দামে নেইমার-এমবাপ্পে এমনকি সালাহরও পেছনে মেসি

লিওনেল মেসি। ছবি: এএফপি
লিওনেল মেসি। ছবি: এএফপি
করোনাভাইরাস আতঙ্কে ইউরোপে থেমে গেছে শীর্ষ পাঁচ লিগ। সামনের মৌসুমে দলবদল নিয়ে হিসেব নিকেশ চলছে। আর তাই এখন কোন ফুটবলারের দাম কত তা নিয়ে হিসেব চলছে


লিওনেল মেসি অনেকের কাছেই বিশ্বের সেরা ফুটবলার। অনেকের কাছে সর্বকালের অন্যতম সেরাও। এ নিয়ে পাল্টা যুক্তিও কম নেই। তবে বার্সেলোনা তারকা এ মুহূর্তে কিন্তু বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফুটবলার নন। এমনকি বর্তমান বাজার মূল্য হিসেব করলে মেসি শীর্ষ পাঁচেও নেই।

করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে ইউরোপে থেমে গেছে শীর্ষ পাঁচ লিগ। মাঠে খেলা না থাকায় দলবদলের বাজারে চোখ পড়েছে বিশ্লেষকদের। আগামী মৌসুমে কার কত দাম হতে পারে? দলবদলের বাজার ও ফুটবলারদের নানা হালনাগাদ তথ্য-উপাত্ত সরবরাহকারী জার্মান ওয়েবসাইট ‘ট্রান্সফারমার্কেট’ বর্তমানে দামের দিক থেকে শীর্ষ দশ ফুটবলারের তালিকা করেছে। আসুন দেখে নেই—

১০. আঁতোয়ান গ্রিজমান (বার্সেলোনা):
ফ্রান্সের হয়ে বিশ্বকাপজয়ী গ্রিজমান গত বছর অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ছেড়ে যোগ দেন বার্সেলোনায়। কাতালান ক্লাবটির হয়ে এবার প্রথম মৌসুমে এখন পর্যন্ত ৩৭ ম্যাচে করেছেন ১৪ গোল। বার্সা আক্রমণভাগের এ তারকার দামের এতটুকু হেরফের ঘটেনি। বার্সা তাঁকে যে দামে কিনেছিল বাজারে গ্রিজমানের দাম এখনো সে অঙ্কই আছে—১২০ মিলিয়ন বা ১২ কোটি ইউরো।

জ্যাডন সাঞ্চো। ছবি: এএফপি
জ্যাডন সাঞ্চো। ছবি: এএফপি



৯. জ্যাডন সাঞ্চো (বরুসিয়া ডর্টমুন্ড):
বিশ্বের সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ ফুটবলারদের একজন হিসেবে বিবেচনা করা হয় সাঞ্চোকে। ২০১৭ সালে তাঁকে ম্যানচেস্টার সিটি থেকে ৮ মিলিয়ন পাউন্ডে কিনেছিল জার্মান ক্লাবটি। ডর্টমুন্ডের হয়ে দুর্দান্ত দুটি মৌসুম কাটিয়েছেন ১৯ বছর বয়সী এ ইংলিশ উইঙ্গার। এ মৌসুমের খেলা মাঠে গড়াক বা না গড়াক, সামনের মৌসুমে ক্লাবগুলো যে তাঁকে কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়বে এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। সে ক্ষেত্রে ইংলিশ তরুণকে বিক্রি করতে বেশ বড় অঙ্কের অর্থ কামানোর সুযোগ রয়েছে ডর্টমুন্ডের। এখন তাঁর বাজার মূল্য যে ১২০ মিলিয়ন বা ১২ কোটি ইউরো।

৮. লিওনেল মেসি (বার্সেলোনা):
৩২ বছর বয়সেও তিনি বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলারদের একজন। বার্সা এখনো তাঁর পায়ে ভরসা রেখেই মাঠে নামে। কিন্তু সত্যটা হলো, রিলিজ-ক্লজ (বার্সেলোনার ইচ্ছার বাইরে মেসিকে কিনতে গেলে যে দাম দিতে হবে আগ্রহী ক্লাবকে) মূল্য ৭০০ মিলিয়ন ইউরো হলেও মেসির বাজার দর কমেছে। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতেও আর্জেন্টাইন তারকার দাম ছিল ১৮০ মিলিয়ন ইউরো। ডিসেম্বরে তা নেমে আসে ১৬০ মিলিয়ন ইউরোয়। তবে গত বছরের ডিসেম্বরে মেসির যে দাম ছিল তা এখনো টিকে আছে—১৪০ মিলিয়ন বা ১৪ কোটি ইউরো।

