এবারও লিগ জেতা হচ্ছে না লিভারপুলের?

লিভারপুল কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ। ছবি: এএফপি
লিভারপুল কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ। ছবি: এএফপি
>করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ নির্ধারিত সময়ের আগেই বন্ধ ঘোষণা করলে কপাল পুড়তে পারে লিভারপুলের

শিরোনাম দেখে প্রশ্ন জাগাই স্বাভাবিক। একটা দল ২২ পয়েন্ট ব্যবধানে এগিয়ে টেবিলে দ্বিতীয় দলের সঙ্গে। হাতে যে ১১ ম্যাচ আছে, তার মধ্যে কত আগে শিরোপাজয় নিশ্চিত করবে সে হিসেব চলছে এখন। অথচ এ কী শিরোনাম, জেতা হচ্ছে না মানে!

মানেটা হলো, করোনাভাইরাস। বিশ্বব্যাপী মহামারি হিসেবে ছড়িয়ে পড়া করোনার বিস্তার ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগেও আছড়ে পড়লে শঙ্কাটা সত্যি হতেই পারে। করোনাভাইরাসের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগে মৌসুম শেষ হয়ে গেলে লিভারপুলের লিগ জয়ের ‘কোনো নিশ্চয়তা নেই’ জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ।

খবরটি শুনে লিভারপুল সমর্থকদের মন খারাপ হতেই পারে। লিভারপুল লিগ জেতে না প্রায় তিন দশক হয়ে গেল। গত কয়েক মৌসুমের মধ্যে জিততে জিততেও শিরোপা অন্যের হাতে তুলে দিয়েছে তারা। এবার যে শিরোপাখরা কাটছে তা নিশ্চিত। অথচ এই ‘নিশ্চিত’ বিষয়ও এখন করোনাভাইরানের প্রকোপে অনিশ্চিত। এ যেন ভাগ্যের নির্মম রসিকতার চোখ রাঙানি!

অবশ্য এই একই খবর আবার ওয়েস্ট হাম ইউনাইটেড, ওয়াটফোর্ড ও নরউইচ সিটির জন্য আশা জোগাতে পারে! এখন পয়েন্ট টেবিলে তলানিতে রয়েছে এ তিনটি দল। ধরুন, করোনাভাইরাসের জন্য লিগের ইতি টানা হলো নির্ধারিত সময়ের আগেই। তখনো এ তিনটি দল টেবিলের তলানিতে থাকলেও দ্বিতীয় বিভাগে নেমে না যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। মানে, করোনাভাইরাসের কারণে মৌসুম শেষ হওয়ার আগে লিগ বন্ধ হয়ে গেলে টেবিলের শেষ তিন দলের প্রিমিয়ার লিগে টিকে থাকার সম্ভাবনাও থাকবে।

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ৩৮টি করে ম্যাচ খেলে প্রতিটি দল। টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, উত্থিত পরিস্থিতিতে এ নিয়ে ‘নির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা’ এখনো তৈরি করতে পারেনি লিগ কর্তৃপক্ষ। সব দল ৩৮টি করে ম্যাচ খেলার আগেই লিগ বন্ধ হয়ে গেলে শেষ তিনটি দলের নেমে যাওয়াও মুলতবি রাখা হতে পারে ঠিক যেভাবে লিভারপুল শীর্ষে থাকলেও শিরোপা জিততে পারবে না।২৭ ম্যাচে ৭৯ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে লিভারপুল। তাদের সমান ম্যাচে ৫৭ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে ম্যানচেস্টার সিটি। আর মাত্র চার ম্যাচ জিতলেই শিরোপা ঘরে তোলা নিশ্চিত করবে লিভারপুল।

বিশ্বের ৫০টি দেশে ৮০ হাজারের বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। এর মধ্যে প্রায় ৩ হাজার মারাও গেছেন বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সুইস সরকার এর মধ্যেই ব্যবস্থা নিয়েছে। ন্যূনতম হাজারখানেক মানুষের সমাগম ঘটবে এমন যে কোনো অনুষ্ঠান (খেলাধুলা হলেও) বাতিল করেছে তারা। এ সপ্তাহে বাতিল করা হয়েছে সব ফুটবল ম্যাচ। এখন ব্রিটিশ সরকারের নির্দেশ মেনে প্রিমিয়ার লিগ কর্তৃপক্ষও যদি আগেভাগে খেলা বন্ধ করে তাহলে শিরোপার ‘তীরে গিয়ে তরী ডুববে’ লিভারপুলের। মেইল অনলাইন জানিয়েছে, আগামী ‘দুই মাসের মধ্যে সব খেলাধুলা বন্ধ ঘোষণা’ করতে পারে ব্রিটিশ সরকার। সেখানে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৯।

ভীষণভাবে সংক্রামক এ ভাইরাসের বিস্তার রোধে খেলোয়াড়দের হাত মেলানো নিষিদ্ধ করেছে নিউক্যাসল ইউনাইটেড। অনুশীলন মাঠে সকালে খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফদের হাত মেলানো ‘ম্যাগপাই রবিন’দের বহুদিনের রীতি। তবে প্রিমিয়ার লিগ কর্তৃপক্ষ ম্যাচের আগে খেলোয়াড়দের হাত মেলানো বন্ধের ব্যাপারে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি।