ম্যাচটা প্রায় জিতেই গিয়েছিল জিম্বাবুয়ে

ম্যাচটা প্রায় বেরই করে ফেলেছিল জিম্বাবুয়ে । ছবি: শামসুল হক
ম্যাচটা প্রায় বেরই করে ফেলেছিল জিম্বাবুয়ে । ছবি: শামসুল হক
সিলেটে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়েকে ৪ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ


অষ্টম উইকেট জুটিতে ডোনাল্ড তিরিপানো আর টিনোটেন্ডা মোতুমবদজির ওপর কী যেন ভর করেছিল। ৪৫ বলে ৮০ রানের দুর্ধর্ষ জুটি গড়লেন এ দুজন। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে তখন শঙ্কা। এই বুঝি জিতে গেল জিম্বাবুয়ে! শফিউল ইসলাম আর আল-আমিন হোসেনের ওপর চড়াও হয়ে ম্যাচটা প্রায় বেরই করে নিয়েছিলেন তাঁরা। তিরিপানো মাত্র ২৮ বলে ৫৫ জিম্বাবুয়েকে জয়ের দ্বারপ্রান্তেই নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত ৪ রানে হেরেছে তারা।

৪১.৫ ওভারে মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ বানিয়ে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা যখন সিকান্দার রাজাকে ফেরালেন, তখন জিম্বাবুয়ে ৭ উইকেটে ২২৫। জয় থেকে তখনো ৯৮ রান দূরে তারা। ম্যাচটা বাংলাদেশ জিতেই গিয়েছে মনে করে যাঁরা সিলেট স্টেডিয়াম ত্যাগ করেছিলেন, কিংবা টেলিভিশনের চ্যানেল ঘুরিয়ে ফেলেছিলেন, তাঁদের জন্য বড় বিস্ময়ই অপেক্ষা করছিল। টিনেটেন্ডা মোতুমবদজির সঙ্গে যখন ডোনাল্ড তিরিপানো এসে জুটি বাঁধলেন, তখনো কেউ ঘুণাক্ষরে ভাবতে পারেননি এ দুজন কতটা পরীক্ষা নেবেন বাংলাদেশি বোলারদের। নির্দিষ্ট করে বললে তাঁরা পরীক্ষা নিয়েছেন দুই পেসার শফিউল ইসলাম ও আল-আমিন হোসেনের। প্রথম ম্যাচের একাদশে তাঁরা কেউই ছিলেন না, আজ সাইফউদ্দিন ও মোস্তাফিজুর রহমানকে বিশ্রাম দেওয়ায় তাঁরা বাংলাদেশ দলে ঢুকেছিলেন। কিন্তু এই দুই পেসারই এতটাই খরুচে বোলিং করলেন যে ম্যাচটা জিম্বাবুয়ে প্রায় বেরই করে ফেলেছিল। ৪৫ বলে ৮০ রানের জুটি গড়লেন তিরিপানো আর মোতুমবদজি। শফিউল আর আল-আমিনকে উড়িয়ে মারলেন মাঠের চারদিকে। জয়ের দ্বারপ্রান্তে দল পৌঁছেও গিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের সঙ্গী হারই। কিন্তু সিলেটে বাংলাদেশকে শঙ্কায় ফেলে দেওয়ার কৃতিত্বটা জিম্বাবুয়েকে আজ দিতেই হচ্ছে।

বাংলাদেশের ৩২২ রান জিম্বাবুয়ে তাড়া করে ফেলবে—এমনটা কিন্তু কখনোই মনে হয়নি। যদিও আজ প্রথম ম্যাচের মতো ফিল্ডিং ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ক্যাচ পড়েছে একাধিক। কিন্তু জিম্বাবুয়েকে শুরুর দিকে তেমন হুমকি মনে হয়নি। ওপেনার তিনাশে কামুনহুকামওয়ে ফিফটি পেয়েছেন কিন্তু বাংলাদেশকে প্রথম কিছুটা চাপে ফেলেছিলেন সিকান্দার রাজা আর ওয়েসলি মাধেভেরের জুটি। পঞ্চম উইকেট জুটিতে রাজা আর মাধেভেরে ৮১ রানের জুটি গড়েছিলেন। রাজা ৬৬ করেছেন ৫৭ বলে আর মাধেভেরে পেয়েছেন তাঁর ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি। মুতুম্বামি মাঝখানে ১৭ বলে ১৯ রান করে রান তাড়ার লড়াইয়ে কিছুটা এগিয়ে দিয়েছিলেন দলকে। কিন্তু বলের হিসাবে সব সময়ই পিছিয়ে থাকায় কখনোই মনে হয়নি জিম্বাবুয়ে ম্যাচটা বের করে নেবে। কিন্তু শেষ দিকে তিরিপানে আর মোতুমবদজি কী অসাধ্য টাই না সাধন করলেন। জয়ের বন্দর দেখেও সেখানে পৌঁছাতে পারলেন না।

তাইজুল ইসলাম ভালো বোলিং করেছেন। ৫২ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি। কিন্তু একমাত্র মিরাজ ছাড়া বাকিরা সবাই অনেক বেশি খরুচে। অধিনায়ক মাশরাফি ১০ ওভারে ৫২ রান দিয়ে ১ উইকেট পেয়েছেন। শফিউল আর আল-আমিন ১টি করে উইকেট পেয়েছেন যথাক্রমে ৭৬ আর ৮৫ রান দিয়ে। মিরাজ ৭ ওভার বোলিং করে ১ উইকেট পেয়েছিলেন ২৫ রান দিয়ে। কিন্তু তাঁকে পরে কেন আর আনা হলো না বোলিং করতে, সেটি জানা যায়নি। মাহমুদউল্লাহ ৪ ওভারে দিয়েছেন ২২।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচের বড় বিপদ। এ ম্যাচে দাপটের সঙ্গে না জিতলে কোনো প্রশংসা নেই। হারলে বিদ্ধ হতে হয় সমালোচনায়। আজ সিলেটে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে খুব বাঁচা বেঁচে গেছে বাংলাদেশ।