তেত্রিশ মাস পর জ্ঞান ফিরল তাঁর

দারুণ সম্ভাবনাময় ছিলেন নুরি। ছবি: এএফপি
দারুণ সম্ভাবনাময় ছিলেন নুরি। ছবি: এএফপি
>

প্রায় তিন বছর আগে জার্মান ক্লাব ওয়ের্ডার ব্রেমেনের সঙ্গে একটা প্রীতি ম্যাচ খেলতে গিয়ে ‘কার্ডিয়াক অ্যারহিদমিয়া অ্যাটাক’ এ আক্রান্ত হয়ে কোমায় চলে গিয়েছিলেন আয়াক্সের তরুণ তারকা আবদেলহাক নুরি

সুস্থ থাকলে ম্যাথিস ডি লিট, ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংয়ের মতো মাতামাতি হতো তাঁকে নিয়েও।

গত বছর চ্যাম্পিয়নস লিগে আয়াক্সের যে দলটা সবাইকে চমকে দিয়ে সেমিফাইনাল খেলল, কিংবা তাঁর এক বছর আগে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে যে দলটা ইউরোপা লিগের ফাইনাল খেলল, সে দলের অংশ হতে পারতেন তিনিও। সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার হিসেবে খেলা এই তারকা ডনি ফন ডে বিক কিংবা ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংয়ের সঙ্গে মিলে হয়তো সামলাতেন আয়াক্সের মাঝমাঠ। হয়তো তাঁকে নিয়েও টানাটানি লাগাত বার্সেলোনা, রিয়াল মাদ্রিদের মতো ইউরোপসেরা ক্লাবগুলো। হাকিম জিয়েখ, ডেলে ব্লিন্ড কিংবা দুসান তাদিচদের সঙ্গে হয়তো রিয়াল মাদ্রিদ, জুভেন্টাস-বধ উপভোগ করতেন তাড়িয়ে তাড়িয়ে। কিন্তু সেটা হয়নি।

ডি ইয়ংরা যেখানে মাঠ মাতাচ্ছিলেন রোনালদো-রামোসদের বিপক্ষে, আবদেলহাক নুরির লড়াইটা ছিল মূলত মৃত্যুর সঙ্গে। আয়াক্সের বিখ্যাত একাডেমি থেকে ২০১৫ সালে গ্র্যাজুয়েট হয়ে মূল দলে খেলতে আসা নুরি সেবার প্রীতি ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন জার্মান ক্লাব ওয়ের্ডার ব্রেমেনের বিপক্ষে। সেখানেই ঘটে বিপত্তি। মাঠের মধ্যে খেলতে খেলতে ‘কার্ডিয়াক অ্যারহিদমিয়া অ্যাটাক’ এ আক্রান্ত হন তিনি। ক্ষতিগ্রস্ত হয় মস্তিষ্ক। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা ঘোষণা দেন, কোমায় চলে গেছেন তিনি। বাঁচার আশা খুবই ক্ষীণ।

আয়াক্সের মূল দলের হয়ে মাত্র সাত ম্যাচ খেলা নুরি ক্যারিয়ারের শুরুতেই পড়ে যান তাই জীবন সংশয়ে। তবে এত দিন পর তাঁকে নিয়ে সুসংবাদ পাওয়া গেছে। জ্ঞান ফিরেছে নুরির। তেত্রিশ মাস কোমায় অচেতন থাকার পর অবশেষে স্বাভাবিক হওয়া শুরু করেছেন মরক্কোর বংশোদ্ভূত নেদারল্যান্ডসের এই সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার।

সুখবরটা জানিয়েছেন নুরির বড়ভাই আবদেলরাহিম নুরি। নেদারল্যান্ডসের টিভি অনুষ্ঠান দে উইরেলদ দ্রাইত দোর এ আবদেলরাহিম জানিয়েছেন, আস্তে আস্তে সুস্থ হচ্ছেন নুরি, ‘ও কোমা থেকে ফিরেছে। জেগে উঠেছে। ও কোন অবস্থায় আছে, ওর আশপাশে কে আছে সেসব বুঝতে পারে। ও এখন আমাদের সঙ্গে বাসাতেই আছে। আমি নিশ্চিত, ও হাসপাতালের চেয়ে এখানে আরও বেশি যত্ন-আত্তি পাবে। ও ঘুমায়, হাঁচি দেয়, ঢেকুর তোলে, খাবার খায়, টিভি দেখে। মাঝে মাঝে ভ্রু কুঁচকে বা হালকা হেসে ওর মনের অবস্থার জানান দেয়। তবে এমন না যে ও বিছানা থেকে উঠতে পারছে। ও এখনো চব্বিশ ঘণ্টা বিছানাতেই থাকছে। আমাদের ওপর সে এখনো পুরোপুরি নির্ভরশীল।’

আবদেলরাহিমরা নুরির সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই কথাবার্তা চালিয়ে যান, ‘আমরা ওর সঙ্গে এমন ভাবে কথা বলি যেন ও একজন সুস্থ মানুষ। ওকে নিয়ে একসঙ্গে টিভিতে ফুটবল ম্যাচ দেখি।’

তিনি বেঁচে আছেন এটাই বা কম কীসের!