কেভিন ডি ব্রুইনা। ছবি: এএফপি
কেভিন ডি ব্রুইনা। ছবি: এএফপি



৭. কেভিন ডি ব্রুইনা (ম্যানচেস্টার সিটি):
ম্যানচেস্টার সিটিতে পেপ গার্দিওলার অন্যতম ভরসা। বেলজিয়ামের এ অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার সাম্প্রতিক সময়ে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে দুর্দান্ত খেলেছেন। ২০১৫ সালে ভলফসবুর্গ থেকে ৫৫ মিলিয়ন পাউন্ডে সিটিতে যোগ দিয়েছিলেন ব্রুইনা। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে তাঁর দাম উঠেছিল ১৮০ মিলিয়ন ইউরো। সে তুলনায় ডি ব্রুইনার দাম এখন কমেছে। এখন তাঁর বাজার মূল্য ১৫০ মিলিয়ন বা ১৫ কোটি ইউরো।

৬. হ্যারি কেন (টটেনহাম হটস্পার্স):
টটেনহাম হটস্পার্সের হয়ে নিজেকে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকারে পরিণত করেছেন হ্যারি কেন। গত পাঁচ মৌসুমে গড়ে ৩০টির বেশি করে গোল করেছেন এই ইংলিশ স্ট্রাইকার। কেনের দাম তাই গত দুই বছরে কম-বেশি হয়নি। ২০১৮ সালের মার্চে তাঁর বাজার দর ছিল ১৫০ মিলিয়ন বা ১৫ কোটি ইউরো। এখনো দামটা একই আছে।

মোহাম্মেদ সালাহ। ছবি: এএফপি
মোহাম্মেদ সালাহ। ছবি: এএফপি



৫. মোহাম্মেদ সালাহ (লিভারপুল):
লিভারপুলের হয়ে নিজের জাতটা চিনিয়ে যাচ্ছেন মোহাম্মেদ সালাহ। মিসরীয় এ ফরোয়ার্ড পারফরম্যান্সে টেক্কা দিয়েছেন ইউরোপের বাঘা বাঘা তারকাদের। ২০১৭ সালে এএস রোমা থেকে ৪২ মিলিয়ন ইউরোয় তাঁকে কিনেছিল লিভারপুল। এই তিন বছরে নিজের দামটা এক শ মিলিয়নের ওপাশে নিয়ে গেছেন ২৭ বছর বয়সী তারকা। ২০১৮ সালের মে মাসেও সালাহর বাজার দর ছিল ১৫০ মিলিয়ন বা ১৫ কোটি ইউরো। এ দুই বছরে তাঁর দাম না বাড়লেও কমেনি।

৪. সাদিও মানে (লিভারপুল):
লিভারপুলের ‘ত্রয়ী’ আক্রমণভাগের অন্যতম তারকা। কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপের অধীনে অপ্রতিরোধ্য ফর্মে আছেন সেনেগালিজ ফরোয়ার্ড। গত বছরও তাঁর দাম ছিল ১২০ মিলিয়ন ইউরো। কিন্তু এ বছর তা বেড়েছে। ১৫০ মিলিয়ন বা ১৫ কোটি ইউরো বাজার দর মানের।

৩. নেইমার (পিএসজি):
বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা তিন ফুটবলারের একজন। ব্রাজিলিয়ান এ তারকা খেলা এবং খেলার বাইরের কর্মকাণ্ডে আলোচনায় থাকেন সব সময়ই। তবে গত বছরের তুলনায় নেইমারের বাজারদর কিন্তু কমেছে। গত বছর জুনেও তাঁর দাম ছিল ১৮০ মিলিয়ন ইউরো। চোট এবং নানা কারণে পরের কয়েক মাসে দাম কমেছে নেইমারের। গত বছরের ডিসেম্বরে ১৬০ মিলিয়ন বা ১৬ কোটি ইউরো দামটা এখনো ধরে রাখতে পেরেছেন নেইমার।

২. রাহিম স্টার্লিং (ম্যানচেস্টার সিটি):
এমনিতে দেখে তেমন কিছু মনে হয় না। তবে মাঠের খেলা দেখলে মনে হবে, এ ছেলের মধ্যে আগুন আছে। ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে এভাবেই নিজেকে মেলে ধরছেন স্টার্লিং। গত বছর জুনে তাঁর দাম ছিল ১৪০ মিলিয়ন ইউরো। এ কয়েক মাসে দাম বেড়েছে ইংলিশ তারকার। এখন স্টার্লিংয়ের দাম ১৬০ মিলিয়ন বা ১৬ কোটি ইউরো।

কিলিয়ান এমবাপ্পে। ছবি: এএফপি
কিলিয়ান এমবাপ্পে। ছবি: এএফপি



১. কিলিয়ান এমবাপ্পে (পিএসজি):
ফ্রান্সের ‘গোল্ডেন বয়’ বললে মোটেও অত্যুক্তি হবে না। প্রায় কিশোর বয়সেই জিতেছেন বিশ্বকাপ। খেলা দিয়ে কেড়েছেন জগতের আলো। ২১ বছর বয়সী এ ফরোয়ার্ডের দাম গত দুই বছরে কমেনি। ২০১৮ সালে তাঁর দাম যা ছিল এখনো সেই ২০০ মিলিয়ন বা ২০ কোটি ইউরোই আছে। রিয়াল মাদ্রিদ বেশ আগে থেকেই এমবাপ্পেকে কিনতে আগ্রহী।