মেসিকে কেনা অসম্ভব নয়, মনে করছে এই ক্লাব

মেসিকে কেনা এখন আর ‘অসম্ভব’ কিছু নয়, মনে করেন ইন্টার মিলানের সাবেক সভাপতি। ছবি: এএফপি
মেসিকে কেনা এখন আর ‘অসম্ভব’ কিছু নয়, মনে করেন ইন্টার মিলানের সাবেক সভাপতি। ছবি: এএফপি
>লিওনেল মেসিকে কেনার অসম্ভব স্বপ্ন দেখছে ইতালিয়ান ক্লাব ইন্টার মিলান। জানিয়েছেন ক্লাবটির সাবেক সভাপতি মাসিমো মোরাত্তি

মেসিকে কী আদৌ বার্সেলোনা থেকে অন্য ক্লাবে নিয়ে যাওয়া সম্ভব?

গত প্রায় দেড় দশক ধরে বহু ক্লাবই তো মেসিকে কেনার চেষ্টা করল। ম্যানচেস্টার সিটি থেকে শুরু করে পিএসজি— চেষ্টার কমতি ছিল না কারওরই। কিন্তু মেসির আকাশছোঁয়া মূল্য, অস্বাভাবিক বেতন ও সর্বোপরি বার্সেলোনার প্রতি মেসির অনিঃশেষ ভালোবাসা ও আনুগত্যের কাছে হার মেনেছে সবাই। তবে সেই দিন এখন আর নেই। মেসিরও বয়স হয়েছে, আগের চেয়ে দাম একটু হলেও কমেছে। আর বেশি দিন হয়তো নিজের ফর্ম ধরে রাখতে পারবেন না এই আর্জেন্টাইন তারকা। মেসিকে কেনা দুঃসাধ্য হলেও, আগের মতো ‘অসম্ভব’ নয়। এমনটা মনে করছেন ইতালিয়ান ক্লাব ইন্টার মিলানের সাবেক সভাপতি মাসিমো মোরাত্তি।

কিন্তু হঠাৎ মেসিকে কেনার জন্য ইন্টার চিন্তাভাবনা শুরু করল কেন? এই প্রশ্নের উত্তরের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন আরেক আর্জেন্টাইন। তিনি ইন্টারের আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার লওতারো মার্টিনেজ।

ইন্টার মিলানের এই স্ট্রাইকারকে বহুদিন ধরেই পছন্দ বার্সেলোনার। বার্সেলোনার বর্তমান মূল স্ট্রাইকার লুইস সুয়ারেজ নিজেও বলেছিলেন, উত্তরসূরি হিসেবে মার্টিনেজকেই দেখতে চান বার্সেলোনায়। সুয়ারেজের বয়স এখন পড়েছে তেত্রিশে। বার্সেলোনায় আর বেশি দিন খেলতে পারবেন না, এটা বেশ ভালোই বোঝেন উরুগুয়ের এই তারকা। বার্সেলোনাও গত দুই মৌসুম ধরে সুয়ারেজের বিকল্প খুঁজে যাচ্ছে। দলে আতোয়াঁ গ্রিজমান, ওসমানে দেম্বেলে, ফিলিপ কুতিনহোরা থাকলেও, তাদের মূলত খেলানো হয় উইঙ্গার হিসেবে। বার্সেলোনায় মূল স্ট্রাইকার হিসেবে সুয়ারেজ তাই এখনো অদ্বিতীয়। তবে এভাবে যে আর বেশি দিন চলবে না, ক্লাবের মতো সুয়ারেজ নিজেও জানেন সেটা। তবে ইন্টার সাফ জানিয়ে দিয়েছে, ১১১ মিলিয়ন ইউরোর এক পয়সার কমও নিতে রাজি নয় তারা মার্টিনেজের জন্য।

এদিকে গত অক্টোবরে চ্যাম্পিয়নস লিগে দুই দলের মধ্যকার ম্যাচে দুই মিনিটের মধ্যেই গোল করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন মার্টিনেজ। ফলে মার্টিনেজকে পাওয়ার আশা বেড়েছে বই কমেনি। মেসি নিজেও চাইছেন, মার্টিনেজ আসুক দলে। কিন্তু চাইলেই কী আর পাওয়া যায়?

মার্টিনেজকে নিয়ে টানাটানির মধ্যেই তাই সাবেক ইন্টার সভাপতি মোরাত্তি জানিয়ে দিয়েছেন, প্রয়োজনে বার্সেলোনার সবচেয়ে বড় রত্ন মেসির দিকে হাত বাড়াতেও দ্বিধা করবেন না তাঁরা।

করোনাভাইরাসের কারণে এমনিতেই ফুটবল ক্লাবগুলোর যথেচ্ছ খরচ করার প্রবণতা কমে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। মার্টিনেজের জন্য পুরো ১১১ মিলিয়ন ইউরো না দিয়ে চুক্তিতে কয়েকজন খেলোয়াড় ঢুকিয়ে দাম কমানোর চিন্তা করছে বার্সেলোনা। সেই খেলোয়াড় কে হবেন? শোনা যাচ্ছে চিলির মিডফিল্ডার আর্তুরো ভিদাল, ক্রোয়েশিয়ার মিডফিল্ডার ইভান রাকিতিচ, পর্তুগালের রাইটব্যাক নেলসন সেমেদো ও ফরাসি সেন্টারব্যাক জ্যাঁ-ক্লাইর তোদিবোর কথা। বিশেষ করে ভিদাল আর রাকিতিচের প্রতি ইন্টারের হালকা পাতলা আগ্রহ বহু আগে থেকেই আছে।

কিন্তু মোরাত্তি সাফ জানিয়ে দিলেন, মার্টিনেজের চুক্তিতে বার্সেলোনা কোনো খেলোয়াড় ঢুকিয়ে দাম কমাতে চাইলে ইন্টারও মেসির দিকেই হাত বাড়াবে, ‘মেসিকে কিনতে চাওয়ার ইচ্ছেটাকে এখন আর নিষিদ্ধ স্বপ্ন বলে মনে হয় না আমার। বার্সার সঙ্গে মেসির চুক্তিরও আর বেশি দিন নেই। ফলে একটু চেষ্টা করলেই ওকে ইন্টারে আনা যাবে। এখন কী হবে না হবে সেটা বলা যাচ্ছে না, তবে, বছরের শেষে যে অবাক করা কোনো কাণ্ড আমরা দেখব না, সেটার নিশ্চয়তা দিতে পারছি না আমি।’

এর আগেও বার্সেলোনা শিবির থেকে সবচেয়ে বড় তারকাকে ছোঁ মেরে নিয়ে আসার ইতিহাস আছে ইন্টার মিলানের। ১৯৯৭ সালে তৎকালীন বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় ব্রাজিল তারকা রোনালদোকে বার্সেলোনার কাছ থেকে কিনে এনেছিল ইন্টার। রোনালদোকে কিনতে সেবার ট্রান্সফার ফি এর বিশ্ব রেকর্ড গড়তে হয়েছিল ইন্টারকে। প্রায় ২৫ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে রোনালদোকে কিনেছিল তাঁরা। তখন ইন্টারের সভাপতি ছিলেন এই মোরাত্তি।

দেখা যাক, ভদ্রলোকের কথাকে বার্সেলোনা গুরুত্ব দেয় কি না!