ফুটবল কোচ নিকোলার 'বাংলাদেশ-প্রেম'

দলের সঙ্গে নিকোলা ভিতরোভিচ। ছবি: বাফুফে
দলের সঙ্গে নিকোলা ভিতরোভিচ। ছবি: বাফুফে

গতকালের সন্ধ্যাটা একটু অন্যরকমই ছিল নিকোলা ভিতরোভিচের জন্য। আড়াই বছরের কোচিং ক্যারিয়ারে এমন পরিস্থিতিতে কখনো পড়েননি বাংলাদেশ পুলিশ ফুটবল দলের কোচ। ২০১৭ সালের আগস্টে সাইপ্রাস থেকে ঢাকায় এসেছিলেন ব্রাদার্স ইউনিয়নে খেলতে। কয়েকটি প্রীতি ম্যাচে কমলা রঙের জার্সি পরেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ব্রাদার্সের কোচের দায়িত্ব পেয়ে ফুটবলার জীবনে ইতি টানেন। এরপর এক মৌসুম ব্রাদার্সের কোচ ছিলেন। এবার বাংলাদেশ পুলিশের কোচ। গতকালই প্রথম নিজের পুরোনো ক্লাব ব্রাদার্সের বিপক্ষে ছিলেন ডাগআউটে। জয় নিয়ে সন্ধ্যাটা রাঙিয়ে নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারেননি। ড্র করেছে পুলিশ।

ব্রাদার্সের বিপক্ষে ডাগ আউটে দাঁড়াতে কেমন লেগেছিল? ম্যাচ শেষে প্রশ্নটা করতেই আবেগ ছুঁয়ে গেল নিকোলাকে, ‘এই ক্লাব দিয়েই আমি কোচিং ক্যারিয়ার শুরু করেছিলাম। সেই ব্রাদার্সের বিপক্ষে বিপক্ষে দাঁড়ানো কঠিন ছিল আমার জন্য। একটু আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিলাম। তবে শেষ পর্যন্ত একটা পয়েন্ট পেয়েছি এতেই খুশি।’

ঢাকায় শুরুর দিনগুলোর কথা মনে করছিলেন নিকোলা, ‘আমি ফুটবলার কাম কোচ হিসেবে সই করি ব্রাদার্সে। কিন্তু কোচ হওয়ার প্রস্তাব পেয়ে লুফে নিই।’বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবল সম্পর্কে ভালো ধারণা গড়ে উঠেছে নিকোলার। ঢাকায় কোচিং ক্যারিয়ার উপভোগ করছেন, সেটা তাঁর কথাতেই স্পষ্ট, ‘আমি এখানে কাজ করতে পেরে খুব খুশি। কারণ, আমি এরই মধ্যে এই দেশের মানুষ সম্পর্কে জেনে ফেলেছি। এখানকার লোকজনের মানসিকতা, ফুটবল, ক্লাব কর্মকর্তা, ক্লাব, লিগের শতকরা ৯০ ভাগ ফুটবলার সম্পর্কে ধারণা হয়ে গেছে। ফুটবল কোচ হিসেবে খুব উপভোগ করছি এখানে।’

প্রিমিয়ারে নবাগত ক্লাব বাংলাদেশ পুলিশ ও ক্লাবটির কর্মকর্তাদের নিয়েও উচ্ছ্বসিত তিনি, ‘পুলিশ ক্লাবটা বেশ পেশাদার। সবচেয়ে বড় হলো শৃঙ্খলা। কর্মকর্তারা আমার কাজে হস্তক্ষেপ করেন না। এখন পর্যন্ত চার ম্যাচে এক জয়, দুই ড্র। এটা মন্দ নয়।’বড় ক্লাবে প্রস্তাব পেলে কি করবেন? উত্তরটা দিলেন হাসতে হাসতে, ‘আসলে এখনই এসব নিয়ে ভাবছি না। এই ক্লাবকে লিগ শেষে অন্তত সেরা পাঁচে রাখতে পারলে খুশি হব।’

স্ত্রী নিনাকে নিয়ে ঢাকার একটি ফ্ল্যাটে থাকেন। অবসর পেলেই ঘুরতে বেরিয়ে পড়েন শহরে। বাংলাদেশকে ভালোবেসে ফেলেছেন। বাংলাদেশের ফুটবলের উন্নতি চান, ‘এই দেশকে, দেশের ফুটবলকে হৃদয়ের মধ্যে জায়গা দিয়েছি। বাংলাদেশের ফুটবলের উন্নতিতে আমার এতটুকু অবদান থাকলেও খুশি হব।’