মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে ফিরেই হুঙ্কার টমাসের

কাল ওশানের সামনে উড়ে গেছে শ্রীলঙ্কা। ছবি: এএফপি
কাল ওশানের সামনে উড়ে গেছে শ্রীলঙ্কা। ছবি: এএফপি

‘দ্য ওয়াইল্ড থিং’, আদর করে শন টেইটকে ডাকা হতো এ নামে। কারণ ভয়ংকর গতি ও বাউন্সারে কোনো দিন কী করবেন সেটা অনুমান করা দুঃসাধ্য ছিল। একদিন গতি আর বাউন্সারে বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যানকেও নাকানিচুবানি খাওয়াতেন। অন্যদিন এমনই বল করতেন যে আক্রমণ থেকে সরিয়ে নিতে বাধ্য হতেন অধিনায়ক। অস্ট্রেলিয়ান গতি তারকার সেই ডাক নাম কেড়ে নেওয়ার বন্দোবস্ত করছেন ওশানে টমাস। গতকাল লঙ্কানদের উড়িয়ে দেওয়ার পথে টেইটের বোলিংয়ের দুই দিকই দেখিয়েছেন।

সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে পাল্লেকেলেতে কাল ১৯৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করছিল শ্রীলঙ্কা। প্রথম ওভারে ১২ রানও তুলে ফেলেছিল। দ্বিতীয় ওভারে বল করতে এসে টমাস প্রথম দুই বল ঠিকঠাকই করেছেন। এরপরই দিয়েছেন দুটি ওয়াইড। ওভার শেষ হওয়ার আগেই দিয়েছেন আরেকটি ওয়াইড। কিন্তু তাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিছু যায় আসেনি। তিনটি ওয়াইডের বদলে যদি তিন উইকেট মেলে তাতে কোনো অধিনায়কের আপত্তি থাকে?

কাল গতি আর বাউন্সে এমনই হুংকার ছেড়েছেন টমাস যে তাঁকে তিন ওভারের বেশি বল করতে হয়নি। ওই ৩ ওভারেই দিয়েছেন ৭ ওয়াইড। সব মিলিয়ে রানও খুব একটা কম দেননি। ২৮ রান দিয়েছেন। পাওয়ার প্লের পর তাঁকে আর বোলিংয়ে দেখা যায়নি। বলা ভালো তাঁকে আর দরকার হয়নি দলের। পাওয়ার প্লেতেই ৫৬ রান তুলে ফেলেছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু ততক্ষণে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে স্বাগতিক দল। সবগুলো উইকেটই এই অনিয়ন্ত্রিত টমাসের। দারুণ এক ব্যাটিং উইকেটে তাঁর গতি আর বাউন্সই পার্থক্য গড়ে দিয়েছে দুই দলের। ১৯৬ রান তাড়া করতে নেমে ১৭১ রানে অলআউট হয়েছে শ্রীলঙ্কা। এক প্রান্ত থেকে টমাসের আগ্রাসন দেখা ওপেনার কুশল পেরেরাই শুধু পালটা জবাব দিচ্ছিলেন। কিন্তু ১৭তম ওভারে ৩৮ বলে ৬৬ করা পেরেরা ফেরার পর আর ১০ রানই যোগ করতে পেরেছে দলটি।

এর আগে লেন্ডল সিমন্সের ৬৭ রানের সঙ্গে কিং, রাসেল ও পোলার্ডের তিনটি ত্রিশোর্ধ্ব ইনিংস সফরকারীদের ১৯৬ রান এনে দিয়েছে। যা দলটিকে লঙ্কান ভূমে এবারের প্রথম জয় পাওয়ার জন্য যথেষ্ট বানিয়ে দিয়েছে। ব্যাটিং স্বর্গে সেটা সম্ভব হয়েছে টমাসের আগ্রাসী বোলিংয়েই।

অথচ এ সিরিজ হয়তো খেলাই হতো না তাঁর। ওয়ানডে দলে ডাক পাননি। এর পর আবার গত ১৬ ফেব্রুয়ারি পড়েছিলেন ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায়। জ্যামাইকাতে দুই গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষের সে ঘটনায় অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছিলেন দীর্ঘদেহী এই পেসার। হাসপাতালেও যেতে হয়েছিল তাঁকে। ভাগ্যক্রমে বড় ধরনের কোনো চোট ছাড়াই বাড়ি ফিরতে পেরেছিলেন। ভাগ্যিস পেরেছিলেন, না হলে গতকালের এমন ‘ওয়াইল্ড’ বোলিং আর কাছ থেকেই-বা মিলত!