বিদেশে 'স্বেচ্ছাবন্দী' রাজীব-আরিফুলরা

শুধু ক্রিকেটাররাই নন, করোনা-আতঙ্কে স্বেচ্ছাবন্দী আছেন রাজীব-আরিফুলরাও। ছবি : প্রথম আলো
শুধু ক্রিকেটাররাই নন, করোনা-আতঙ্কে স্বেচ্ছাবন্দী আছেন রাজীব-আরিফুলরাও। ছবি : প্রথম আলো
>

দেশের বাইরে করোনাভাইরাসের কারণে স্বেচ্ছাবন্দী অবস্থায় আছেন বিভিন্ন খেলার বেশ কয়েকজন তারকা।

করোনাভাইরাস-আতঙ্কে ফ্রান্সে দিন কাটছে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাঁতারু আরিফুল ইসলামের। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) বৃত্তি নিয়ে ২০১৮ সালে ফ্রান্সে যাওয়া আরিফুলের অনুশীলন বন্ধ হয়ে গেছে গত সপ্তাহে। আপাতত ‘গৃহবন্দী’ হয়েই অলস সময় কাটাচ্ছেন আরিফুল। শুধু আরিফুল নন, এই মুহূর্তে দেশের বাইরে এভাবে স্বেচ্ছাবন্দী আছেন গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীব, ফিদে মাস্টার খন্দকার তৈয়বুর রহমান ও টেবিল টেনিস খেলোয়াড় মিনারা শারমিন।

মার্চের প্রথম সপ্তাহে জার্মানিতে বোনের কাছে বেড়াতে গিয়ে আটকে গেছেন গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীব। ফিদে মাস্টার তৈয়বুর রহমান রাজীবেরও আত্মীয়। দুজন একই সঙ্গে আছেন জার্মানিতে। বাংলাদেশ গেমস স্থগিত হওয়ার খবর পেয়ে আরও কিছুদিন থাকতে চেয়েছিলেন জার্মানিতে। কিন্তু বেশির ভাগ দেশের সঙ্গেই ফ্লাইট বন্ধ হয়ে গেছে বাংলাদেশের। তাই রাজীবেরও আপাতত দেশে আসার জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

জানুয়ারি মাসে জাপানে স্বামীর কাছে বেড়াতে যান জাতীয় টেবিল টেনিস খেলোয়াড় মিনারা শারমিন। বাংলাদেশ গেমসে অংশ নেওয়ার জন্য দেশে এসে অনুশীলন করার কথা ছিল মিনারার। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে আপাতত জাপানেই থাকতে হচ্ছে এই টিটি খেলোয়াড়কে।

রাজীব, মিনারাদের সময়টা হয়তো আত্মীয়স্বজন নিয়ে বেশ ভালোভাবেই কাটছে। কিন্তু একেবারে নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করছেন আরিফুল। এমনিতেই ইউরোপে করোনাভাইরাসের প্রভাবে মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ফ্রান্সের রুয়েন শহরে যে ফ্ল্যাটে আরিফুল থাকেন, পাশের ফ্ল্যাটেই ৫৩ বছর বয়সী এক মহিলার শরীরে ধরা পড়েছে করোনাভাইরাস। এই অবস্থায় দেশ থেকে হাজারো মাইল দূরে থাকা আরিফুল বেশ আতঙ্কেই আছেন, ‘এই মুহূর্তে রুমের মধ্যে শুয়ে-বসেই দিন কাটছে আমার। বাইরে বের হওয়ার উপায় নেই। কোনো কারণ ছাড়া বের হলেই ৩০ ইউরো জরিমানা। আর অসুস্থ শরীরে বের হলে ১৫০ ডলার জরিমানা।’

দ্য রুয়েন ভাইকিং ক্লাবের অধীনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১৫ জন সাঁতারু অলিম্পিকের বৃত্তি নিয়ে গেছেন অনুশীলন করতে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি খারাপ হতেই সবাই ফ্রান্স ছেড়েছেন। শুধু আরিফুল ও টোগোর এক সাঁতারু ফ্রান্সে রয়ে গেছেন। আপাতত আরিফুলকে দেশে ফেরানোর কোনো পরিকল্পনা নেই সাঁতার ফেডারেশনের। সাধারণ সম্পাদক মোল্লা বদরুল সাইফ বলছিলেন, ‘ও (আরিফুল) যেখানে আছে, সেখানে আমরা সব সময় যোগাযোগ রেখেছি। ওকে সব পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যেন নিয়মকানুন মেনে ঘরের মধ্যেই থাকে।’

আরিফুলের ভাই সাঁতারু শরীফুল ইসলামও সারাক্ষণ যোগাযোগ রাখছেন ফ্রান্সে। আরিফুলকে নিয়ে তাঁর পরিবারের উদ্বেগটা টের পাওয়া যাবে শরীফুলের কথায়, ‘মা সারাক্ষণ দুশ্চিন্তা করেন। মা চাইছেন যেন ও দ্রুত দেশে ফিরে আসে। কিন্তু এই মুহূর্তে ওর ফেরা একরকম অসম্ভব।’