'করোনা প্রমাণ করল গোলাবারুদের চেয়ে ভালোবাসার শক্তি বেশি'

মাশরাফি মনে করেন, মানুষের ভালোবাসা পারে করোনাকে হারাতে। প্রথম আলো ফাইল ছবি
মাশরাফি মনে করেন, মানুষের ভালোবাসা পারে করোনাকে হারাতে। প্রথম আলো ফাইল ছবি

করোনাভাইরাস পুরো পৃথিবীটা এভাবে এলেমেলো করে দেবে, তা কি কেউ ভেবেছিল? অর্থনৈতিকভাবে ভীষণ শক্তিশালী, সমরাস্ত্রে মহাশক্তিধর দেশগুলো এখন করোনার থাবায় কাঁপছে! এই তো কদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক শক্তিচালিত বিমানবাহী রণতরি ইউএসএস থিওডর রুজভেল্টের ক্যাপ্টেন কী অসহায়ভাবে জানালেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে তাঁদের রণতরিতে। তাঁদের ভয়ংকর সমরাস্ত্রগুলো কি পারছে করোনাকে হারাতে?

সমরাস্ত্র কখনোই করোনার মতো মহামারি ঠেকাতে পারে না। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারবে মানুষের ভালোবাসা। ভালোবাসা থেকেই আসে দায়িত্ববোধ। সেই দায়িত্ব থেকে চিকিৎসক-নার্সরা জীবন বাজি রেখে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের সারিয়ে তোলার কাজটা করে চলেছেন। করোনাযুদ্ধে সবার সামনে আছেন চিকিৎসক-নার্সরা। পেছনে আরও অনেক মানুষ কাজ করছেন, যাঁরা চেষ্টা করছেন করোনা সংক্রমণ কীভাবে কমানো যায়। বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশে অনেকে দাঁড়াচ্ছেন দুস্থদের পাশে, গৃহবন্দী থাকার সময়টাতে যেন তাঁরা কোনোভাবে জীবনটা চালিয়ে নিতে পারেন। বাংলাদেশের সফল অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা তাই ফেসবুকে লিখেছেন, ‘করোনাভাইরাস প্রমাণ করল গোলাবারুদের চেয়ে ভালোবাসার শক্তি অনেক বেশি।’

করোনার এই সময়ে মাশরাফিও ঘরবন্দী। ঘরে থাকলেও তাঁর শুভ উদ্যোগ থেমে নেই। ক্রিকেটারদের তহবিল গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। যেহেতু নড়াইল-২ আসনের সাংসদ, তাঁর উদ্বেগ, চিন্তা দেশের অন্য ক্রিকেটারদের চেয়ে আরও বেশি। এরই মধ্যে নিজের ফাউন্ডেশন থেকে দুস্থদের খাদ্য সহায়তা দিয়েছেন। কদিন আরও একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তাঁর ফাউন্ডেশন থেকে। নড়াইলে চিকিৎসককেই রোগীর বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যেন কেউই আর বিনা চিকিৎসায় কষ্ট না পান। কেউ অসুস্থ বোধ করলে নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের চিকিৎসাসেবার নম্বরে ফোন করে ঠিকানা দেবেন। অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে চিকিৎসক চলে যাবেন তাঁর বাড়ি। রোগী দেখে প্রয়োজনে কিছু ওষুধও দিয়ে আসবেন তাঁরা। এসব উদ্যোগে অনেকে মাশরাফিকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন। উত্তরে তিনি বলছেন, ‘আমাকে ধন্যবাদ দেওয়ার কিছু নেই। এ আমার কর্তব্য।’

মাশরাফি বিশ্বাস করেন মানুষের ভালোবাসা যত দৃঢ় হবে, তত দ্রুত করোনা থেকে মুক্তি পাবে পৃথিবী। শুভ উদ্যোগগুলোই পারে এ মহামারি থেকে মানুষকে রক্ষা করতে। মাশরাফির কথা, ‘রাগ এবং ঘৃণা দিয়ে আবারও রাগ আর ঘৃণার সৃষ্টি হয়।’
রাগ-ঘৃণা ভুলে এখন তাই মানুষকে এক বিন্দুতে মিলতে হবে, বের করতে হবে কঠিন এই সময় থেকে মুক্তি পাওয়ার পথ।