বাতিস্তুতাদের রেকর্ডে নাম লেখালেন রোনালদো

যাঁর পাস থেকে গোল করেছেন, উদ্‌যাপনে সেই কুয়াদ্রাদোকে জড়িয়ে ধরছেন রোনালদো। ছবি: রয়টার্স।
যাঁর পাস থেকে গোল করেছেন, উদ্‌যাপনে সেই কুয়াদ্রাদোকে জড়িয়ে ধরছেন রোনালদো। ছবি: রয়টার্স।
>১৯৯৪ সালে ফিওরেন্তিনার হয়ে রেকর্ডটা গড়েছিলেন গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতা। গত মৌসুমে সাম্পদোরিয়ার জার্সিতে সেটি ছুঁয়েছিলেন ফাবিও কোয়ালিয়ারেল্লা। দুজনের পাশে কাল নাম লিখিয়ে নিয়েছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো মাঠে নামবেন। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো গোল করবেন। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো নতুন কোনো রেকর্ড গড়বেন। ইতালিয়ান লিগে গত কয়েক দিনে এ-ই তো হয়ে চলেছে! আজও তার আর ব্যতিক্রম হলো না।

এসপিএএলের মাঠে কাল নেমেছে রোনালদোর জুভেন্টাস, ম্যাচটা জিতেছে ২-১ গোলে। তাতে প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার ছয় মিনিট আগে গোল পেয়েছেন রোনালদো। এই গোলে নতুন কোনো রেকর্ড হয়নি, তবে পুরোনো রেকর্ডে গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতা আর ফাবিও কোয়ালিয়ারেল্লার পাশে বসেছেন রোনালদো। কী রেকর্ড? ইতালিয়ান লিগে টানা সবচেয়ে বেশি ম্যাচে গোলের রেকর্ড! এ নিয়ে লিগে টানা ১১ ম্যাচে গোল করেছেন রোনালদো। ১৯৯৪ সালে ফিওরেন্তিনার হয়ে রেকর্ডটা গড়েছিলেন কিংবদন্তি আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার বাতিস্তুতা। গত মৌসুমে সাম্পদোরিয়ার জার্সিতে সেটি ছুঁয়েছিলেন কোয়ালিয়ারেল্লা। লিগে পরের ম্যাচে গোল পেলেই দুজনকে ছাড়িয়ে অনন্য উচ্চতায় চলে যাবেন রোনালদো।

কাল গোলটা হয়েছে রোনালদোর চেনা ঢংয়েই। দৌড়ের গতিতে, নড়াচড়ায় প্রতিপক্ষকে ঘোল খাইয়ে বক্সে ঠিক জায়গামতো উপস্থিত হওয়া যদি শিল্প হয়, রোনালদো তো তাহলে সেখানে ‘পাবলো পিকাসো’ই। সেটিই দেখিয়েছেন আরেকবার। ডান পাশ থেকে জুভ সতীর্থ হুয়ান কুয়াদ্রাদোর ক্রস এল, প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের এড়িয়ে জায়গামতো হাজির হওয়া রোনালদো তাতে পা ছুঁইয়ে করলেন গোল। ছুঁলেন রেকর্ড।

রেকর্ডটা অবশ্য ম্যাচের পাঁচ মিনিটেই ছুঁয়েছেন বলে ভেবেছিলেন রোনালদো। কিন্তু সে যাত্রায় ৩৫ বছর বয়সী পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডের গোল বাতিল হয় অফসাইডে। শেষ পর্যন্ত ৩৯ মিনিটে রোনালদোর ওই গোলের সৌজন্যে ১-০ ব্যবধানেই বিরতিতে যায় জুভেন্টাস। অবশ্য রোনালদোর গোলের মিনিটখানেক আগে দারুণ আঁকাবাঁকা দৌড়ের পর ভারসাম্যহীন অবস্থায় পাওলো দিবালার শট পোস্টে লেগে ফিরে না এলে বিরতিতেই ব্যবধানটা বাড়তে পারত।

দ্বিতীয়ার্ধের তৃতীয় মিনিটেই রোনালদোর শট ফিরিয়ে দেন এসপিএএল গোলকিপার বেরিশা। কিন্তু ৬০ মিনিটে জুভেন্টাসকে আরও এগিয়ে দেন মিডফিল্ডার অ্যারন রামসে। আরেক আঁকাবাঁকা দৌড়ের পর দিবালা বক্সে পাস দেন রামসেকে, তাঁর চিপ এগিয়ে আসা গোলকিপারকে এড়িয়ে জালে। ৬৯ মিনিটে ভিএআরে পাওয়া পেনাল্টি থেকে ব্যবধান কমায় এসপিএএল। ৮৫ মিনিটে রোনালদোর আরেকটি বাঁকানো শট ফেরে বারে লেগে।

তবে সব ছাপিয়ে রাতটা তো রোনালদোর রেকর্ড ছোঁয়ার রাতই হয়ে থাকবে। একটা হিসেবে অবশ্য বাতিস্তুতা-কোয়ালিয়ারেল্লাদের চেয়ে এগিয়ে আছেন রোনালদো। টানা ১১ ম্যাচে গোলের সময়টাতে কার মোট গোল কত, সে হিসেবে। রোনালদো এই ১১ ম্যাচে গোল করেছেন ১৬টি, কোয়ালিয়ারেল্লা করেছিলেন ১৪টি, বাতিস্তুতা ১৩টি।

এই জয়ে ২৫ ম্যাচে ৬০ পয়েন্ট নিয়ে লিগের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে জুভেন্টাস। ২৪ ম্যাচে ৫৬ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে থাকা লাৎসিও আজ খেলবে জেনোয়ার মাঠে। আর ২৪ ম্যাচে ৫৪ পয়েন্ট নিয়ে তিনে থাকা ইন্টার মিলান আজ রাতে খেলবে সাম্পদোরিয়ার বিপক্ষে।