এক সিদ্ধান্তেই ঘুরে গেল ভারতীয় ক্রিকেটের মোড়

১৯৯৪ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এই ম্যাচেই প্রথম ওপেনার হিসেবে নেমেছিলেন টেন্ডুলকার। বদলে গিয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেটের দিগন্ত। ছবি: সংগৃহীত
১৯৯৪ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এই ম্যাচেই প্রথম ওপেনার হিসেবে নেমেছিলেন টেন্ডুলকার। বদলে গিয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেটের দিগন্ত। ছবি: সংগৃহীত

ভারতীয় ক্রিকেটে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত কম নেই। সৌরভ গাঙ্গুলীর অধিনায়ক হওয়াই ধরুন। পাল্টে দিয়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটের শরীরী ভাষা। ১৯৯৪ সালে এমনই এক সিদ্ধান্ত পাল্টে দিয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেটের মোড়।

একটু পেছনে ফিরে যাক। নব্বই দশকে ভারতীয় ব্যাটিংয়ের পতাকা বহন করতেন কে? শচীন টেন্ডুলকার। ওপেন করে বেঁধে দিতেন ইনিংসর সুর-তাল-লয়, গতিপথ। টেন্ডুলকারের ক্যারিয়ার উঠে আসার সঙ্গে বড় হয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটের ব্যাপ্তি। সর্বকালের অন্যতম সেরা এ ব্যাটসম্যানের ওপেন করার সিদ্ধান্ত ভারতীয় ক্রিকেটের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

১৯৯৪ সালের ২৭ মার্চ। অকল্যান্ডে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পঞ্চম ওয়ানডেতে টেন্ডুলকারকে প্রথমবারের মতো ওপেন করতে নামার কথা বলেন অধিনায়ক মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন। তার আগে পাঁচে ও ছয়ে নামা টেন্ডুলকারের ওয়ানডেতে পাঁচ বছর কোনো সেঞ্চুরি ছিল না। টিম ম্যানেজার অজিত ওয়াদেকারের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্তটি নিয়েছিলেন আজহারউদ্দিন।

২১ বছর বয়সী টেন্ডুলকার সে ম্যাচে ওপেন করে হতাশ করেননি। ৪৯ বলে বিস্ফোরক ৮২ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। এরপর থেকে ওপেন করে ভারতের ইনিংসের মেজাজ এভাবেই ঠিক করে দিতে দেখা গেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির মালিককে। ওয়ানডেতে তাঁর ৪৯ সেঞ্চুরির মধ্যে ৪৫টি ওপেন করে।

টেন্ডুলকারকে ওপেন করতে পাঠানোর সিদ্ধান্তটি কেন নেওয়া হয়েছিল? ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে তার উত্তর দিয়েছেন সাবেক অধিনায়ক আজহারউদ্দিন, ‘খেয়াল করে দেখলাম, পাঁচে ও ছয়ে ভালো ব্যাট করলেও শচীন বড় কিছু করতে পারছে না। এ নিয়ে ওয়াদেকার স্যারের সঙ্গে কথা বলি। এরপর সিদ্ধান্ত নেই নিয়মিত ওপেনার সিঁধু অসুস্থ থাকায় শচীন ওপেন করবে। সে নিজেও ওপেন করতে চেয়েছিল। এখন ভালো লাগে যে এরপর সে সর্বকালের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হয়ে গেল।’

ওপেনার হিসেবে অভিষেকেই অমন দুর্দান্ত ইনিংসে আজহার মোটেও অবাক হননি, ‘না অবাক হইনি। শচীনের প্রতিভা আছে জানতাম। প্রতিভার প্রাচুর্য দেখাতে ওর শুধু একটা সুযোগ দরকার ছিল। ওর অর্জনে আমার কোনো অবদান আছে, তা পরে আর মনে হয়নি। আসলে তা কেউ ভাবতে পারবে না। ওর নিজের প্রতিভাতেই এত ওপরে উঠেছে।’

শুক্রবার টেন্ডুলকারের প্রথম ওপেন করার ২৬ বছর পূর্তিতে টুইট করে আইসিসি, ‘১৯৯৪ সালের এই দিনে শচীন টেন্ডুলকার প্রথম ওপেন করেন ওয়ানডেতে। লোকে বলে, বাকিটা ইতিহাস।’