খেলাতে সেরা, পড়াশোনাতেও দুর্দান্ত যে ক্রিকেটাররা

এই পাঁচ ক্রিকেটার ক্রিকেটের মতো পড়াশোনাতেও ছিলেন দুর্দান্ত। ফাইল ছবি
এই পাঁচ ক্রিকেটার ক্রিকেটের মতো পড়াশোনাতেও ছিলেন দুর্দান্ত। ফাইল ছবি
>ক্রিকেট খেলাকে পড়াশোনার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে দেননি অনেক খেলোয়াড়ই। তাঁরা খ্যাতির শিখরে গেছেন, উচ্চশিক্ষাও শেষ করেছেন সাফল্যের সঙ্গে। ক্রিকেট ইতিহাসের ৫ তারকা ক্রিকেটারের পড়াশোনার রেকর্ড অবাক করে দেওয়ার মতোই

খেলাধুলা করলে নাকি পড়াশোনায় পরিপূর্ণ মনোযোগ দেওয়া যায় না। এটা কখনো সত্য, কখনো আংশিক সত্য, কখনো বা পুরোপুরি ভুল। এমন ধারণাকে ভুল প্রমাণ করা খেলোয়াড়ের যে অভাব নেই। তাঁরা পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে, অধ্যবসায়ের সঙ্গে খেলেছেন, খেলোয়াড় হয়ে উঠেছেন, আবার মনোযোগটা পুরোপুরি দিয়েছেন পড়াশোনায়। তা-ও সাধারণ পড়াশোনা না, রীতিমতো উচ্চশিক্ষায়। ক্রিকেট ইতিহাসে এমন অনেক ক্রিকেটারই আছেন, যারা ক্রিকেট না খেললেও নিশ্চিন্তে যেকোনো বড় কোনো প্রতিষ্ঠানে উচ্চ পদে চাকরি করতে পারতেন, অথবা নিজেরাই প্রতিষ্ঠানের মালিক হতে পারতেন। সে পর্যায়ের শিক্ষা, জ্ঞান তারা আহরণ করেছিলেন খুব ভালোভাবেই।

মাইক ব্রিয়ারলি
তাঁকে বলা হয় ক্রিকেট ইতিহাসেরই সবচেয়ে মেধাবী অধিনায়ক। তিনিই খুব সম্ভবত একমাত্র ক্রিকেটার, যিনি ইংল্যান্ড বা তাঁর ইংলিশ কাউন্টি দলে সুযোগ পেতেন কেবল অধিনায়কত্বের গুণেই। খুব আহামরি প্রতিভাবান তিনি ছিলেন না। কিন্তু কার্যকর ক্রিকেটার হিসেবে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। ব্রিয়ারলি পড়াশোনা করেছেন ইংল্যান্ডের বিখ্যাত ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্নাতক, স্নাতকোত্তর দুই ডিগ্রিই তিনি নিয়েছেন ক্যামব্রিজ থেকে। ক্রিকেট ছাড়ার পর তিনি মনোবিশ্লেষক হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার গড়েছেন। তিনি বর্তমানে ব্রিটিশ মনোবিশ্লেষক সমিতির প্রধান।

ইমরান খান
পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক তিনি। বর্তমান সময়ের প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রিত্বের এই সময়টা ইমরান খানের শিক্ষাগত যোগ্যতা দারুণভাবে সহায়তা করছে। তিনি সত্তরের দশকে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি, দর্শন ও অর্থনীতি বিষয়ে। উস্টারশায়ারে কাউন্টি ক্রিকেট খেলতে গিয়েছিলেন ১৯৭১ সালে। ১৯৭২ সালে তিনি ভর্তি হন কেবল কলেজে। সেখান থেকেই পরবর্তীতে ভর্তি হন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৯২ সালে খেলা ছাড়ার পর তিনি ক্যানসার হাসপাতাল গড়েছেন। রাজনৈতিক দল গঠন করে সংগ্রাম করেছেন ২০ বছর ধরে।

অনিল কুম্বলে
চশমা পড়েই তিনি খেলতেন। ক্রিকেট মাঠেও তাঁকে দেখাত পড়ুয়া ছাত্রের মতো। ক্রিকেট ইতিহাসের দ্বিতীয় বোলার হিসেবে টেস্টে এক ইনিংসে ১০ উইকেট নেওয়ার রেকর্ডধারী, ভারতের সাবেক এ অধিনায়ক পড়াশোনা করেছেন প্রকৌশল বিদ্যায়। বেঙ্গালুরুর ছেলে কুম্বলে তাঁর শহরেরই রাষ্ট্রীয় বিদ্যালয় কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে স্নাতক করেছেন যন্ত্র কৌশলে।

রাহুল দ্রাবিড়
ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে বলা হয় রাহুল দ্রাবিড়কে। ‘দ্য ওয়াল’ দ্রাবিড় ক্রিকেটের পাশাপাশি পড়াশোনাটাও করেছেন সমান মনোযোগ দিয়ে। বেঙ্গালুরুর সেন্ট জোসেফ বয়েজ কলেজ থেকে বাণিজ্যে স্নাতক হয়েছিলেন তিনি। ভারতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে ব্যস্ত সময় কাটানোর ফাঁকে ফাঁকেই তিনি এমবিএটা ঠিকই করে ফেলেছিলেন।

সাঈদ আনোয়ার
পাকিস্তানের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান সাঈদ আনোয়ার একজন প্রকৌশলী। তাঁর ব্যাটিং এক সময় লাখো দর্শককে মোহিত করে তুলত। ১৯৯৭ সালে চেন্নাইতে তিনি ১৯৪ রানের এক ইনিংস খেলেছিলেন। তাঁর দুর্ভাগ্য যে তিনি ওয়ানডে ইতিহাসের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির মালিক হতে পারেননি। আদরের কন্যার মৃত্যুর পর হঠাৎ করেই আধ্যাত্মিক পথে নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন ২০০১ সালের দিকে। এরপর খেলা থেকে বিদায় নেন হঠাৎ করেই। ১৯৮৯ সালে তিনি করাচির এনইডি ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে কম্পিউটার সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।