মেয়েদের বিশ্বকাপ: জেনে নিন সালমাদের শক্তি-দুর্বলতা

এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিশ্বকাপে পা রেখেছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। ছবি: প্রথম আলো
এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিশ্বকাপে পা রেখেছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। ছবি: প্রথম আলো

মেয়েদের বিশ্বকাপে ১৫ সদস্যের দল নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় পা রেখেছে বাংলাদেশ। আজ প্রস্তুতি ম্যাচে হারিয়েছে পাকিস্তানকেও। সালমা খাতুনদের বিশ্বকাপের প্রস্তুতি তা হলে ভালোই হলো! জয় তো সব সময়ই বড় টনিক। এশিয়ার চ্যাম্পিয়নদের নিয়ে এবার বিশ্বকাপে ভালো কিছুর আশা করছেন অনেকেই। তবে ভুলে গেলে চলবে না, খেলার জায়গাটা বাংলাদেশ নারী দলের জন্য নতুন।

সম্পূর্ণ অপরিচিত কন্ডিশন। উইকেটের ভালো-মন্দ সহসাই বুঝে ওঠা কঠিন। সঙ্গে থাকছে কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার লড়াই। অস্ট্রেলিয়ায় আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সেখানে কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া উপমহাদেশের দলগুলোর জন্য সব সময়ই প্রথম চ্যালেঞ্জ। সালমাদের জন্য বিষয়টি আরও গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ নারী দল এর আগে অস্ট্রেলিয়ায় যে কখনোই খেলেনি। এবার আসা যাক দলের শক্তি-দুর্বলতা নিয়ে।


ব্যাটিং:
বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দলে ‘বিশেষজ্ঞ’ ব্যাটসম্যানই আছেন ৮ জন। সঙ্গে আরও দুজন অলরাউন্ডার। কিন্তু সমস্যা অন্য জায়গায়। অস্ট্রেলিয়ার মাঠগুলো তুলনামূলকভাবে এমনিতেই একটু বড় হয়ে থাকে। পেসারদের বলে গতি বাড়াতে সাহায্য করে উইকেট। ভালো টাইমিংয়ের পাশাপাশি ছয়-সাতে কিংবা ওপেনিং জুটিতে একজন মারকুটে ব্যাটসম্যান থাকা গুরুত্বপূর্ণ। এমন ব্যাটসম্যান যিনি ছক্কা মারতে পারেন সহজেই। সালমার দলে এমন ব্যাটসম্যানের অভাব প্রকট। অন্যান্য দলগুলোর সঙ্গে এখানে পিছিয়ে বাংলাদেশ।

পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের প্রস্তুতি ম্যাচেরই উদাহরণ দেওয়া যায়। পাওয়ার প্লে-র প্রথম ৬ ওভারে ৩ উইকেট হারালেও ওভারপ্রতি গড়ে ৬ করে রান তুলেছে বাংলাদেশ। শেষ বলেও ৩ উইকেট পড়েছে কিন্তু রান উঠেছে মাত্র ২৩। মারকুটে কোনো ব্যাটসম্যান না থাকাতেই শেষ দিকে দ্রুতগতিতে রান তুলতে পারে না দল। অবশ্য ইতিবাচক দিকও আছে। অস্ট্রেলিয়ায় খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে বাংলাদেশের দুজন ব্যাটসম্যানের—নিগার সুলতানা ও রুমানা আহমেদের। মেয়েদের বিগ ব্যাশে খেলেছেন দুজন।


বোলিং:
বাংলাদেশের বোলিং বিভাগে বৈচিত্র্য একেবারে কম নেই। স্কোয়াডের ১৫ সদস্যের মধ্যে লেগ স্পিনারই আছেন দুজন। আছেন অফ স্পিনার ও বাঁ হাতি স্পিনার। স্পিন বিভাগ টানবেন মূলত বাঁহাতি স্পিনার নাহিদা ও ডানহাতি লেগি রুমানা। ফাহিমা খাতুনও লেগ স্পিন করে থাকেন। খাদিজাতুল কুবরা ও অধিনায়ক সালমা অফ স্পিনার। বাংলাদেশের নারী দলটি বোলিংয়ে মূলত স্পিন নির্ভর। তবে আছেন তিন পেসারও—জাহানারা আলম, রিতু মনি ও সোবহানা মুশতারি।

অস্ট্রেলিয়ান কন্ডিশন মূলত পেসার বান্ধব। তাই তিন পেসারকে ভূমিকা রাখতে হবে বেশি। আজ প্রস্তুতি ম্যাচেও পেসারদের ভূমিকা ছিল সবচেয়ে বেশি। শেষ ওভারে ১০ রান দরকার ছিল পাকিস্তানের। জাহানারা প্রথম ৪ বলের মধ্যে ২ রান দিয়ে নিয়েছেন ২টি উইকেট। অলআউট হয় পাকিস্তান। তাদের ১০ উইকেটের মধ্যে পেসাররা নিয়ে অর্ধেক। অস্ট্রেলিয়ার গতিময় উইকেট পেসারদের সহায়ক হলেও স্পিনারদের কঠিন পরীক্ষাই নেবে। এমন কন্ডিশনে সাধারণত রান আটকানোই হয়ে থাকে স্পিনারদের মূল লক্ষ্য।

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ‘এ’ গ্রুপে চার প্রতিপক্ষ—অস্ট্রেলিয়া, ভারত, নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কা। চারটি দলই বাংলাদেশের চেয়ে শক্তিশালী। অবশ্য বড় টুর্নামেন্টে ভারতকে হারানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে সালমাদের। গত এশিয়া কাপে ভারতকে ফাইনালসহ দুবার হারিয়েছেন তারা। শক্তিতে সীমাবদ্ধতা থাকলেও অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে জয়ের অদম্য ইচ্ছা ধরে রাখলে একেবারে খারাপ করার কথা না দলের।