মায়ের জন্য আর্জেন্টিনায় এসে অবরুদ্ধ হিগুয়েইন

আর্জেন্টিনাতে পৌঁছেও অবরুদ্ধ হিগুয়েইন। ফাইল ছবি
আর্জেন্টিনাতে পৌঁছেও অবরুদ্ধ হিগুয়েইন। ফাইল ছবি

অবিশ্বাস্য এক দৃশ্য দেখা যাচ্ছে পৃথিবীতে। বিশ্বের সেরা স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা দেশগুলোও কীভাবে অসচেতনতার কারণে অসহায় হয়ে যেতে পারে, সেটা দেখিয়ে দিয়েছে করোনাভাইরাস। চীন, ইতালি, স্পেন বা ফ্রান্সের মতো দেশ করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বের কাছে আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠেছে। আধুনিক সব সুবিধা থাকার পরও ইউরোপ ছেড়ে অন্য কোথাও যাওয়ার চেষ্টা দেখা যাচ্ছে মানুষের মাঝে। বাংলাদেশের অনেক প্রবাসী যেমন করছেন, যেটা দেখিয়েছেন নেইমারও।

ফ্রান্স থেকে ব্রাজিলে ফিরেছেন নেইমার। তাঁর ফ্রান্স ছাড়ার ঘটনাকে অনেক মজা করে পালানোর সঙ্গে তুলনা করেছে বিশ্ব সংবাদমাধ্যম। ঠিক তাঁর মতোই কোয়ারেন্টিনের মাঝেও ইতালি ছেড়েছেন গঞ্জালো হিগুয়েইন। ইতালিতে ভয়ংকর রূপ নিয়েছে করোনা। হিগুয়েইনের ক্লাব জুভেন্টাসেও দুজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ডিফেন্ডার রুগানির পর মিডফিল্ডার মাতুইদিও কোভিড-১৯ পরীক্ষায় পজিটিভ হয়েছেন। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো তো বহু আগেই তুরিন ছেড়ে পর্তুগালের মাদেইরাতে স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টিনে আছেন।

হিগুয়েইন অবশ্য স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টিনে নন, একদম গৃহবন্দী ছিলেন ইতালিতে। কিন্তু সে নিয়ম ভেঙেছেন। মায়ের অসুস্থতা হওয়ার খবর পেয়ে ‘লকডাউন’ মানার ইচ্ছা হয়নি। আর্জেন্টিনা ফেরার জন্য পাগল হয়ে গিয়েছিলেন। প্রথমে কোভিড-১৯ পরীক্ষায় নেগেটিভ প্রমাণ করেছেন নিজেকে। তারপর ক্লাব থেকে ছুটি আদায় করেছেন। এরপরই শুরু করেছেন মায়ের টানে দেশে যাওয়ার যাত্রা। কিন্তু ইতালি থেকে সরাসরি আর্জেন্টিনায় যাওয়ার কোনো উপায় পাননি। তাতেও হাল ছাড়েননি। প্রথমে ভাড়া করা বিমানে গেছেন ফ্রান্সে। সেখানে থেকে আবার উড়াল দিয়েছেন স্পেনে। স্পেন থেকে আবার নতুন করে ভাড়া করেছেন বিমান। স্পেন থেকেই শুরু করেছেন আটলান্টিক পাড়ি দেওয়ার লড়াই।

দেশে ফিরেও যে খুব একটা ভালো পরিস্থিতি পেয়েছেন হিগুয়েইন, তা–ও নয়। ১২৮ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে দেশটিতে। মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। এ অবস্থায় পুরো দেশে লকডাউন করেছে কর্তৃপক্ষ। শুধু খাবার বা ওষুধ কেনার জন্য ঘর থেকে বের হতে পারবে আর্জেন্টাইনরা। ৩১ মার্চ পর্যন্ত এ অবস্থা চলবে। ফলে ইতালি থেকে এসেও সেই ঘরেই থাকতে হবে হিগুয়েইনকে। অবশ্য সময়টা মায়ের পাশে থাকতে পারবেন, এর চেয়ে বড় তৃপ্তির কিছু তো নেই!