বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়কত্বে 'চাচা-ভাতিজা'

চাচা আকরামের পর ওয়ানডে অধিনায়ক হলেন ভাতিজা তামিম। ফাইল ছবি
চাচা আকরামের পর ওয়ানডে অধিনায়ক হলেন ভাতিজা তামিম। ফাইল ছবি
>

১৯৯৪ সালে বাংলাদেশের অধিনায়ক হয়েছিলেন আকরাম খান। ১৯৯৫ থেকে ১৯৯৮ পর্যন্ত তিনি ১৫টি ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ২৬ বছর পর তাঁরই ভাতিজা তামিম ইকবালের হাতে উঠল বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়কত্ব। একই পরিবার থেকে জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব এই প্রথম

কাল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাকক্ষে বসে আকরাম খান নিশ্চয়ই ফিরে গিয়েছিলেন ২৬ বছর আগে। ১৯৯৪ সালে তিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক। আজ এত বছর পর বিসিবির কর্তা হিসেবে তিনি জাতীয় দলের নতুন এক অধিনায়ক নির্বাচনের আলোচনায় তিনি উপস্থিত। কী অদ্ভুত ব্যাপার, নতুন অধিনায়ক যে তাঁর পরিবারেরই। তাঁর আপন ভাইয়ের সন্তান।

বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে গতকাল তামিম ইকবালের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল এর আগে চাচা-ভাতিজার পরম্পরা দেখেছে, সহোদর ভাইদের দেখেছে। কাল দেখল চাচা-ভাতিজার অধিনায়কত্বের চক্রপূরণ।

১৯৯৪ সালে কেনিয়াতে অনুষ্ঠিত আইসিসি ট্রফি নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিল বাংলাদেশ। প্রথম তিন দেশের একটি হয়ে ১৯৯৬ বিশ্বকাপে খেলার সেই স্বপ্ন শেষ পর্যন্ত পূরণ হয়নি। ব্যর্থতাটা ছিল বড় এক ধাক্কা। বড় পরিবর্তন আসে দেশের ক্রিকেটে। ফারুক আহমেদকে সরিয়ে নতুন পথচলার আশায় অধিনায়ক করা হয় আকরাম খানকে। তিনি নিরাশ করেননি। তাঁর অধিনায়কত্বেই ইতিহাস গড়ে ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি জেতে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের স্বপ্ন পূরণ হয়।

চার বছর অধিনায়ক ছিলেন, ১৫টি ওয়ানডেতে দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাঁর অধিনায়কত্বেই বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ওয়ানডে জিতেছে। ২৬ বছর পর তাঁর ভাতিজা তামিমকে নতুন স্বপ্নের ভার বইতে হচ্ছে। সেটি অবশ্য দেশের ক্রিকেটকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার। মাশরাফি বিন মুর্তজা যেভাবে তাঁর নেতৃত্ব দিয়ে দেশের ক্রিকেটকে সাফল্যের বার্তা দিয়েছিলেন, তামিমের কাজ সেটিকেই ভিন্নমাত্রা দেওয়া। ২৬ বছর আগে চাচা আকরামের দায়িত্বের সঙ্গে তামিমের কর্তব্যের পার্থক্য এই জায়গাতেই। কিন্তু মূল কাজটা তো একই—আকরামের মতো তাঁকেও যে হতে হবে সফল। এর বিকল্প কিছু নেই।

তামিমের একটা সুবিধা থাকছে। পরিবারের সদস্যের কাছেই তিনি জেনে নিতে পারবেন অধিনায়কত্বের অনেক খুঁটিনাটি। যদিও অধিনায়ক হিসেবে তিনি কম অভিজ্ঞ নন। কিন্তু দেশের ক্রিকেটের অনেক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে যেভাবে চাচা আকরামের ব্যাট কথা বলেছিল, তামিম সে অভিজ্ঞতাগুলো নিজের মধ্যে নিয়ে নিতে পারবেন। ১৯৯৭ আইসিসি ট্রফিতে হল্যান্ডের বিপক্ষে আকরাম খানের সেই ৬৭ রানের ইনিংসটির গল্পই তো তামিমকে অন্য রকম অনুপ্রেরণা দিতে পারে। আকরামের সেই ইনিংসটির ওপরই যে লেখা দেশের ক্রিকেটের পরবর্তী সময়ের ইতিহাস।

ক্যারিয়ারের ১৩ বছর পার করে দেওয়ার পর দীর্ঘ মেয়াদে অধিনায়কত্ব পেলেন তামিম। তাঁর দায়িত্ব এখন দেশের ক্রিকেটকে পথ দেখানো। যেমনটি দেখিয়েছিলেন তাঁর চাচা। চাচা ইতিহাসে ঠাঁই পেয়ে গেছেন অনেক আগেই। এখন ভাতিজার পালা। আকরামের পথ অনুসরণ করে তামিম সফল হবেন—এ প্রত্যাশা দেশের ক্রিকেটের।