এই মৃত্যুর মিছিলের মধ্যেই খেলতে চায় ইংল্যান্ড

করোনাভাইরাস আতঙ্কে ফাঁকা হয়ে পড়েছে ইংল্যান্ডের রাস্তা-ঘাট। আজ ম্যানচেস্টারের একটি সড়ক। ছবি : এএফপি
করোনাভাইরাস আতঙ্কে ফাঁকা হয়ে পড়েছে ইংল্যান্ডের রাস্তা-ঘাট। আজ ম্যানচেস্টারের একটি সড়ক। ছবি : এএফপি
>ইসিবি চাইছে দর্শকবিহীন মাঠ হলেও খেলা আয়োজন করতে। যাদের মাঠে আসতেই হবে, তাঁদের করোনাভাইরাস পরীক্ষা করে ঢোকানোর চিন্তাভাবনাও আছে

আগামী জুনে টেস্ট খেলতে ইংল্যান্ডে আসার কথা ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ওভালে প্রথম টেস্টটি শুরু হওয়ার কথা ৪ জুন থেকে। কিন্তু সবকিছুই এখন অনিশ্চিত হয়ে গেছে করোনাভাইরাসের কারণে। এরই মধ্যে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) আগামী ২৮ মে পর্যন্ত সব ধরনের পেশাদার ক্রিকেট স্থগিত করেছে। এরপরই যে ক্রিকেট শুরু হয়ে যাবে ইংল্যান্ডে সেটির কী নিশ্চয়তা? পরিস্থিতি যদি স্বাভাবিক না হয়!

পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলেও কীভাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরানো যায় সেই চিন্তাভাবনাও শুরু করে দিয়েছে ইসিবি। ইসিবি চাইছে দর্শকবিহীন মাঠ হলেও খেলা আয়োজন করতে। যাদের মাঠে আসতেই হবে, তাঁদের করোনাভাইরাস পরীক্ষা করে ঢোকানোর চিন্তাভাবনাও করছে ইসিবি। ইসিবির ডিরেক্টর অব ইভেন্টস স্টিভ এলওর্দি কাল ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানকে জানিয়েছেন নিজেদের পরিকল্পনার কথা, ‘দর্শকবিহীন মাঠে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দেখতে কেমন লাগতে পারে আমরা সেটিও বুঝে ওঠার চেষ্টা করছি।’

যুক্তরাজ্যে এখন ‘লকডাউন’ চলছে। তার আগে কোনো একসঙ্গে ৫০০ এর বেশি মানুষ জড়ো হওয়ায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ব্রিটিশ সরকার। এলওর্দি বলেছেন ইসিবি চাইছে কীভাবে ৫০০ এর কম মানুষ নিয়েই ম্যাচ আয়োজন করতে, ‘আমাদের এই সংখ্যার মধ্যেই কাজ করতে হবে। সংখ্যাটা দুই দল, ম্যাচ অফিশিয়াল, মাঠকর্মী, সম্প্রচারকর্মী, সংবাদকর্মী, বাণিজ্যিক অংশীদার, নিরাপত্তাকর্মী, বিভিন্ন জিনিসপত্র সরবরাহকারী, খাদ্য সরবরাহকারী সবাইকে ধরে।’

শুধু সংখ্যা ঠিক রাখলেই তো চলবে না, সবার স্বাস্থ্য সুরক্ষার দিকেও নজর রাখতে হবে। এলওর্দি জানালেন এটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ, ‘আমাদের স্বাস্থ্যগত দিকটাও দেখতে হবে। ভেন্যু ও এর আশপাশে নিরাপদ ও জীবাণুমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। এটিও নিশ্চিত করতে হবে যারা ভাইরাসমুক্ত লোকজনই যেন শুধু ভেন্যুতে আসতে পারে। এটি নিশ্চিত করতে প্রবেশ পথে পরীক্ষা করার ব্যবস্থা রাখতে হবে। প্রস্তুত রাখতে হবে আইসোলেশন ইউনিটও। আমরা এতসব বিষয় নিয়েই ভাবছি।’

এলওর্দিদের ভাবতে হচ্ছে আরেকটি বড় বিষয় নিয়েও—মানুষ কী ভাববে তা, ‘পুরো দেশের মানুষের মনোভাবও বিবেচনায় নিতে হবে। আপনি হয়তো একটি ম্যাচ সফলভাবে আয়োজন করে ফেলতেই পারেন। তবে এটি কী ঠিক কাজ হবে? শুধু নিজেদের কাজ করলেই তো হবে না, বৃহত্তর স্বার্থের কথাও বিবেচনা করতে হবে।’

এ বছর ইংল্যান্ডের যাওয়ার কথা ওয়েস্ট ইন্ডিজ, অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান ও আয়ারল্যান্ডের। এ ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারতের মেয়েদের ক্রিকেট দলেরও ইংল্যান্ডে যাওয়ার কথা আছে। করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত ৭৫৯জন মারা গেছেন ইংল্যান্ডে। এর মধ্যে একদিনেই মৃতের সংখ্যা ১৮১। বিশ্বজুড়ে মহামারি হয়ে ওঠা করোনাভাইরাসে মৃত্যুর মিছিল বেড়েই চলছে। ১৭৬টি দেশে সংক্রমণ ঘটিয়েছে এ ভাইরাস। মৃতের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ২৫ হাজার।