প্রথম ৬ ওভারেই হারল বাংলাদেশ

বাংলাদেশের হয়ে ৩০ রান করেছেন মুর্শিদা। ছবি: আইসিসি টুইটার
বাংলাদেশের হয়ে ৩০ রান করেছেন মুর্শিদা। ছবি: আইসিসি টুইটার
প্রথম ৬ ওভারে ভারত করেছে ৫৪ রান, বাংলাদেশ করতে পেরেছে মাত্র ৩৩। ব্যবধান ২১ রানের। ভারতের কাছে ম্যাচটা বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত হেরেছে ১৮ রানে।


জিততে দরকার ছিল ১৪৩ রান। বাংলাদেশের মেয়েদের ইনিংস শুরুর আগেই তাই হয়তো হারের শঙ্কা জেঁকে বসেছিল অনেকটাই। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এ পর্যন্ত যে ৭২টি ম্যাচ খেলেছেন বাংলাদেশের মেয়েরা, তাতে ১৪৩ রান বা তার বেশি বাংলাদেশ করতে পেরেছে মাত্র তিনবার! এর মধ্যে একবার ২৫৫ রান করেছিলেন বটে, তবে সেটি কোনোমতে ব্যাট-বল ধরতে শেখা মালদ্বীপের মেয়েদের দলের বিপক্ষে, গত ডিসেম্বরে সে ম্যাচে মালদ্বীপ জবাব দিতে নেমে অলআউট হয়েছিল মাত্র ৬ রানে।

রেকর্ড যে শঙ্কা দেখাচ্ছিল, সেটিই হয়েছে। পার্থে আজ ভারতের কাছে ১৮ রানে হেরেই শুরু হয়েছে বাংলাদেশের মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অভিযান। ২০ ওভার পুরোটাই খেলেছে বটে বাংলাদেশ, তবে ৮ উইকেট হারিয়ে করতে পেরেছে ১২৪ রান।

পার্থক্যটা কোথায়? প্রথম ৬ ওভারের ব্যাটিংয়ে। পাওয়ার প্লে-র ওই ছয় ওভারে ভারতের মেয়েরা যেখানে তুলেছেন ৫৫ রান, বাংলাদেশ সেই ছয় ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে করতে পেরেছে মাত্র ৩৩ রান। ব্যবধান? ২১ রানের। ওই পার্থক্য ঘোচানো পরে আর সম্ভব হয়নি।

ভারতের ওপেনিং ব্যাটসম্যান শেফালি ভার্মা ১৭ বলে ২ চার ও ৪ ছক্কায় করেছেন ৩৯ রান। ষষ্ঠ ওভারের তৃতীয় বলে তিনি আউট হওয়ার সময়ই ভারতের রান ছিল ৫৩। বাংলাদেশের কোনো শেফালি নেই। ব্যাট হাতে প্রতিপক্ষের মনে ভয় ধরানো কেউ নেই দলে। ফলে বুদ্ধিদীপ্ত ব্যাটিংটাই ভরসা ছিল। দ্বিতীয় ওভারেই শামিমা বিদায় নিয়েছেন। মুর্শিদা ও সানজিদা ঠিক পাওয়ার প্লের মেজাজে দলকে টানতে পারেননি। ফলে প্রথম ছয় ওভারে এসেছে মোটে ৩৩ রান। মুর্শিদাই একটু আক্রমণাত্মক হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু পাওয়ার প্লে শেষে সেই মুর্শিদাও বিদায় নিলেন। ১০ ওভার শেষে ঠিক ৬০ রান তুলতে পেরেছিল বাংলাদেশ।

ইনিংসের বাকি অর্ধেকটায় ৮৩ রান তোলার মতো ব্যাটিং করার মতো ব্যাটার বাংলাদেশ দলে আছেন। কিন্তু প্রতিপক্ষ দলেও যে একজন পুনম যাদব আছেন। অস্ট্রেলিয়াকে একাই হারিয়ে দেওয়া এই লেগ স্পিনার সে ম্যাচের মতো ছন্দে ছিলেন না। কিন্তু ছন্দে না থাকা পুনমের গুগলি আর লেগ স্পিনই যে বাংলাদেশকে কক্ষপথ থেকে ছিটকে দিতে যথেষ্ট ছিল। শুধু নিগার সুলতানা স্রোতের বিপক্ষে লড়ার চেষ্টা করছিলেন। ১৭তম ওভারে ৫ চারে গড়া নিগারের ৩৫ ইনিংসটিও এক সুইপে থেমে গেল।

পাওয়ার প্লেতে দুই দলের তোলা রানের পার্থক্য ২১। ম্যাচের শুরুতেই শেফালি গড়ে দিয়েছেন বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের ভাগ্য! ব্যবধান গড়ে দিয়েছে বাউন্ডারি থেকে আসা রানও। ভারত চার-ছক্কা মেরে ৭৪ রান করেছে, বাংলাদেশ সেখানে করেছে ৫৬ রান। ১৪টি চার মেরেছেন বাংলাদেশের মেয়েরা। পার্থক্য? ১৮ রানের। বাংলাদেশ ম্যাচটা হেরেছে ১৮ রানেই!