বসুন্ধরার উৎসব থামিয়ে দিল মোহামেডান

বল দখলের লড়াইয়ে দুই দলের খেলোয়াড়েরা। ছবি: বাফুফে
বল দখলের লড়াইয়ে দুই দলের খেলোয়াড়েরা। ছবি: বাফুফে
>কুমিল্লায় বসুন্ধরা কিংসকে ১-০ গোলে হারিয়েছে মোহামেডান

কিছুদিন আগে কুমিল্লার ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়াম মেতে উঠেছিল ক্রিকেটের আনন্দে। কাউন্সিলর কাপ টি-টোয়েন্টির ফাইনাল দেখতে ২৮ ফেব্রুয়ারি স্টেডিয়ামে উপচে পড়েছিল দর্শক। ২০ হাজার আসনের এ স্টেডিয়ামের বাইরেও সেদিন অনেকে অপেক্ষায় ছিল মাঠে ঢোকার। আজ এ স্টেডিয়ামে ফুটবল উৎসবে মেতে ওঠে কুমিল্লাবাসী। প্রিমিয়ার লিগে এবার মোহামেডানের ঘরের মাঠ কুমিল্লা স্টেডিয়াম। এরই মধ্যে মোহামেডান চারটি ম্যাচ খেলেছে বিভিন্ন ভেন্যুতে। কালই প্রথম ঘরের মাঠে খেলতে নেমেছিল সাদা-কালোরা। চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরাকে ১-০ গোলে হারিয়ে দিনটা কি চমৎকারভাবেই না স্মরণীয় করে রাখল মোহামেডান। গোলটি করেছেন ওবি মনেকে।

সকাল থেকেই কুমিল্লা শহরে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি। কিন্তু দুপুর গড়াতেই আলো ঝলমলে রোদ। বৃষ্টি থামতেই মাঠমুখো হয়েছেন দর্শকেরা। ম্যাচ শুরুর আগে স্টেডিয়ামের টিকিট কাউন্টারে ভিড় বাড়তে থাকে। কারও হাতে ছিল সাদা-কালো পতাকা। কারও হাতে বসুন্ধরা কিংসের প্ল্যাকার্ড। স্টেডিয়ামে পূর্ব গ্যালারি পুরোটাই রঙিন করে রাখে বসুন্ধরার দর্শকেরা। স্কুলের ছাত্ররা বসুন্ধরার জার্সি পরে এবং বাদ্যি বাজনা নিয়ে মাঠে এসেছিল।

কিন্তু বসুন্ধরার এই উৎসবকে থামিয়ে দিতে যেন মুখিয়ে ছিল মোহামেডান। সর্বশেষ ম্যাচে আবাহনীর কাছে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিল মোহামেডান। আজ যেন নতুন উদ্যমে মাঠে নেমেছিল তারা। দুর্দান্ত খেলা উপহার দিয়েছে মোহামেডান। ১২ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত দলটি। ওবি মনেকের ক্রসে সোলেমান দিয়াবা পা লাগাতেই পারেননি। তবে ২২ মিনিটেই মোহামেডান গ্যালারি উৎসবে মেতেছে। বক্সের সামান্য বাইরে থেকে ওবে মনেক জোরালো শট নেন। বসুন্ধরা কিংসের গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোর মাথার ওপর দিয়ে বল ঢোকে জালে।

বসুন্ধরা কিংস মানেই যেন কলিনদ্রেস ঝলক। কিন্তু কলিনদ্রেসকে আজ সেভাবে খেলতে দেয়নি মোহামেডানের ডিফেন্ডাররা। গোল শোধের চেষ্টা করেছেন বটে কোস্টারিকান এই প্লে-মেকার। সময় যত গড়িয়েছে বসুন্ধরা ততই চাপে পড়েছে। ইব্রাহিম, বিশ্বনাথ ঘোষ দুই উইং দিয়ে আক্রমণে উঠেও গোলের দেখা পাননি। বরং প্রতি আক্রমণ থেকে সোলেমান বেশ কয়েকবার বসুন্ধরার বক্সে ঢুকেছেন। কিন্তু গোল করতে পারেননি।

দ্বিতীয়ার্ধে বসুন্ধরা ছিল আরও আক্রমণাত্মক। তবে সময় যত গড়িয়েছে তত চাপে পড়েছে বসুন্ধরা। আর সে চাপে মাঝে মধ্যে মেজাজ হারিয়েছেন বসুন্ধরার ফুটবলাররা। দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে চোটে পড়েন মোহামেডানের মাসুদ রানা। কিন্তু তাকে মাঠ থেকে দেরিতে বের হতে দেখে বসুন্ধরার ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষ তেড়ে আসেন মাসুদের দিকে। প্রতিবাদে ওবি মনেকে জবাব দিলে তাঁকে ঘুষি মারেন বিশ্বনাথ। শেষ পর্যন্ত উত্তেজনা থামাতে এগিয়ে আসেন রেফারি। বাকি সময়ে অবশ্য আর কোনো দল গোল করতে পারেনি।

পাঁচ ম্যাচে প্রথম হারল বসুন্ধরা। দুই জয়, দুই ড্র ও এক হারে বসুন্ধরার পয়েন্ট ৮। আর মোহামেডানের ৫ ম্যাচে তৃতীয় জয়। সাদা-কালোদের পয়েন্ট ৯।