রোনালদো নেই, জুভেন্টাসের দিবালা তো আছেন!

গোলের পর দিবালার চেনা উদ্‌যাপন। ছবি: রয়টার্স
গোলের পর দিবালার চেনা উদ্‌যাপন। ছবি: রয়টার্স

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো গোল করছেন, কিন্তু দল হেরেছে—লিগে আগের তিন ম্যাচের দুটিতেই এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে জুভেন্টাসের। তুরিনের ক্লাবটির ইতিহাসে লিগে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে লিগে টানা দশ ম্যাচে গোল পাওয়া, নতুন বছরে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা রোনালদোকে আজ বিশ্রামেই রেখেছেন জুভেন্টাস কোচ মরিসিও সারি।

রোনালদো থাকলেই যেখানে দল জিততে খাবি খায়, সেখানে রোনালদো না থাকলে কী হবে—নিজেদের মাঠে আজ লিগে ব্রেসিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটির আগে জুভ সমর্থকেরা এমন শঙ্কায় ছিলেন হয়তো। তবে তেমন কিছুই হয়নি। রোনালদো ছিলেন না, কিন্তু পাওলো দিবালা তো আছেন! আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড দারুণ ফ্রি-কিকে গোল করেছেন, জুভেন্টাস ম্যাচটা জিতেছে ২-০ গোলে।

লিগের শিরোপাদৌড়ে গুরুত্বপূর্ণ জয়ই বটে। এ জয়ে ২৪ ম্যাচে ৫৭ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে ফিরেছে জুভেন্টাস। বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে দুইটায় আবার মুখোমুখি শিরোপাদৌড়ে জুভের প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী—লিগের পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় ইন্টার মিলান (২৩ ম্যাচে ৫৪ পয়েন্ট) ও তৃতীয় লাৎসিও (২৩ ম্যাচে ৫৩ পয়েন্ট)।

রোনালদো না থাকায় ৪-৩-৩ ছকের বাঁ দিকে কলম্বিয়ান উইঙ্গার হুয়ান কুয়াদ্রাদোকে খেলিয়েছেন জুভেন্টাস কোচ সারি। ডানে দিবালা, মাঝে গঞ্জালো হিগুয়াইন। প্রথম আধা ঘণ্টা মারিও বালোতেল্লির ব্রেসিয়া লড়াইয়ে সমতা ধরে রেখেছিল বটে, তবে এরপরই ম্যাচটা হেলে যায় জুভের দিকে। ১০ মিনিটে অবশ্য ব্রেসিয়াকে গোলকিপার বদলাতে হয়েছে, মূল একাদশে থাকা গোলকিপার এনরিক আলফনসো মাথায় আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়েন, তাঁর বদলে নামেন বদলি গোলকিপার লরেনজো আন্দ্রেনাচ্চি।

৩২ মিনিটে দিবালা দারুণ এক সুযোগ নষ্ট করেছেন, পোস্টের দশ গজ দূরে হিগুয়াইনের কাট ব্যাক পেলেও দিবালা ডান পায়ের শটটা পোস্টে রাখতে পারেননি। তবে ৩৭ মিনিটে একসঙ্গে দুটি ধাক্কা খেয়েছে ব্রেসিয়া। ৩৩ মিনিটে প্রথম হলুদ কার্ড দেখা ব্রেসিয়া ডিফেন্ডার ফ্লোরিয়ান আয়ে চার মিনিট পর দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। দ্বিতীয় হলুদ কার্ডটা আয়ে দেখেছেন বক্সের ঠিক বাইরে জুভ মিডফিল্ডার অ্যারন রামসেকে ফাউল করে। সেই ফ্রি-কিক থেকেই গোল দিবালার।

গোলটা দারুণই। বক্সের ডান দিকে ফ্রি-কিকটা পেয়েছিলেন দিবালা, বাঁকানো শটটা জালে জড়িয়েছেন পোস্টের বাঁ কোণ ঘেঁষে। রোনালদো ছিলেন না, এমন ম্যাচে দিবালার এমন জ্বলে ওঠা হয়তো জুভ সমর্থকদের কাছে পরিচিত ঘটনাই। মৌসুমে এ নিয়ে রোনালদোহীন ৬ ম্যাচে জুভেন্টাসের হয়ে ৬টি গোল দিবালার, করিয়েছেন আরও একটি। আজও জুভেন্টাসের যা কিছু ভালো, প্রায় সবকিছুতেই জড়িয়ে ছিলেন দিবালা।

দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য চার-পাঁচটি গোল পেতে পারত জুভেন্টাস। ৪৯ মিনিটে হিগুয়াইনের শট ফিরেছে গোললাইন থেকে, ৭৭ মিনিটে বেনতাঙ্কুরের শট লেগেছে পোস্টে, ৮১ মিনিটে দিবালার ফ্রি-কিকে হিগুয়াইনের হেড জালে জড়ালেও গোল বাতিল হয়েছে অফসাইডে, আর যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে দিবালার বাঁ পায়ের জোরালো শট ফিরেছে বারে লেগে!

এত গোল মিসের মাঝে ৭৫ মিনিটে জুভেন্টাসের দ্বিতীয় গোলটি হলো চোখধাঁধানো। বক্সের বাঁ কোণ দিয়ে ঢুকে কুয়াদ্রাদো বল দেন দুমিনিট আগেই মাঠে নামা মিডফিল্ডার ব্লেইজ মাতুইদিকে। ফরাসি মিডফিল্ডারের দুর্দান্ত ব্যাক-ফ্লিক আবার খুঁজে নেয় কুয়াদ্রাদোকে। কলম্বিয়ান উইঙ্গারের ঠান্ডা মাথার ফিনিশিং উচ্ছ্বাসে ভাসায় পুরো জুভেন্টাস স্টেডিয়ামকে।