তিনি কথা কম বলেন, উইকেট বেশি নেন

দুর্দান্ত বোলিং করেছেন নাঈম । ছবি: প্রথম আলো
দুর্দান্ত বোলিং করেছেন নাঈম । ছবি: প্রথম আলো
এক স্পেলেই করলেন ৩২ ওভার বোলিং। মিরপুর টেস্টের প্রথম দিনে ৪ উইকেট পাওয়া নাঈম কথা বলেন খুবই কম। কথায় স্বল্পভাষী বোলিং ঠিক অন্য রকম ১৯ বছর বয়সী অফ স্পিনার।


মিরপুর টেস্টের প্রথম দিনের উইকেট খুব বেশি স্পিন-সহায়ক নয়। তবু দুর্দান্ত বোলিং করেছেন নাঈম হাসান। কোন পরিকল্পনায় তিনি বোলিং শুরু করেছিলেন আজ?

‘শুধু জায়গায় বোলিং করে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল’—লম্বা প্রশ্নে সংক্ষিপ্ত উত্তর দিয়ে নাঈম নিজেই হেসে দিলেন। এর চেয়ে বেশি তাঁর বলার নেই! দলের প্রতিনিধি হয়ে আজ সংবাদ সম্মেলনে আসা নাঈমের বেশির ভাগ উত্তর এমনই সংক্ষিপ্ত। জটিল-বড় প্রশ্নে ছোট ছোট উত্তর পেয়ে সাংবাদিকেরা ভালোই বিপাকে—লেখার ‘অ্যাঙ্গেল’ তো খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না!

সংবাদ সম্মেলন শেষে এক সাংবাদিক নাঈমকে অনুরোধ করেই বসলেন, ‘আপনি যেভাবে ৩২ ওভারের লম্বা স্পেল বোলিং করেছেন, উত্তরগুলোও যদি লম্বা করতেন…।’ ১৯ বছর বয়সী অফ স্পিনার মুচকি হাসেন। তাঁর হয়ে বাংলাদেশ দলের মিডিয়া ম্যানেজার অবশ্য বলে দেন, ‘আসল জায়গায় তার বল কথা বললেই হলো।’

মৃদুভাষী নাঈম মুখে নয়, আসলে কথা বলান বল দিয়েই। কদিন আগে বিসিএলের দুই ম্যাচে পেয়েছেন ২১ উইকেট। দুর্দান্ত এ পারফরম্যান্স যেন নাঈমের উইকেট–ক্ষুধা বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ। যদিও বলা হয় বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের সঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অনেক পার্থক্য। তবে নাঈম বিশ্বাস করেন, যেকোনো পর্যায়ে ভালো খেললে আত্মবিশ্বাস বাড়ে, ‘ওই পারফরম্যান্স অনেক সহায়তা করবেই। অনেক বোলিং করেছি, অনেক উইকেট পেয়েছি। আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। অনুশীলনের চেয়ে ম্যাচ খেললে বেশি আত্মবিশ্বাসী হওয়া যায়।’

মিরপুর টেস্টের প্রথম দিনে জিম্বাবুয়ের ৬ উইকেটের ৪টিই পেয়েছেন নাঈম। এই ৪ উইকেটের মধ্যে ক্রেগ আরভিনের উইকেটটি বেশি আনন্দ দেওয়ার কথা বাংলাদেশ দলের তরুণ অফ স্পিনারের। ১০৭ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলা জিম্বাবুইয়ান অধিনায়ককে শেষ বিকেলে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে স্বস্তি এনে দিয়েছেন নাঈম। আরভিনকে আউট করেও তাঁর লক্ষ্য এখন দ্রুত জিম্বাবুয়েকে গুটিয়ে দেওয়া, ‘দিনের শেষ দিকে উইকেট পাওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ওর উইকেট পাওয়ার পর আর আছে ৪ উইকেট। বেশির ভাগই লেজের দিকের ব্যাটসম্যান। এখন ভালো জায়গায় বোলিং করে চেষ্টা থাকবে দ্রুত ওদের অলআউট করে দেওয়া।’

আজ নাঈম দারুণ বোলিং করলেও তাইজুল ছিলেন উইকেটশূন্য। অন্য প্রান্তে বাঁহাতি স্পিনার উইকেটশূন্য থাকাই নাকি উইকেট পেতে বেশি সহায়তা করেছে বলে জানালেন নাঈম, ‘পুরো দিনে তাইজুল ভাই উইকেট পাননি বলছেন। তিনি অন্য প্রান্তে ভালো বোলিং করেছেন বলেই আমি উইকেট পেয়েছি। আজ আমি পেয়েছি। কাল আমি যদি এক প্রান্তে ডট দিতে থাকি, আরেক প্রান্তে হয়তো তাইজুল ভাই পাবেন। এভাবেই গড়ে ওঠে বোলিংয়ের জুটি।’