাকে। সিটির দাবি, দাখিলকৃত সব নথি-পত্রের হিসেব সঠিক। এদিকে উয়েফা বলছে, স্পনসরশিপ থেকে অর্জিত রাজস্বের হিসেবে গড়মিল আছে। সে যাই হোক, সিটির সামনে যে এখন সমূহ বিপদ তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। সন্দেহ শুধু একটা বিষয়েই—আর্থিক অনিয়ম নিয়ে সিটি যে দাবি করছে তা সঠিক তো!