রিয়াল, বার্সা, অ্যাটলেটিকোর সেই কোচ আর নেই

অভিনব ফুটবল-মস্তিষ্কের জন্য পরিচিত ছিলেন অ্যান্টিচ। ছবি : এএফপি
অভিনব ফুটবল-মস্তিষ্কের জন্য পরিচিত ছিলেন অ্যান্টিচ। ছবি : এএফপি
>

বার্ধক্যজনিত কারণে ৭১ বছর বয়সে মারা গেছেন রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা ও অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের সাবেক কোচ রাদোমির অ্যান্টিচ

তিনি সেই অনন্য ব্যক্তি, যিনি একই সঙ্গে স্পেনের তিন পরাশক্তি রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা ও অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে কোচিং করিয়েছিলেন। কোচ ছিলেন নিজের দেশ সার্বিয়ারও। সেই রাদোমির অ্যান্টিচ গত রাতে পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।

মাত্র ৩৬ বছর বয়সে কোচিং ক্যারিয়ার শুরু করা এই ম্যানেজার প্রথমে দায়িত্ব নেন নিজ দেশের ক্লাব পার্টিজান বেলগ্রেডের, সহকারী কোচ হিসেবে। পরে মূল কোচ হিসেবে স্প্যানিশ ক্লাব রিয়াল জারাগোজার দায়িত্ব নেন। জারাগোজাকে তুলেছিলেন উয়েফা কাপে । সেখানেই রিয়াল মাদ্রিদের নজরে পড়েন অ্যান্টিচ।

মাদ্রিদের অবস্থা তখন তথৈবচ। ১৯৯০-৯১ মৌসুমের শেষ ভাগে রিয়ালের কিংবদন্তি আলফ্রেডো ডি স্টেফানোর কাছ থেকে দায়িত্ব বুঝে নেন তিনি। স্টেফানোর অধীনে খুব বেশি ভালো করছিল না রিয়াল। লিগে টানা তিন ম্যাচ হেরেছিল, ইউরোপিয়ান কাপ (তৎকালীন চ্যাম্পিয়নস লিগ) এর কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে বসেছিল রাশিয়ান ক্লাব স্পার্তাক মস্কোর কাছে। ফলে কপাল খুলে যায় অ্যান্টিচের।

তবে রিয়ালে বেশি দিন থাকা হয়নি এই সার্বিয়ান কোচের। পরের মৌসুমের মাঝ পথে ছাঁটাই হন অ্যান্টিচ। এরপর রিয়াল ওভেইদো ঘুরে ১৯৯৫-৯৬ মৌসুমে আবারও মাদ্রিদে ফেরেন, দায়িত্ব নেন অ্যাটলেটিকোর। ক্যারিয়ারের স্বর্ণসময় কাটান সেখানেই।

জেতেন লিগ ও কোপা দেল রে। তিন বছর অ্যাটলেটিকোতে থাকার পর কিংবদন্তি এসি মিলান ম্যানেজার আরিগো সাচ্চির কাছে চাকরি হারান। তবে বেশি দিন চাকরিহীন থাকতে হয়নি। সাচ্চি অ্যাটলেটিকোকে তেমন ভালো ফলাফল এনে দিতে পারেননি, ফলে লাল-সাদা ক্লাবটি আবারও দ্বারস্থ হয় অ্যান্টিচের। প্রিয় ক্লাবকে এবার অবনমনের হাত থেকে বাঁচান তিনি। ১৯৯৮-৯৯ মৌসুম শেষে আরেক ইতালিয়ান ক্লদিও রানিয়েরির কাছে চাকরি হারান। রানিয়েরি যাওয়ার পর তৃতীয়বারের মতো অ্যাটলেটিকোর দায়িত্ব নেন, কিন্তু এবার আর অবনমন এড়াতে পারেননি।

২০০২-০৩ মৌসুমের শেষ দিকে এবার বার্সেলোনার ডাগআউটে আসেন এই কোচ। ডাচ কোচ লুই ফন গালের স্থলাভিষিক্ত হন। বার্সেলোনার অবস্থা তখন বেশ খারাপ, লিগের ১৫ তম স্থানে ছিলেন পুয়োল-জাভিরা। শেষমেশ ষষ্ঠ স্থানে থেকে মৌসুম শেষ করেন, দলকে তোলেন উয়েফা কাপে। যদিও সে প্রতিযোগিতার কোয়ার্টার ফাইনালে জুভেন্টাসের কাছে হার মানতে হয় বার্সাকে।

বার্সার দায়িত্ব ছাড়ার পর নিজ দেশের দায়িত্বে ছিলেন বছর দুয়েক। সর্বশেষ দায়িত্বে ছিলেন দুই চাইনিজ ক্লাবের-হেবেই চায়না ফরচুন ও শানডং লুনেং।

রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা ও অ্যাটলেটিকো অ্যান্টিচের মৃত্যুতে আলাদা আলাদা শোকবার্তা দিয়েছে।