দেশে এসে স্ত্রীর জন্য আতঙ্কে দিন কাটছে স্বামীর

নিউজিল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার ইয়ান ও’ব্রায়ান। ছবি: এএফপি
নিউজিল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার ইয়ান ও’ব্রায়ান। ছবি: এএফপি

ইয়ান ও’ব্রায়েনকে সেভাবে মনে রাখার কোনো কারণ নেই। বাতাসের আনুকূল্যে বল করে নিউজিল্যান্ডে ভালো সফলতা পেয়েছিলেন। কিন্তু এখন বাতাস প্রতিকূল। ও’ব্রায়েনকে তাই লড়তে হচ্ছে। তাঁর সময় কাটছে আতঙ্কে।

২০১২ সালে ক্রিকেট ছেড়ে দেওয়া নিউজিল্যান্ডের সাবেক এ পেসার পরিবার নিয়ে থাকেন ইংল্যান্ডে। স্ত্রী রোজির সঙ্গে দুই সন্তান। মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধানে নিউজিল্যান্ডে গিয়েছিলেন ও’ব্রায়েন। করোনাভাইরাস মহামারি হয়ে ওঠায় তাঁকে আটকা পড়তে হয়েছে নিউজিল্যান্ডে।

২২ টেস্ট ও ১০ ওয়ানডে খেলা ও’ব্রায়েন ইংল্যান্ডে ফিরতে আজও ওয়েলিংটন বিমানবন্দরে ধরনা দিয়েছেন। উড়োজাহাজের সর্বশেষ বুকিং বাতিল হওয়ার পর থেকেই বেকায়দায় পড়ছেন ও’ব্রায়েন।

ঘণ্টার পর ঘণ্টা ও টাকা খরচ করেও ইংল্যান্ডে ফেরার রাস্তা পাননি ৪৩ বছর বয়সী এই ডানহাতি পেসার। এদিকে স্ত্রীর জন্য দুশ্চিন্তায় তাঁর ঘুম হারাম। রোজির ফুসফুসে সমস্যা আছে। করোনা মহামারির এ সময়টা তাঁর জন্য ভীষণ ঝুঁকিপূর্ণ। ও’ব্রায়েন তা বুঝেও কিছু করতে পারছেন না। ফিরতে পারছেন না জীবনসঙ্গীর কাছে।

নিউজিল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম ‘স্টাফ এন জেড’কে ও ‘ব্রায়েন বলেন, ‘সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো আমার স্ত্রীর ফুসফুসে সমস্যা। এ অবস্থায় বুকে কোনো সংক্রমণ হলে জীবন বিপর্যয় হতে পারে। ভাইরাসের কারণে তার মৃত্যুও হতে পারে। বাচ্চাদের পাশাপাশি নিজের ৮০ বছর বয়সী মাকেও দেখতে হয় তাকে। ওর চাপ কিছুটা নিজের ওপর নিতে পারলে ভালো হতো। কিন্তু এখন তো নিজেই চাপ বাড়াচ্ছি।’

ও’ব্রায়েন ওয়েলিংটন বিমানবন্দর দিয়ে ফিরতে চেয়েছিলেন। কিন্তু গিয়ে শুনেছেন, আগের রাতের সব ফ্লাইট বাতিল। তিনি অবশ্য নিজেকে ভাগ্যবানই মনে করছেন। অনেকের অবস্থা তার চেয়েও খারাপ, ‘কোনোটা কাজে না লাগলেও আমি ভাগ্যবান যে তিনটি টিকিট কিনতে পেরেছি। কোনো অভিযোগ নেই। কেউ কেউ আমার চেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে। আমি তো শুধু নিজের স্ত্রীকে নিয়েই ভাবছি।’

করোনাভাইরাস বিশ্বের ১৬৮টি দেশে ছড়িয়ে পড়ায় আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল কিংবা নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। এ ছাড়া খরচের ঝক্কি ও আছে। গত সেপ্টেম্বর থেকে পূর্ণ মেয়াদে কাজ না পাওয়া ও’ব্রায়েন ওয়েলিংটনের পেটনে নিজের বাবা-মাকে ‘আইসোলেশন’-এ রেখেছেন। পাঁচ বছর নিউজিল্যান্ডে ফিরে সফরের মাঝে থাকতে মহামারি হয়ে ওঠে করোনা। এরপর আর ইংল্যান্ডে ফিরতে পারেননি তিনি।