তামিম সমালোচনার জবাব দিলেন ব্যাট দিয়েই

বুনো উদ্‌যাপনে গেলেন না। ১৫৮ রান করেও তামিমের জন্য আজকের দিনটি যেন আর দশটা দিনের মতোই
অন্যতম সেরা ইনিংস খেলেই সব সমালোচনার জবাব তামিমের। ছবি: শামসুল হক
অন্যতম সেরা ইনিংস খেলেই সব সমালোচনার জবাব তামিমের। ছবি: শামসুল হক

শন উইলিয়ামসের বলটি কাভারে ঠেলে দিয়েই দৌড়। দুবার প্রান্ত বদল করতেই হয়ে গেল তামিম ইকবালের সেঞ্চুরি। প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে হলেও পরিস্থিতির বিচারে ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা বলা যায়। কিন্তু তামিমের উদযাপন দেখে এত কিছু বোঝার উপায় নেই। দৌড়ে দুবার প্রান্ত বদল করে আকাশের পানে তাকালেন একবার। এরপর ছোট্ট করে ব্যাট উঁচিয়ে ধরলেন। কল্পনাতীত চাপের মধ্যে থেকে সেঞ্চুরি করার পর তামিমের উদযাপন ছিল এটুকুই। তবে কি এমন ইনিংস খেলেও তৃপ্ত নন তিনি!

তামিমকে চাপের পাহাড় এবারই প্রথম পাড়ি দিতে হয়নি। তামিমের ক্যারিয়ারের ভুলে যাওয়ার মতো সময় ছিল ২০১৪-১৫ মৌসুম। টানা ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দী তামিম ও তাঁর পরিবারকে কড়া সমালোচনা, ট্রল সহ্য করতে হয়েছিল। ২০১৫ বিশ্বকাপের পর ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেই বাজে সময় পেছনে ফেলেছিলেন। তখন তামিমের হয়ে কথা বলেছিল তাঁর ব্যাট। সেই সেঞ্চুরির পর মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের দর্শকদের উদ্দেশ করে বুনো উদযাপন করেছিলেন তামিম। হাতের ইশারায় সব সমালোচকদের বলছিলেন থেমে যেতে।

এবারও অনেকটা একই রকম পরিস্থিতি জয় করতে হয়েছে তামিমকে। ২০১৯ বিশ্বকাপটা তামিমের ভালো কাটেনি। বিশ্বকাপের পর শ্রীলঙ্কা সিরিজেও রান পাননি। ঘরোয়া ক্রিকেটে রান পেলেও ছিলেন না চেনা ছন্দে। পাকিস্তান সফরে টি-টোয়েন্টি দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছিলেন তামিম। কিন্তু পুরোনো তামিম হয়ে ফিরতে সময় লাগছিল। সমালোচনাও কম হচ্ছিল না এই সময়টায়। আজ সেঞ্চুরি করে আরেকবার সমালোচনার জবাব দিলেন তামিম। এবারও তামিমের হয়ে কথা বলল তাঁর ব্যাট। ব্যতিক্রম ছিল তাঁর সেঞ্চুরি উদযাপন। আজ যেন অফিসের অন্য আর দশ দিনের মতোই আরেকটি দিন কাটিয়ে এলেন তামিম।

কিন্তু আজকের ইনিংসটি আর দশটা ইনিংসের মতো ছিল না। বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোরের নিজের গড়া রেকর্ড নিজেই আবার ভেঙেছেন। হারারেতে এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই করা ১৫৪ রানের ইনিংস ছাড়িয়ে গেছেন, করেছেন স্মরণীয় ১৫৮ রান। ইনিংসজুড়ে একবারও তামিমকে আবেগ প্রকাশ করতে দেখা যায়নি। ইনিংসের ফাঁকে টেলিভিশনে কথা বলার সময় চোখেমুখে তৃপ্তির লেশমাত্রও ছিল না।

তামিমের ইনিংসটি মাঠ থেকে দেখেছেন সাবেক অধিনায়ক ও প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন। তাঁর দৃষ্টিতে তামিমের ইনিংসটি তাঁর দেখা অন্যতম সেরা ইনিংস, ‘দেশের অন্যতম সেরা ইনিংস। মনে রাখার মতো ইনিংস ছিল। সিলেটে যারা এসেছে, ইনিংসটি দেখেছে, তারা নিশ্চয়ই অনেক দিন মনে রাখবে।’